যশপ্রীত বুমরা অনেক দিন ধরেই অনুপস্থিত ভারতীয় দলে। পিঠের চোট নিয়ে লড়ছেন ভারতের এই ফাস্ট বোলার। কিন্তু ভারতীয় দল বুমরাকে খুব করেই চায় আগামী অক্টোবর-নভেম্বর মাসে দেশের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ওয়ানডে বিশ্বকাপে। আপাতদৃষ্টে মনে হচ্ছে বুমরা প্রস্তুত। আগামী আগস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হয়তো তিনি খেলবেন, কিন্তু সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রীর মতে, বিশ্বকাপে খেলানোর তাড়াহুড়ায় বুমরার ব্যাপারে ভারত পাকিস্তানের শাহিন আফ্রিদিকে নিয়ে করা ভুলটা করছে না তো!
শাহিন আফ্রিদিকে নিয়ে পাকিস্তানের করা কোন ভুলের কথা বলছেন ভারতের সাবেক কোচ। প্রায় এক বছর ধরেই পাকিস্তানের এই বাঁহাতি ফাস্ট বোলার চোটের সঙ্গে লড়ছেন। ডান হাঁটুর লিগামেন্টের চোট নিয়ে ভুগছেন শাহিন আফ্রিদি। গত বছর গলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এক টেস্ট ম্যাচে তিনি এ চোটে পড়েন। গত বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে শাহিন আফ্রিদিকে নিয়ে ঘড়ির কাঁটার সঙ্গে লড়েছে পাকিস্তান। উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বকাপের আগেই এই বাঁহাতি ফাস্ট বোলারকে সুস্থ করে তোলা। সুস্থ তিনি হয়েছিলেনও। কিন্তু আফ্রিদি আবারও চোটে পড়েন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে। বুমরাকে নিয়ে রবি শাস্ত্রী আফ্রিদির উদাহরণ দিয়েই ভারতকে সাবধান করতে চাইছেন। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলানোর তাড়াহুড়ায় আফ্রিদিকে যে আরও বেশি সময়ের জন্য হারিয়েছে পাকিস্তান।
শাস্ত্রী ভারতীয় দলে বুমরার উপস্থিতির মূল্যটাও বোঝেন, ‘বুমরা ভারতীয় ক্রিকেট দলের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার। কিন্তু আমরা যদি তাঁকে বিশ্বকাপে খেলানোর জন্য তাঁর চোটের পুনর্বাসন নিয়ে তাড়াহুড়া করি, তাহলে শঙ্কা আছে তাঁকে বিশ্বকাপের পর আরও বেশি সময়ের জন্য হারানোর, অনেকটা শাহিন আফ্রিদিকে পাকিস্তান যেভাবে হারিয়েছে, তেমনই। ব্যাপারটা নিয়ে গভীরভাবে ভেবে দেখা উচিত।’
একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় চোটে পড়লে তাঁর পুনর্বাসনের প্রক্রিয়াটা খুবই জটিল। এখানে কিছু ব্যাপার কাজ করে বলে অভিমত শাস্ত্রীর। প্রতিটি দলের মধ্যেই আকাঙ্ক্ষা থাকে, কত দ্রুত সেই খেলোয়াড় আবার মাঠে ফিরতে পারবেন; বিশেষ করে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ টুর্নামেন্টগুলোর আগে এমনটা বেশি হয়। দলগুলো পুনর্বাসনের প্রক্রিয়ায় একধরনের তাড়াহুড়া শুরু করে দেয়, যেটি পরবর্তী সময়ে ওই খেলোয়াড়ের ক্ষতির কারণ হয়।
শাস্ত্রী মনে করেন, একজন খেলোয়াড়ের চোট থেকে সেরে দলে ফেরার যে প্রক্রিয়া, সেখানে একটা সূক্ষ্ম ব্যাপার আছে, যেটি সবারই মাথায় রাখা উচিত, ‘এখানে একটা সূক্ষ্ম ব্যাপার আছে। সেটি হচ্ছে একজন খেলোয়াড়কে চোট থেকে ফিরিয়ে তাঁকে দলে খেলিয়ে দেওয়া আর তাঁর পূর্ণ সুস্থতার জন্য ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করার মধ্যবর্তী জায়গায়। অনেক সময় খেলোয়াড়েরা চোট সারিয়ে কত দ্রুত মাঠে ফিরতে পারবে, সে ব্যাপারে মুখিয়ে থাকে। এই সূক্ষ্ম রেখাটা মাথায় রাখা উচিত সবারই। ভারতীয় দলে শামি আছে, সিরাজ আছে পেস আক্রমণে। স্পিনে আছে অক্ষর প্যাটেল আর রবীন্দ্র জাদেজা। এ ছাড়াও আছে যুজবেন্দ্র চাহাল, কুলদীপ যাদব ও রবি বিষ্ণয়। ভারতীয় বোলিংয়ে আমি যথেষ্ট গভীরতা দেখছি। তাই বুমরাকে নিয়ে তাড়াহুড়া করার কোনো মানেই হয় না।’