বিশ্বকাপে দারুণ নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন রাচিন রবীন্দ্র
বিশ্বকাপে দারুণ নৈপুণ্য দেখাচ্ছেন রাচিন রবীন্দ্র

রাচিনের বাবার দাবি, শচীন–রাহুলের নাম থেকে তাঁর ছেলের নাম রাখা হয়নি

বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচেই চমক দেখান রাচিন রবীন্দ্র। ভারতীয় বংশোদ্ভূত নিউজিল্যান্ডের এই ব্যাটসম্যান বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ম্যাচে খেলেন ১২৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস। বল হাতে নেন ১ উইকেট। হয়েছেন ম্যাচসেরাও। এমনিতেই রাচিনের নাম নিয়ে তাঁকে নিয়ে মাঝেমধ্যেই আলোচনা হয়। বিশ্বকাপের শুরুতেই দারুণ খেলায় ব্যাপারটি আবারও সামনে চলে এসেছে।

রাচিনের নামের ব্যাখ্যাও বেশ চমকপ্রদ। এর আগে জানিয়েছেন, ভারতের দুই কিংবদন্তি ক্রিকেটার রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকারের নাম থেকেই তাঁর নাম রাখা হয়েছে। তবে এক সাক্ষাৎকারে সম্প্রতি রাচিনের বাবা বলেছেন ভিন্ন কথা। তাঁর দাবি, দুই ভারতীয় ক্রিকেটারের নাম থেকে রাচিনের নাম রাখা হয়নি।

নিজের নামের ব্যাখ্যাটা অবশ্য বিশ্বকাপের আগেই দিয়েছিলেন রাচিন। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ‘বাবা-মা রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকারকে পছন্দ করেন। তাদের নামও পছন্দ ছিল তাদের। রাহুল থেকে “রা” এবং শচীন থেকে “চিন”। অসাধারণ দুই খেলোয়াড়। তাদের নামে নাম হওয়ায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে হয়।’
বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ম্যাচের পরও একই বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন রাচিন। ২৩ বছর বয়সী রাচিন বলেছিলেন, ‘তারা (রাহুল দ্রাবিড় ও শচীন টেন্ডুলকার) দুজন স্পেশাল ক্রিকেটার। তাদের অনেক গল্প শুনেছি এবং খেলার প্রচুর ফুটেজ দেখেছি। বাবা-মা এবং ভারতের দুই ক্রিকেটারের প্রভাবটা যেভাবে নিজের ওপর পড়েছে, তাতে ভালোই লাগে।’

রাচিন নিজের আদর্শ ক্রিকেটার বেছে নিয়েছেন এই দুই কিংবদন্তির মধ্য থেকেই, ‘অনেক ফুটেজ যেহেতু দেখেছি, শচীন টেন্ডুলকারকে আদর্শ বানিয়েছি। বাঁহাতি (ব্যাটসম্যান) হওয়ায় অন্যদেরও অনুসরণ করতে হয়েছে। ব্রায়ান লারাকে ভালোবাসি, কুমার সাঙ্গাকারাকেও।’

ম্যাচের পর ম্যাচে রান করেছেন রাচিন

বিশ্বকাপের সেই প্রথম ম্যাচের পর অবশ্য আর ফিরে তাকাননি রাচিন। লিগ পর্ব শেষে ৯ ম্যচে ৭০.৬২ গড়ে করেছেন ৫৬৫ রান। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকদের তালিকায় তাঁর অবস্থান এখন ৩ নম্বরে। নিউজিল্যান্ডের সেমিফাইনালে ওঠাতেও তাঁর ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। তবে ভারতের বিপক্ষে সেমিফাইনালের আগে আবার নাম নিয়ে আলোচনায় এসেছেন রাচিন। ছেলেকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন রাচিনের বাবা রবি কৃষ্ণমূর্তি।

ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, ‘যখন রাচিন জন্মায়, আমার স্ত্রী এই নাম রাখার কথা বলে। আমরা এ বিষয়ে খুব বেশি আলাপ করিনি।’

ছেলের নাম রাখার ব্যাখ্যায় রবি কৃষ্ণমূর্তি আরও বলেছেন, ‘এই নাম শুনতে ভালো লাগছিল। বানান করা সহজ এবং ছোটও। তাই আমরা এটা রাখার সিদ্ধান্ত নেই। কয়েক বছর পর আমরা খেয়াল করি এই নামে রাহুল ও শচীন মিশে আছে। তবে ছেলেকে ক্রিকেটার বানানোর উদ্দেশ্যে আমরা এই নাম রাখিনি।’

বিশ্বকাপে নিজেকে ভবিষ্যতের তারকা হিসেবে প্রমাণ করেছেন রাচিন। পিতৃভূমি ভারতের হয়ে না খেলেও ভারতীয় দর্শকদের কাছ থেকে পেয়েছেন দারুণ সমর্থনও, যা নিয়ে দারুণ আপ্লুতও তিনি। বিশ্বকাপে নিজের অভিজ্ঞতা নিয়ে রাচিন সম্প্রতি বলেছেন, ‘এই অনুভূতি বেশ অদ্ভুত। এমন সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ, বিশেষ করে বেঙ্গালুরুতে যেমনটা দেখেছি। দর্শক আমার নাম ধরে স্লোগান দেবে, তা কখনো ভাবিনি।’

বিশ্বকাপে আর দুই ম্যাচ জিতে নিউজিল্যান্ডকে শিরোপা এনে দিতে পারলে রাচিনের কল্পনা হয়তো সব সীমা ছাড়িয়ে যাবে। এমন কিছু হলে অবশ্য স্বাগতিক দর্শকেরা রাচিনের ওপর একটু অভিমান করলেও করতে পারেন! তাতে ভারতের তৃতীয় বিশ্বকাপটা যে অধরা থেকে যাবে।