আইপিএল, বিগ ব্যাশ হয়ে বিপিএল, পিএসএল ও সিপিএল—এক যুগের বেশি সময়ে বিশ্বজুড়ে চালু হয়েছে বেশ কয়েকটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। যে ধারায় এ বছর যোগ হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ–টোয়েন্টি এবং আরব আমিরাতের আইএলটি–টোয়েন্টি।
টি–টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের এমন বিস্তার বিশ্ব ক্রিকেটে গণতন্ত্রায়ণের চিহ্ন বলে মনে করছেন অ্যান্ড্রু স্ট্রাউস। সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়কের মতে, ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ এখন কেউই করে না। এমনকি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইও নয়। এমসিসির বাৎসরিক বক্তৃতায় (কাউড্রে লেকচার) এমন পর্যবেক্ষণের কথা জানান তিনি।
ক্রিকেটের আইন প্রণয়নের দায়িত্বে থাকা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) প্রতিবছর খেলাটির সমসাময়িক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বক্তৃতার আয়োজন করে। এবার ছিল ২১তম আয়োজন, যেখানে সপ্তম ইংলিশ ক্রিকেটার হিসেবে মূল আলোচক ছিলেন স্ট্রাউস। বুধবার লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে এমসিসি কার্যালয়ে বক্তৃতা করেন তিনি।
একটা সময় বলা হতো, ভারতের ক্রিকেট বাজার বেশ বড়। এ কারণেই ক্রিকেটটা আসলে অনেকাংশেই তাদের ক্রিকেট বোর্ড নিয়ন্ত্রণ করে। এ ছাড়া ইংল্যান্ড আর অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট বোর্ডের দাপটও অনেক।
কিন্তু অ্যাশেজ–জয়ী সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়কের কথা, ‘আগে কিছু নির্দিষ্ট স্বার্থের ব্যাপার ছিল। সেটা হতে পারে (লর্ডসের) এই কক্ষ, ইসিবির (ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড) বারান্দা কিংবা অন্য কোনো জাতীয় দলের ক্রিকেট বোর্ড। অথবা কোনো কাউন্টি মাঠের কথাও বলা যায়। যারা অন্যদের চেয়ে অগ্রাধিকার পেত। তবে ব্যাপারটি এখন আর নেই। এখন কেউই ক্রিকেট নিয়ন্ত্রণ করে না। এমনকি বিসিসিআইও নয়।’
জনপ্রিয়তার সূত্র ধরে বিশ্ব ক্রিকেটে আর্থিকভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী বিবেচনা করা হয় বিসিসিআই, ইসিবি ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়াকে (সিএ)। আইসিসির আয়ের সিংহভাগ এই তিন বোর্ড থেকে আসে বলে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় তাদের প্রভাবও বেশি বলে মনে করা হয়। যার ছাপ পড়ে আইসিসির পরিচালনা, বড় সিদ্ধান্ত আর বিভিন্ন গোষ্ঠীর স্বার্থ–সংঘাতের ঘটনাগুলোয়।
ইংল্যান্ডের হয়ে ২৩১টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা স্ট্রাউসের মতে, বিশ্বজুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের বিস্তৃতির কারণে ক্ষমতায় ভারসাম্য এসেছে, ‘ক্রিকেটে এখন প্রচুর মানুষ যুক্ত, প্রচুর পরিবর্তনশীল বিষয়, চারপাশে প্রচুর হাঁকডাক। এদিক থেকে দেখলে ক্রিকেটে গণতন্ত্রায়ণ ঘটেছে। সামনে ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ কিন্তু দুবাইয়ে আইসিসির হল রুমে হবে না, হবে যারা খেলাটির অনুসারী, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর।’