এক দিনে পাঁচটি উপলক্ষ। দুটি ছিল পূর্বনির্ধারিত। পরে যোগ হয়েছে আরও তিনটি। ৩ অক্টোবর দিনটা তাই বাংলাদেশের নারী ক্রিকেট দলকে এনে দিয়েছে এক ডালি উদ্যাপনের উপলক্ষ, অধিনায়ক নিগার সুলতানা যেটিকে ‘স্পেশাল’ বলেছেন।
বৃহস্পতিবার শারজা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে স্কটল্যান্ডের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ম্যাচে স্কটিশদের ১৬ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপে ১৬ ম্যাচ পর প্রথম জয় তুলে নেন বাংলাদেশের মেয়েরা। এর মাধ্যমে ১০ বছরের জয়ের খরা যেমন কেটেছে, এবারের আসরে পরের ধাপে যাওয়ার আশাও বেড়েছে।
যে দুটি উপলক্ষ পূর্বনির্ধারিত ছিল, তার একটি অধিনায়ক নিগারেরই। ২০১৫ সাল থেকে জাতীয় দলে খেলা এই উইকেটকিপার–ব্যাটারের এটি ছিল শততম টি–টোয়েন্টি, বাংলাদেশে মেয়েদের ক্রিকেটে যা প্রথম। অন্য উপলক্ষটি ছিল ব্যাটার তাজ নেহারের জন্মদিন। পরে ম্যাচে যুক্ত হয় দুটি ব্যক্তিগত কীর্তি ও একটি দলীয় অর্জন। এদিনই বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে টি–টোয়েন্টিতে এক শ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন নাহিদা আক্তার। আরেক স্পিনার ফাহিমা খাতুন স্পর্শ করেন ৫০ উইকেটের মাইলফলক। আর সবার সম্মিলিত অবদানেই এসেছে এক দশক পর বিশ্বকাপ ম্যাচে দলের জয়।
বাংলাদেশ তাদের পরের ম্যাচ খেলবে আগামীকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ‘বি’ গ্রুপে নিগারদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
ম্যাচের পর রাতে দলের টিম হোটেলে আয়োজন করা হয়েছিল অধিনায়ক নিগারের শততম ম্যাচ, নাহিদার শততম উইকেট ও তাজ নেহারের জন্মদিন উদ্যাপন অনুষ্ঠান। নিগার ও নাহিদার হাতে মাঠের বিভিন্ন মুহূর্তের ছবি দিয়ে সাজানো একটি করে স্মারক তুলে দেন বিসিবির নারী ক্রিকেট বিভাগের প্রধান ও সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের প্রধান কোচ হাশান তিলকারত্নে। আর তাজ নেহারের জন্মদিন উপলক্ষে কাটা হয় কেক।
এক শতম ম্যাচ খেলা নিগার তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সঙ্গে জড়িত সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমার জীবনের বড় অর্জন এটি। যখন শুরু করেছিলাম, তখন কল্পনাও করিনি এত দূর আসব। আর আজকের দিনে ১০০তম ম্যাচ খেলে যতটা না খুশি হয়েছি, তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছি ম্যাচ জিতে।’
শততম ম্যাচের জন্য তাঁকে সংবর্ধিত করা বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের জন্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, এটা বোঝাতে গিয়ে নিগার বলেন, ‘ধন্যবাদ আমাকে গর্বিত অনুভব করানোর জন্য। কারণ, আমি জানি মেয়েদের ক্রিকেটের জন্য এটা কত বড় অর্থ বহন করে। শুধু আমাদের জন্য নয়, সবার জন্যই। একইভাবে আমাদের কোচিং স্টাফ এবং বিসিবিতে আমাদের ওপরে যাঁরা আছেন, তাঁদের জন্যও। সব সময় একটা কথা শুনি, “তোমরা কিছু করো, তাতে (তোমাদের পক্ষে) আমরা কিছু বলতে পারব।” আমার চাওয়া, আমরা যেন ওপরের দিকে আমাদের কথা বলার সুযোগ করে দিতে পারি।’
এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ তাদের পরের ম্যাচ খেলবে আগামীকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ‘বি’ গ্রুপে নিগারদের অন্য দুই প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও দক্ষিণ আফ্রিকা।