অবসর ঘোষণার সময় তামিম ইকবাল, গত জুলাইয়ে চট্টগ্রামে
অবসর ঘোষণার সময় তামিম ইকবাল, গত জুলাইয়ে চট্টগ্রামে

আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হারের দায় তামিমকে দিলেন সাকিব

তামিম ইকবাল টিমম্যান কি না, গতকাল এমন প্রশ্ন তুলেছিলেন সাকিব আল হাসান। এবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে দেশের মাটিতে গত জুলাইয়ে তিন ম্যাচ সিরিজ হারের জন্য সরাসরি তখনকার অধিনায়ক তামিম ইকবালের দায়ী করেছেন এখনকার অধিনায়ক সাকিব। তামিমের তখন হুট করে অবসরে যাওয়া দলকে অনেক বাজে পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে, সেটি কাটিয়ে উঠতে এখনো সময় লাগছে বলেও মনে করেন সাকিব।

দেশের মাটিতে ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ওয়ানডেতে জিতেছে টানা সাতটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ। তবে এ বছর চারটি সিরিজের মধ্যে তিনটিতেই হেরেছে তারা—ইংল্যান্ড, আফগানিস্তান ও সর্বশেষ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। ওয়ানডেতে এমন পারফরম্যান্সের পেছনে কোচের কোনো দোষ দেখেন কি না, টেলিভিশন চ্যানেল টি স্পোর্টসের এক সাক্ষাৎকারে সাকিবের কাছে প্রশ্ন ছিল এমন। তাতেই এসেছিল আফগানিস্তানের সঙ্গে হারের প্রসঙ্গ।

তবে ২-১ ব্যবধানে ওই সিরিজ হারের পেছনে তামিমকেই দায়ী করেছেন সাকিব, ‘আফগানিস্তানের সঙ্গে সিরিজ হারটা আমি পুরোপুরি একজনের দায় বলব—অধিনায়ক। এক ম্যাচ পরে আমাদের হাতে আরও দুই ম্যাচ ছিল। আমরা তৃতীয় ম্যাচে ঠিকই ফিরে এসেছি, কিন্তু একটা ম্যাচ সময় লেগেছে আমাদের। সুতরাং এটা আর কারও দায় না, পুরো সিরিজটার ব্লেম একজনের ওপর।’

আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে বাংলাদেশ

সে সিরিজের প্রথম ম্যাচের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছিলেন তামিম। বাংলাদেশ পরের দুটি ম্যাচ খেলেছিল লিটন দাসের অধিনায়কত্বে। সিরিজের মাঝপথে তামিমের অবসরে যাওয়া নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেন সাকিব, ‘বিশ্বের কোথাও অন্তত দেখিনি যে এক ম্যাচ পরেই এ রকম অধিনায়ক এসে আবেগী হয়ে বলে ফেলে যে, “আমি ভাই খেলব না আর ক্রিকেট”। এটা আমি আমার জীবনে প্রথমবার দেখলাম।’

সাকিব এরপর প্রশ্ন তুলেছেন তামিমের দায়িত্ববোধ নিয়েও, ‘আমি এর আগে দেখিনি কখনো। আমার ধারণা, কোনো অধিনায়কের যদি দায়িত্ববোধ থাকত, সে এটা করতে পারত না। আমার কাছে মনে হয়েছে এটা দলকে অনেক বাজে একটা পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে এবং আমার মনে হয় ওইটাই এখনো কাটিয়ে উঠতে সময় লাগছে। যেটা আমার কাছে মনে হয়।’

কোচের প্রসঙ্গে অবশ্য সাকিব পরে টেনেছেন সাবেক কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর প্রসঙ্গও, ‘ছয় মাস আগে যখন ভারতের সঙ্গে সিরিজ জিতল, এরপর টেস্ট সিরিজ হারার পরই বাদ দিয়ে দেওয়া হলো (ডমিঙ্গোকে)। স্বাভাবিকভাবেই আরেকজন কোচ যখন আসে, তার মতো করে করার চেষ্টা করে। অধিনায়ক এসেও চেষ্টা করে। একটা দল গড়তে দুই-তিন বছর লাগে, সহজে হয় না।’

এবারের বিশ্বকাপে তাঁর কাছে বোর্ডের কোনো প্রত্যাশা নেই বলেও জানিয়েছেন সাকিব, ‘নিজের উদাহরণ দিই, এশিয়া কাপের আগে আমাকে বলে দেওয়া হয়েছে, “এই দল, তুমি বানাও। এশিয়া কাপ বিশ্বকাপে প্রত্যাশা নাই।” পাপন ভাইও (বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান) সাক্ষাৎকারে বলেছে। আমি সেভাবেই চেষ্টা করে যাচ্ছি। দেশের মাটিতে আমাদের ভালো দল হয়ে আসছে। আমরা (পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে) সুযোগ নিতেই পারি, যেহেতু ওয়েস্ট ইন্ডিজ-আমেরিকায়। সেখানকার উইকেট আমাদের সঙ্গে যায়। ভালো দল করতে পারব।’

২০১৯ সালের বিশ্বকাপের পরই এবারের বিশ্বকাপের কে অধিনায়ক হবেন, সহ-অধিনায়ক বা সম্ভাব্য কারা থাকবেন, সেটি ঠিক হয়ে যাওয়া উচিত ছিল বলেও মনে করেন সাকিব।