ক্রিকেট সূচি সংস্কারের কথা বলেছে ডব্লুসিএ
ক্রিকেট সূচি সংস্কারের কথা বলেছে ডব্লুসিএ

‘অগ্রহণযোগ্য সূচি’ থেকে ক্রিকেটকে বাঁচানোর উদ্যোগ

খেলা, খেলা আর খেলা!

আজকাল ক্রিকেটারদের দম ফেলার ফুরসত নেই। আজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তো কাল ঘরোয়া ক্রিকেট। এই ঢাকায় ক্রিকেট তো, দু-এক দিন পরই আবার পৃথিবীর অন্য প্রান্তে গায়ানায় মাঠে নেমে যাওয়া। আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটের ব্যস্ত সূচির জালে ভালোমতোই আটকে গেছেন ক্রিকেটাররা। আর সেই জালে আটকে হাঁসফাঁস করে অনেকেই আজকাল এক বা একাধিক সংস্করণ থেকে বিদায় নিচ্ছেন, ছেড়ে দিচ্ছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও।

ব্যস্ত সূচিতে জেরবার খেলোয়াড়দের বাঁচানোর সমাধান খুঁজতে এগিয়ে এসেছে ক্রিকেটারদের বৈশ্বিক সংগঠন দ্য ওয়ার্ল্ড ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশন (ডব্লুসিএ)। আগে এফআইসিএ বা ফিকা নামে পরিচিত সংস্থাটির চেয়ারম্যান হিথ মিলস জানিয়েছেন, তাঁরা খেলাটির বৈশ্বিক কাঠামো পর্যালোচনা শুরু করেছেন। মিলস আশা করছেন ক্রিকেটকে অন্যায্য, ঠাসা ও অগ্রহণযোগ্য সূচি থেকে বের করে আনার সমাধান খুঁজে বের করতে পারবেন তাঁরা।

হিথ মিলস বলেছেন তাঁরা এই ‘আশা করা ছেড়ে দিয়েছেন’ যে ক্রিকেট কর্তারা আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেট মিলিয়ে ‘সহজ ও সংগতিপূর্ণ কাঠামো’ দাঁড় করাতে পারবেন। মিলস বলেছেন পর্যালোচনায় খেলাটির ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলোয়াড়দের মতামতের ভিত্তিতে সামনে এগিয়ে যাওয়া পথরেখার খসড়া প্রণয়ন করা হবে। মিলস এটাও বলেছেন এক জরিপে শতকরা ৮৪ ভাগ খেলোয়াড়ই জানিয়েছেন তাঁরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ও ঘরোয়া টি-টোয়েন্টির জন্য স্থায়ী উইন্ডো চান।

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটের জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছেড়েছেন সুনীল নারাইন

ছয় সদস্যের ডব্লুসিএর পর্যালোচনা কমিটিতে আছেন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রধান পল মার্শ, পাকিস্তান নারী দলের সাবেক অধিনায়ক সানা মির, সাবেক ফিকা প্রধান টনি আইরিশ, ইসিবির সাবেক প্রধান নির্বাহী টম হ্যারিসন ও ডিজনি স্টারের হেড অব স্পোর্টস সংযোগ গুপ্ত। পর্যালোচনা কমিটি খেলোয়াড়, বর্তমান ও সাবেক প্রশাসক, ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করে বেশ কিছু সুপারিশ করবেন। প্রথমে ডব্লুসিএর বোর্ডে আলোচনা হবে এ নিয়ে এরপর আইসিসিসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা হবে। ২০২৪ সালটা শেষ হওয়ার আগেই সুপারিশমালা ঠিক করার ব্যাপারে আশাবাদী ডব্লুসিএ।

ডব্লুসিএ বলেছে ক্রিকেটে বাজে প্রভাব ফেলা প্রধান বিষয়ের দিকে মনোযোগ তাদের। এর একটি হচ্ছে ‘দুর্বল ও অটেকসই’ এবং ‘বিভ্রান্তিমূলক ও বিশৃঙ্খল’ সূচি। দ্বিতীয়টি হচ্ছে, এমন সূচির কারণে খেলোয়াড়দের ‘দেশের হয়ে খেলার ও ক্যারিয়ার নিয়ে দ্বিতীয় চিন্তা’ করতে বাধ্য হওয়া। তৃতীয়টি ক্রমেই বড় হয়ে ওঠা আর্থিক বৈষম্য নিয়েও পর্যালোচনা করা হবে।

পরিষ্কার কোনো সূচি না থাকায় খেলোয়াড়দের চুক্তি নিয়ে যে সমস্যা হচ্ছে, সেটি নিয়েও আলোচনা করার ঘোষণা দিয়েছে ডব্লুসিএ। এক বিবৃতিতে ডব্লুসিএ বলেছে, ‘খেলোয়াড়, বোর্ড ও সমর্থকদের জন্য স্বচ্ছতা ও মানদণ্ড নির্ণয় করতেই কিছু জিনিস পরিবর্তন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলতে ডেভন কনওয়ে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন

বিবৃতিতে মিলস আরও বলেন, ‘আমরা ভাগ্যবান যে ক্রিকেটে বেছে নেওয়ার মতো বিকল্পের অভাব নেই। ঘরোয়া ও আন্তর্জাতিক, দুই ধরনের ক্রিকেটেই তিনটি করে সংস্করণ। যাহোক এটা বলতেই হয় খেলাটির নেতারা এখন পর্যন্ত বৈশ্বিক কোনো কাঠামো দাঁড় করাতে পারেননি। তাঁরা কিছু করতে পারবেন, এমন আশা করা আমরা বাস্তবিকই বাদ দিয়েছি।’

ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে খেলোয়াড়দের কথার মূল্য দিতেও অনুরোধ করেছে ডব্লুসিএ। সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেই ক্রিকেট বোর্ডগুলোতে নিজেদের সুপারিশগুলো জানাবে ডব্লুসিএ।