ব্যাট হাতে রানে নেই লিটন দাস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলমান সিরিজে তো বটেই, এ বছর তিন সংস্করণে খেলা ১১ ইনিংসের একটিতেও ফিফটি নেই তাঁর। তবে রানখরায় থাকলেও লিটন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে বাংলাদেশ দলে এমন অনেক অবদান রাখেন, যা দূর থেকে চোখে পড়ে না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় দলের সহকারী কোচ নিক পোথাস। এই কোচের বিশ্বাস, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্স করবেন লিটন।
আজ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলের ঐচ্ছিক অনুশীলনের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন পোথাস। লিটনের ব্যটিং–ব্যর্থতাকে তিনি দেখছেন দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা হিসেবে, ‘আমার মনে হয় এটা আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি। লিটন দাস আমাদের অনেক কিছু দিচ্ছে। সে বিশ্বমানের ক্রিকেটার। অবিশ্বাস্য বিশ্বকাপ থেকে সে মাত্র এক ইনিংস দূরে আছে। কাজেই কোনো সন্দেহ নেই লিটন দাস অনেক রান করবে, যেটা সে আগেও করেছে। সে আমাদের দলে অনেক কিছু যোগ করছে। সে ফিল্ডিংয়ে যা দিচ্ছে, সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে সে যে ভূমিকা রাখছে। আপনারা যা দেখছেন, তার থেকে অনেক বেশি সে দলে অবদান রাখছে।’
সাগরিকার উইকেটে নতুন বলের বিপক্ষে ওপেনিং ব্যাটিংটাও যে কঠিন, সে কথাও যোগ করেছেন তিনি, ‘উইকেট ভালো। কিন্তু দুই দলের জন্যই প্রথম ১০ ওভারে একটু কঠিন মনে হচ্ছে। আমরা খুব ভালো বোলিং করেছি। যে কারণে প্রতিপক্ষকে শুরুতেই চাপে ফেলতে পেরেছি। এটা আমরা খুব ভালো করেছি। ওদেরও দুজন ভালো নতুন বলের বোলার আছে। আমার মনে হয় আমাদের ব্যাটসম্যানরাও ওই সময়টা বেশ ভালো খেলে পার করেছে। উইকেট ভালো দেখালেও শুরুতে এতটা সহজ নয়।’
তবে ব্যাটসম্যানদের আরও ভালো করার জায়গা আছে, সেটাও মানছেন পোথাস, ‘আমরা সব সময় উন্নতির চেষ্টা করে যাচ্ছি। এই ম্যাচগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপের রিহার্সাল বলা যায়। সুতরাং আমরা সব সময়ই উন্নতির চেষ্টা করছি। আমাদের কেপিআই আছে। ব্যাটসম্যানরা যে অনুযায়ী খেলছে। আমরা সব সময় সে অনুযায়ী উন্নতি মূল্যায়ন করছি।’
সিরিজের প্রথম দুটি ম্যাচে জয়ের মঞ্চটা গড়ে দিয়েছেন বোলাররা। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে জিম্বাবুয়ে অলআউট হয়েছে ১২৪ রানে, দ্বিতীয়টিতে ১৩৮ রানে। মূলত নতুন বলের সাফল্যেই জিম্বাবুয়েকে চাপে ফেলা গেছে। মাঝের ওভার থেকে ডেথ ওভারে দুই ম্যাচেই জিম্বাবুয়ের নিচের সারির ব্যাটসম্যানরা বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন।
পরের ম্যাচগুলোতে এ জায়গায় উন্নতি দেখতে চান পোথাস, ‘শেষের দিকে বল কিছুটা নরম হচ্ছে। আমাদের বোলাররা এর মধ্যেই ভালো করেছে। আমরা একটু মানসিকতায় বদল চাই। দুটি ম্যাচেই আমরা অল্প রানে তাদের অনেক উইকেট নিয়েছি। এরপর হয়তো আমরা কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছি। আমাদের ওই জায়গায় আরেকটু আক্রমণাত্মক হতে হবে। খেলাটা (চাপে ফেলার পর) ওখানেই শেষ করে দিতে হবে।’
জিম্বাবুয়ে সিরিজটি বিশ্বকাপ প্রস্তুতির স্লোগানে হলেও এখন পর্যন্ত তেমন কোনো পরীক্ষা–নিরীক্ষা দেখা যায়নি। দুটি ম্যাচেই বাংলাদেশ দল টসে জিতে আগে বোলিং করেছে, প্রতিপক্ষকে অল্প রানে থামিয়ে সে রান তাড়া করেছে। আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ থাকলেও তা করেনি নাজমুল হোসেনের দল।
পোথাসের কাছে এর ব্যাখ্যা জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘যখনই আপনি আন্তর্জাতিক সিরিজ খেলবেন, প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে, সেই সিরিজটা জেতা। ওই দায়িত্বটা সবার আগে ঠিকঠাক পালন করতে হবে। এরপর আপনি পরীক্ষা–নিরীক্ষা করতে পারেন। সুতরাং আমরা ঠিক তা–ই করেছি, যেটা এই উইকেটে জয়ের জন্য আমাদের করণীয় ছিল।’
অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আগেও বলেছি, প্রথম কাজ হচ্ছে সিরিজ জয়। এরপর পরীক্ষা–নিরীক্ষা। আপনারা চাইলেন আর আমরা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করলাম, এরপর কিছু ভুল হলে আপনারাই আমাদের সমালোচনা করবেন। আমাদের ওই কাজটাই করতে হবে, সেটা আমরা সঠিক মনে করব।’