চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুখোমুখি বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা। প্রথম ম্যাচে পরে ব্যাটিং করে ৬ উইকেটে জিতেছিল বাংলাদেশ। সে ম্যাচে পরের ইনিংসে শিশিরের প্রভাব ছিল স্পষ্ট।
আজও টসে জিতেছে শ্রীলঙ্কা। তবে আজ নিয়েছে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত।
প্রথম আলো লাইভে আপনাকে স্বাগত।
প্রথম ম্যাচে জেতা একাদশটিই আজ আবার নামাচ্ছে বাংলাদেশ। ফলে আজও নেই মোস্তাফিজুর রহমান। প্রথম ম্যাচে খরুচে থাকলেও আস্থা রাখা হচ্ছে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের ওপর।
একাদশ: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, তাওহিদ হৃদয়, সৌম্য সরকার, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, শরীফুল ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মাহমুদউল্লাহ ও তানজিম হাসান।
মহীশ তিকশানা—আউট
দুনিত ভেল্লালাগে—ইন
দ্বিতীয় ম্যাচে একটিই পরিবর্তন শ্রীলঙ্কা দলে।
একাদশ: আভিস্কা ফার্নান্ডো, পাতুম নিশাঙ্কা, কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক), সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিত আসালাঙ্কা (সহ-অধিনায়ক), জানিত লিয়ানাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুনিত ভেল্লালাগে, দিলশান মাদুশঙ্কা, প্রমোদ মাদুশান ও লাহিরু কুমারা।
জানেন, গতকালও (মঙ্গলবার) এ রকম ছিল না। আজ (পরশু) হঠাৎ আবহাওয়া এ রকম হয়ে গেল, কেন বুঝলাম না!প্রথম ম্যাচের খেলা শেষে বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের কিউরেটর জাহিদ রেজাও
আজ অবশ্য পরে বোলিং করার চিন্তাটা করতে হচ্ছে না শ্রীলঙ্কাকে। আজ আবার সকালে বৃষ্টি হয়েছে চট্টগ্রামে।
অবিশ্বাস্য! এ ছাড়া আর কিই-বা বলবেন!
প্রথম ম্যাচে প্রথম বলেই বোল্ড হয়েছিলেন লিটন। এবার তৃতীয় বলে গিয়ে ক্যাচ তুললেন। রান করতে পারেননি আজও। দিলশান মাদুশঙ্কার বল ছিল লেগ স্টাম্পে। লিটন করতে গেলেন ফ্লিক। সে শটের জন্য স্কয়ার লেগ ও ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে দুজন ছিলেন। লিটন ধরা পড়েছেন স্কয়ার লেগে।
১ ওভারে ০/১।
১ রানে ২ উইকেট হারাতে পারত বাংলাদেশ। প্রমোদ মাদুশানের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে স্লিপে ক্যাচ তুলেছিলেন নাজমুল। পাতুম নিশাঙ্কার হাত গলে বেরিয়ে গেছে সে ক্যাচ। তাতে হয়েছে চার। ১ বল পর ফুললেংথের বলে চার মেরে শ্রীলঙ্কার কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়েছেন নাজমুল। বাংলাদেশ অধিনায়ক এ ওভারে আউট হতে পারতেন আরেকবার! কট বিহাইন্ড হয়েছিলেন তিনি, তবে শ্রীলঙ্কানদের কেউ আপিলই করেননি, রিভিউ নেওয়া তো দূরের কথা! ০ রানের পর ১০ রান—নাজমুল জীবন পেলেন দুবার।
২ ওভারে ১১/১
মাদুশানের আগের ওভারে দুবার আউট হতে পারতেন নাজমুল। শ্রীলঙ্কা সুযোগ হারিয়েছে দুবারই। মরিয়া শ্রীলঙ্কা এবার তাঁর বিপক্ষে নিয়েছিল এলবিডব্লুর রিভিউ। তবে ইনসাইড-এজ হওয়াতে বিপদ ঘটেনি বাংলাদেশ অধিনায়কের। তিনি অক্ষত, প্রথম ম্যাচের মতো আবারও ইনিংস মেরামতের দায়িত্ব তাঁর সামনে।
এ ওভারেও ফুললেংথে পেয়ে ফ্লিক করে চার মেরেছেন ক্রিজ থেকে বেশ সামনে এসে ব্যাটিং করা নাজমুল। পরের বলে কাভার ড্রাইভে মেরেছেন আরেকটি চার।
৪ ওভারে ২২/১।
প্রথম ৫টি চারের সবকটিই মেরেছিলেন নাজমুল। ৪টিই মাদুশানের বলে। এ ডানহাতি পেসারের তৃতীয় ওভারে চার হলো দুটি, এবার মেরেছেন সৌম্য সরকার। কাভার দিয়ে খেলার পর থ্রু দ্য লাইনে দারুণ দুটি শট খেলেছেন সৌম্য। মাদুশান লাইন-লেংথ ঠিক করে উঠতে পারেননি, মাশুলও দিয়েছেন। প্রথম ৩ ওভারে গুণেছেন ৩১ রান।
৬ ওভারে ৪১/১।
লিটন ফিরেছেন দলীয় ০ রানেই। অষ্টম ওভারে ৫০ পূর্ণ হলো বাংলাদেশের। ফলে ৫০ পূর্ণ হলো নাজমুল ও সৌম্যর জুটিরও। সর্বশেষ ৩ ওভারে সৌম্য মেরেছেন ৪টি চার। লাহিরু কুমারার পর আরেক প্রান্তে জানিত লিয়ানাগাকে এনেছেন কুশল মেন্ডিস। তাঁকেও কাভার ড্রাইভে চার মেরেছেন সৌম্য, তাতেই ৫০ পূর্ণ হয়েছে দল ও জুটির। লিয়ানাগে অবশ্য দ্বিতীয় বলে চার খাওয়ার পর আর রান দেননি এ ওভারে।
৮ ওভারে ৫০/১।
ভাগ্যের ছোঁয়া পেয়ে যাচ্ছেন নাজমুল। কুমারার শর্ট বলে টপ-এজড হয়েছিলেন, কিন্তু তা গেছে উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে। লিয়ানাগের শর্ট বলে আবার তুলেছিলেন ক্যাচ, ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ পর্যন্ত পৌঁছায়নি সেটি। লিটন শুরুতে ফেরার চাপটা অবশ্য অনেকটাই সামাল দিয়ে এনেছেন নাজমুল ও সৌম্য। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে শুরুটা তাই ভালোই হয়েছে। দুজনই এখন থিতু। নাজমুল ৩১ বলে ৩৪*, সৌম্য ২৬ বলে ২৭*।
ডিপ স্কয়ার লেগে সৌম্যর তোলা ক্যাচ নিয়ে উদ্যাপন করছিলেন আভিস্কা ফার্নান্ডো। সেটি যে ফ্রি হিট, তা জানতেনই না তিনি। স্বাভাবিকভাবেই সৌম্যর আউট হওয়ার কথা নয় তাতে।
সৌম্য আউট হননি। কিন্তু দিলশান মাদুশঙ্কা পরের বলেই ফেরালেন নাজমুলকে। অফ স্টাম্প ঘেঁষা দারুণ লাইন ও লেংথ। লেগ সাইডে ঘুরিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন নাজমুল। তবে বেরিয়ে যাওয়া বলটি তাঁর ব্যাটের কানায় লেগে গেছে মেন্ডিসের হাতে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান আজ থেমেছেন ৩৯ বলে ৪০ রান করে, সৌম্যর সঙ্গে তাঁর জুটিতে উঠেছে ৭২ বলে ৭৫ রান।
শুধু আভিস্কা নন, এবার পুরো শ্রীলঙ্কা দলই উদ্যাপনের সুযোগ পেয়েছে!
প্রথম কয়েকটি বল সময় নিয়েছিলেন। প্রথম বাউন্ডারির পর শেকল ভাঙা শুরু করেছেন সৌম্য। সর্বশেষ মাদুশঙ্কার পরপর ২ বলে মেরেছেন ২টি চার—কাভারের পর স্কয়ার লেগ দিয়ে। পরের ওভারে ভেল্লালাগেকে মেরেছেন আরেকটি। এখন পর্যন্ত ইনিংসে এ বাঁহাতি মেরেছেন ৮টি চার, ফিফটি থেকে তিনি এখন ৫ রান দূরে।
১৬ ওভারে ৯৮/২।
১৬.২ ওভার, মাদুশানের বলে তাওহিদ হৃদয়ের নেওয়া ৩ রানে ১০০ পেরোল বাংলাদেশ।
১৭ ওভারে ১০৩/২।
হাসারাঙ্গাকে সুইপ করে চার মেরে ফিফটি পূর্ণ করলেন সৌম্য—৫২ বলে। নাজমুল ফেরার পর গুরুত্বপূর্ণ এখন তাঁর ইনিংস। ক্যারিয়ারে সৌম্যর এটি ১২তম ফিফটি, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে দ্বিতীয়।
১৮ ওভারে ১১০/২।
২০তম ওভারে হাসারাঙ্গাকে টানা দুটি চার মেরেছেন সৌম্য, এর প্রথমটিতে ক্যারিয়ারে ২ হাজার রান পূর্ণ হয়েছে তাঁর। পরের ওভারে কুমারাকে আপার কাটে মেরেছেন ম্যাচের প্রথম ছক্কা। ওই শটে হৃদয়ের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি হয়ে গেছে সৌম্যর।
হাসারাঙ্গার উদ্যাপনটাই বলে দিচ্ছিল সব। সৌম্যর উইকেট কতটা দরকার ছিল তাঁদের।
রিভার্স সুইপ করেছিলেন। টাইমিং হয়েছিল বেশ ভালো। কিন্তু মিডউইকেট থেকে বাঁয়ে ছুটে এসে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন দিলশান মাদুশঙ্কা। ৬৬ বলে ৬৮ রান করে আউট সৌম্য। ১১টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ১টি ছক্কা। ১৩০ রানে তৃতীয় উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ।
আগের ম্যাচে তাঁর ৩৭ রানের ইনিংসেরই প্রশংসা হয়েছিল অনেক। সেই মাহমুদউল্লাহ আজ ফিরলেন মুখোমুখি দ্বিতীয় বলেই। হাসারাঙ্গাকে সামনে এসে খেলতে গিয়েছিলেন, মিস করে গেছেন গুগলি। বলটি নিচুও হয়েছিল একটু। স্টাম্পিং হয়ে ফিরতে হলো তাঁকে। লিটনের পর দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে ইনিংসে ০ রানে ফিরলেন তিনি। ৩ বলের মধ্যে ২ উইকেট নিয়ে লড়াইয়ে শ্রীলঙ্কা।
২২ ওভারে ১৩০/৪, এ ওভারের শুরুতে স্কোর ছিল ১৩০/২!
১৪১/৪।
লিটন ফেরার পর বাংলাদেশকে এ পর্যন্ত এনেছে নাজমুলের পর হৃদয়ের সঙ্গে সৌম্যর দুটি জুটি। নাজমুল থেমেছেন ফিফটির আগে। ফিফটিকে সেঞ্চুরির দিকে নিয়ে যেতে পারেননি সৌম্যও। মাঝে ৩ বলের মধ্যে তাঁর ও মাহমুদউল্লাহর উইকেট নিয়ে লড়াইয়ে ফিরেছে শ্রীলঙ্কা। আপাতত আবার জুটি গড়ার পালা মুশফিক ও হৃদয়ের। সর্বশেষ ম্যাচে নাজমুল ও মুশফিকের জুটি বাংলাদেশকে নিয়ে গিয়েছিল রান তাড়ায় জয়ের পথে।
ওভারের মাঝপথে টান পেয়ে উঠে গেছেন মাদুশঙ্কা। লিয়ানাগে করেছেন বাকি ২ বল।
পরের ওভারে ভেল্লালাগের বলে কাভারে ক্যাচ তুলেছিলেন মুশফিক। তবে শটে শক্তি ছিল অনেক। সাদিরা সামারাবিক্রমা হাত লাগালেও রাখতে পারেননি সেটি। ১৫০ পেরিয়েছে বাংলাদেশ।
২৮ ওভারে ১৫১/৪
ভেল্লালাগের করা ৩০তম ওভারে একটি চার মেরেছিলেন মুশফিক। লিয়ানাগের পরের ওভারে মারলেন টানা দুটি। গতি বাড়ানোর আভাস মুশফিকের, সর্বশেষ ২ ওভারে এসেছে ১৮ রান।
হাসারাঙ্গা ফিরলেন বোলিংয়ে। প্রথম বলেই মুশফিকের বিপক্ষে রিভিউ নিল শ্রীলঙ্কা।
ফুললেংথের বল সুইপ করতে গিয়ে মিস করে যান মুশফিক। আম্পায়ার মাসুদুর রহমান আউট দেননি শ্রীলঙ্কানদের আবেদনে। বল ব্যাটে লাগেনি। বল ট্র্যাকিং দেখিয়েছে, সেটি আঘাত করত মিডল লেগে। গতি বাড়ানোর আভাস দেওয়ার পরপরই থামলেন মুশফিক, ২৮ বলে ২৫ রান করে। ৩২তম ওভারে ১৭৩ রানে পঞ্চম উইকেট হারাল বাংলাদেশ। ৩০০ রানের সম্ভাবনাতেও ধাক্কা লাগল বড়।
আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার প্রধান স্পিনারকে পাত্তাই দেননি মুশফিক। তাঁর ২৫ বলে তুলেছিলেন ২৯ রান। আজ মুশফিক যখন গতি বাড়ানোর আভাস দিচ্ছিলেন, তখনোই হাসারাঙ্গাকে ফেরালেন কুশল মেন্ডিস। আজ শ্রীলঙ্কান লেগ স্পিনারের ৬ বলে ৩ রান করতে পেরেছেন মুশফিক, আউটও হয়েছেন তাঁর বলেই।
হৃদয়কে সঙ্গে দেওয়ার কাজটি করছিলেন মিরাজ। হুট করেই হাসারাঙ্গার বিপক্ষে সামনে আসার খেয়াল হলো তাঁর। শেষ মুহূর্তে ভুল বুঝতে পেরেছিলেন, লেগ স্পিনিং ডেলিভারিটা ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেও অবশ্য সফল হননি। হয়েছেন বোল্ড। হাসারাঙ্গা পেয়েছেন তাঁর চতুর্থ উইকেট। বাংলাদেশ হারিয়েছে ষষ্ঠ উইকেট।
৩৬ ওভারে ১৮৯/৬।
৩৯তম ওভারে ২০০ পেরোল বাংলাদেশ। একদিকে টিকে আছেন হৃদয়, তাঁকে সঙ্গ দিতে এসেছেন তানজিম হাসান। বাংলাদেশ কত দূর যাবে, তার অনেকটাই নির্ভর করছে হৃদয় কতক্ষণ থাকেন তার ওপর।
স্কোর ২০৬/৬
সর্বশেষ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ফিফটি পেয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে হৃদয়ের সর্বশেষ ফিফটি ছিল সেটিই। ৮ ইনিংস পর আরেকটি ৫০ রানের ইনিংসের দেখা পেলেন তিনি। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তাঁর সপ্তম ফিফটি।
৩৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে এসেছিল সর্বশেষ বাউন্ডারি। ৪৩তম ওভারের তৃতীয় বলে সে খরা কাটালেন হৃদয়, লাহিরু কুমারার বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরেছেন তিনি। তানজিমকে নিয়ে এগোচ্ছেন হৃদয়।
৪৩ ওভারে ২২৫/৬
ডাগআউট থেকে ‘শান্ত থাকার ইঙ্গিত’ করছিলেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। ঠিক কাকে উদ্দেশ্য করে, তা অবশ্য নিশ্চিত নয়। ৪ ওভার বাকি থাকতে স্কোর ২৩৬/৬, হৃদয় ও তানজিমের জুটি অবিচ্ছিন্ন ৪৭ রানে।
না, শেষ করে আসতে পারলেন না তানজিম। মাদুশানকে টেনে মারতে গিয়েছিলেন, মিড অফকে পার করাতে পারেননি। ৪৭ রানেই থেমেছে হৃদয়ের সঙ্গে তাঁর জুটি।
২৪২/৭—এ স্কোর নিয়ে ৪৮তম ওভার শুরু করেছিল বাংলাদেশ। হাসারাঙ্গার প্রথম ৩ বলে হৃদয় মারেন দুটি ছক্কা। তবে এর বাইরে আর কোনো রান নিতে পারেননি।
ওয়াইড লং অন দিয়ে টেনে ছক্কা। ফুলটস পেয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে চার। মাদুশানের করা ৪৯তম ওভার তাসকিন শুরু করেন ২ বলে ১০ রান নিয়ে। মাঝে ৩ বলে এসেছিল ৩টি চার, শেষ বলে কাভার দিয়ে ড্রিল করে হৃদয় মেরেছেন আরেকটি চার।
৪৯তম ওভারে উঠেছে ১৭ রান।
৪৯ ওভারে ২৭১/৭।
স্কুপ করতে গিয়ে সংযোগ ঘটাতে পারেননি আগের বলে। কুমারার ফুললেংথ থেকে এরপর তুলে লং অন দিয়ে ছক্কা মারলেন। শেষ বলে ডিপ স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে মারলেন আরেকটি। কুমারা প্রথম ৪ বলে দিয়েছিলেন মাত্র ১ রান (লেগবাই), শেষ ২ বলে দিলেন ১২ রান। হৃদয় ১০২ বলে অপরাজিত থাকলেন ৯৬ রানে।
প্রথম ছক্কা মারার পর হৃদয়ের হতাশাই বলছিল, তিনি এ ওভারে তুলতে চেয়েছিলেন আরও। সেটি না হলেও বাংলাদেশ তুলেছে ২৮৬ রান।
বাংলাদেশের ইনিংসকে টেনেছেন মূলত দুজন—সৌম্য ও হৃদয়।
শুরুতে লিটন ফেরার পর নাজমুলের সঙ্গে সৌম্যর ৭৫ রানের জুটি ভালো একটা ভিতই গড়ে দিয়েছিল। তবে ভাগ্যের সহায়তা পাওয়া নাজমুল থামেন ফিফটির আগেই। ফিফটির পরপর দারুণ ফিল্ডিংয়ে ফিরতে হয় সৌম্যকেও। যিনি হৃদয়ের সঙ্গে গড়েন ৫৫ রানের জুটি।
সৌম্য আউট হওয়ার ১ বল পর মাহমুদউল্লাহও স্টাম্পিং হলে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। মুশফিকের সঙ্গে ৪৩ রানের জুটিতে সে চাপ একটু সামাল দেন হৃদয়। কিন্তু মুশফিকের পর মিরাজও হৃদয়ের সঙ্গে বেশিক্ষণ থাকেননি সে অর্থে।
বাংলাদেশকে লড়াই করার মতো স্কোর এনে দেওয়ার জন্য হৃদয়ের ভরসা তখন টেল-এন্ডাররা। তানজিমের পর তাসকিন সে কাজ করেছেন দারুণভাবে। তানজিম সঙ্গ দিয়েছেন, ৩৩ বলে ১৮ রানের ইনিংসে। পরে তাসকিন খেলেছেন ১০ বলে ১৮ রানের ক্যামিও।
দুর্দান্ত শুরু বাংলাদেশের। শরীফুলের করা প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই প্রথম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেলেন আভিস্কা ফার্নান্ডো। ক্রিজে থেকে ডিফেন্ড করতে গিয়েছিলেন, তবে ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে গেছে ক্যাচ।
১ ওভারে ৪/১।
ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে বাঁ দিকে ডাইভ দিয়ে বলে হাত লাগিয়েছিলেন, কিন্তু রাখতে পারেননি মিরাজ। তানজিমের বলে ক্যাচ তুলেও বেঁচে গেছেন কুশল মেন্ডিস। ১ বল পর টেনে মিড অফ দিয়ে চার মেরেছেন নিশাঙ্কা।
২ ওভারে ১৫/১।
তানজিমের ওপর চড়াও হয়েছিলেন মেন্ডিস। টানা দুই চারে শুরু হয়েছিল চতুর্থ ওভার।
পরের ওভারে শরীফুলের বলে অবশ্য ভাগ্যের ছোঁয়া পেয়েছেন নিশাঙ্কা। ইনসাইড-এজে চার হয়েছে, এরপর আউটসাইড-এজে পেয়েছেন ছক্কা। ডিপ থার্ডে তানজিমের একটু ওপর দিয়ে গেছে সেটি।
শেষ ২ ওভারে এসেছে ২২ রান।
এবং তাসকিন এসেই করেছেন আঘাত। লেংথ থেকে সিমে পড়ে একটু বেরিয়ে যাচ্ছিল বল। ডিফেন্ড করতে গিয়ে খোঁচা দিয়েছেন মেন্ডিস। আবার শ্রীলঙ্কাকে চাপে ফেলল বাংলাদেশ।
তাসকিনের এটি ৯৯তম ওয়ানডে উইকেট।
মিরাজ কঠিন সুযোগ ছেড়েছিলেন, তবে এটা ছাড়ার কথা নয়। ছাড়েনওনি।
শরীফুলের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ তুলেছেন সাদিরা সামারাবিক্রমা। সর্বশেষ ৭ বলে ১ রান তুলতে ২ উইকেট হারাল শ্রীলঙ্কা। চট্টগ্রামে ফেবারিট বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ ৬৯/১
শ্রীলঙ্কা ৬০/৩
পার্থক্য উইকেটের সংখ্যাতেই।
নিশাঙ্কা এক প্রান্তে আছেন এখনো। আপাতত তাঁর সঙ্গী আসালাঙ্কা। ১০ম ওভারে আরেকটি কঠিন সুযোগ এসেছিল, তাসকিনের বলে দিয়েছিলেন আসালাঙ্কাই। তবে গালিতে হাত লাগালেও নিতে পারেননি লিটন।
প্রথম পাওয়ারপ্লেতে ৩ উইকেট হারানোর পর সতর্ক নিশাঙ্কা ও আসালাঙ্কা। তবে সতর্ক বলার সঙ্গে সঙ্গেই মিরাজকে স্লগ করে ছক্কা মারলেন আসালাঙ্কা। দুজনের জুটি এখন ৩৮ রানে অবিচ্ছিন্ন।
১৪ ওভারে ৮১/৩।
আড্রিয়ান হোল্ডস্টক আউট দিয়েছিলেন অনেকটা সময় নিয়ে। নিশাঙ্কা রিভিউ নেন সঙ্গে সঙ্গেই। এমনকি নাজমুলও ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন, ব্যাটে লেগেছে বল। হয়েছে সেটিই।
নিশাঙ্কা ও আসালাঙ্কার জুটিতে উঠল ৫০ রান। ১৭ ওভারশেষে শ্রীলঙ্কা ৯৪/৩।
বাংলাদেশের দ্রুতই দরকার উইকেট, সেটি এনে দেবেন কে?
আফগানিস্তানের সঙ্গে ছিলেন দারুণ ফর্মে। প্রথম ম্যাচে শুরুটা পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। আজ চাপের মুখে দারুণ একটি ফিফটি করলেন নিশাঙ্কা। লাগল ৫৮ বল। তবে তিনিও জানেন, কাজ বাকি এখনো।
উইকেট পড়ে গেলেও রানের গতি ধরে রেখেছেন নিশাঙ্কা ও আসালাঙ্কা। রান রেট তাই চিন্তার ব্যাপার নয় এখন। বাংলাদেশও জানে, দরকার উইকেট। ২০তম ওভারে আনা হয়েছে তাইজুল ইসলামকে।
২০ ওভারে ১১৭/৩।
স্লগ সুইপে ছক্কা। তবে এ ডেলিভারির জন্য উইকেটকিপার মুশফিকের সঙ্গে অধিনায়ক নাজমুলেরও প্রশংসা পেলেন তাইজুল। সেটি তাকে কতটা উৎসাহ দেবে সেটি প্রশ্ন।
ওই ছক্কায় ফিফটী হয়ে গেছে আসালাঙ্কার। মাত্র ৫০ বলে মাইলফলকে গেলেন। ম্যাচের পরিস্থিতিতে যে ইনিংস শ্রীলঙ্কার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বেশ।
ব্রেকথ্রুর খোঁজে নাজমুল এনেছেন সৌম্যকেও।
২৫ ওভারে ১৪০/৩।
বোলিংয়ে ফেয়ার মিরাজকে স্লগ সুইপে ছক্কা মেরে স্বাগত জানিয়েছেন আসালাঙ্কা। ওই শটে নিশাঙ্কার সঙ্গে জুটি ছুঁয়েছে ১০০ রান। ওভারশেষে শ্রীলঙ্কা ছুঁয়ে ফেলেছে ১৫০ রান।
২৪ ওভারে প্রয়োজন ১৩৭ রান। বাংলাদেশের প্রয়োজন দ্রুত উইকেট।
প্রায়—ব্রেকথ্রুটা প্রায় পেয়েই গিয়েছিল বাংলাদেশ। শরীফুলের বলে টেনে মেরেছিলেন নিশাঙ্কা, হয়তো প্রার্থনাই করছিলেন বল যাতে মিড অফ পার হয়। নাজমুল লাফ দিয়ে বল হাতেও লাগিয়েছিলেন, তবে রাখতে পারেননি। আরেকটি ‘হাফ-চান্স’ হাতছাড়া হলো বাংলাদেশের, ইনিংসে এখন পর্যন্ত যা তৃতীয়।
২৯ ওভারে ১৬৭/৩।
চারে শুরু ওভার, শেষে গিয়েও চার। মাঝে প্রায় নিশ্চিত চার বাঁচিয়েছেন তানজিম হাসান। সব মিলিয়ে শরীফুলের করা ৩১তম ওভারে এসেছে ১০ রান। জয়ের জন্য শ্রীলঙ্কার দরকার এখন ১০০ রানের কম। সময় বয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের, মনে হচ্ছে সেটি।
৩১ ওভারে ১৯২/৩
শর্ট বলে পুল। হেলমেট খুলে এনে দুহাত মেলে দাঁড়ালেন নিশাঙ্কা। উপলক্ষ্য—ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। লাগল ১০০ বল। আগের সিরিজেই ডাবল সেঞ্চুরি পাওয়া শ্রীলঙ্কান ওপেনার ছুটছেন। তাঁর ছোটার পথে পিষ্ট হচ্ছে বাংলাদেশ।
দুজন ভাঙলেন ১৯৯৭ সালে অর্জুনা রানাতুঙ্গা ও রোশান মহানামার ১৭১ রানের রেকর্ড, লাহোরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সে জুটি গড়েছিলেন তাঁরা।
বলে স্লগ করেছিলেন নিশাঙ্কা। ডিপ মিডউইকেটে ভুল করেননি লিটন। অবশেষে আরেকটি উইকেটের দেখা পেল বাংলাদেশ। ১১৩ বলে ১১৪ রান করে থামলেন নিশাঙ্কা, ভাঙল ১৮৫ রানের বিশাল জুটি। দেরি কি বেশি হয়ে গেল বাংলাদেশের?
শ্রীলঙ্কার দরকার ৫৯ রান।
বাংলাদেশীরা উদ্যাপন শুরু করে দিয়েছিলেন। শব্দ ছিল, বলের লাইন পরিবর্তন করতেও দেখা গেছে। তবে আম্পায়ার মাসুদুর রহমান নড়েননি। অনুমিতভাবেই রিভিউ নেন নাজমুল। তাতে সফল হয়েছে বাংলাদেশ, আসালাঙ্কা থামলেন সেঞ্চুরি থেকে ৯ রান দূরে। বাংলাদেশের আশা নিশ্চিতভাবেই বেড়েছে আরও।
৩৮ ওভারে ২৩৫/৫।
লিয়ানাগাকে শর্ট বলে পরাস্ত করেছিলেন তাসকিন। এরপর আবার করতে গেলেন। পিচে পড়ে ঘুরে গেল সে বাউন্সার, যা পরাস্ত করল মুশফিককেও। পিচের ফাটলে লেগে দিক পরিবর্তন করেছে বল, মনে হয়েছে এমন। এরপর ফুললেংথে যান তাসকিন, যাতে আসে ২ রান। ডিপে ভালো করেছেন হৃদয়। তাসকিনের করা ৪০তম ওভারে এসেছে ৯ রান।
৬০ বলে দরকার ৪০ রান।
এলবিডব্লিউ। রিভিউ। ব্যর্থ। উইকেট!
আরেকটি ব্রেকথ্রুয়ের খোঁজে তানজিমকে এনেছেন নাজমুল। প্রথম বলেই সফল তিনি। ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করেছিলেন লিয়ানাগে। মিস করে ঘটেছে বিপদ।
শ্রীলঙ্কার দরকার ৩৬ রান। বাংলাদেশের ৪ উইকেট।
৮ ওভার। ৩৩ রান। বাকি ৪ উইকেট।
শরীফুল ব্যাকআপ নিতে পিছিয়ে গিয়েছিলেন। ওদিকে সিঙ্গেল নিতে যাওয়া ভেল্লালাগের সঙ্গে প্রায় সংঘর্ষ হয়ে গিয়েছিল। তা নিয়ে একটু উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ও হয়ে গেছে। দেখে মনে হয়েছে, ভেল্লালাগে অভিযোগ করেছেন শরীফুলকে নিয়ে। তবে শরীফুল যে সেটির কড়া জবাব দিয়েছেন, বোঝা গেছে সেটিও। সে রান নিতে গিয়ে আঘাতও পান ভেল্লালাগে, ফলে খেলা বন্ধও থাকে কিছুক্ষণ।
৪২ বলে দরকার ৩০ রান।
ওয়াইডসহ তানজিম দিয়েছেন ৫ রান। শ্রীলঙ্কা ঝুঁকি নিচ্ছে না এখন পর্যন্ত।
এখনো বড় শটের পথে যাননি হাসারাঙ্গা-ভেল্লালাগে। ৩ পেসারের বাকি ১টি করে ওভার।
৪৬তম ওভারের শেষ বলটা শর্ট করেছিলেন তানজিম। সে আমন্ত্রণ নিলেন হাসারাঙ্গা। পুল করে মেরেছেন ছক্কা। তানজিমের শেষ ওভারে এসেছে ৯ রান। শ্রীলঙ্কার দরকার ২৪ বলে ১৩ রান।
শরীফুল ও তাসকিনের বাকি ২টি করে ওভার। বাকি ২ ওভার করাতে হতো তাইজুল বা সৌম্যকে দিয়ে। নাজমুল এনেছিলেন তাইজুলকে। দ্বিতীয় বলে তাইজুলের মাথার ওপর দিয়ে সাইটস্ক্রিন বরাবর আরেকটি ছক্কা মেরে শ্রীলঙ্কাকে আরেকটু কাছে নিয়ে গেছেন হাসারাঙ্গা।
পঞ্চম বলে গিয়ে আবার তুলে মারতে গিয়ে হাসারাঙ্গা ক্যাচ তুলেছেন ঠিকই। তবে শ্রীলঙ্কার দরকার আর ২ রান।
তাইজুলের পর নাজমুল আনলেন হৃদয়কে। প্রথম বলে চার মেরে ভেল্লালাগে নিশ্চিত করলেন ৩ উইকেটের জয়।
সিরিজে সমতা ফেরাল তারা। শেষ ম্যাচটি হবে তাই সিরিজ নির্ধারণী।
২৮৭ রানের লক্ষ্যে পাওয়ারপ্লেতেই ৩ উইকেট হারিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। সে সময় ফেবারিট ছিল বাংলাদেশই। কিন্তু নিশাঙ্কা ও আসালাঙ্কার চতুর্থ উইকেট জুটি এরপর শুধু হতাশই করে গেছে স্বাগতিকদের। দুজন কঠিন দুটি সুযোগ দিয়েছিলেন, তবে বাংলাদেশ রাখতে পারেনি তা।
চতুর্থ উইকেটে দুজন যোগ করেন ১৮৫ রান। নিশাঙ্কা পেয়েছেন সেঞ্চুরি, আসালাঙ্কা থেমেছেন ৯ রান দূরে। ৭ রানের মধ্যে দুজনকে ফিরিয়ে লড়াইয়ে ফেরার আভাস দেয় বাংলাদেশ। এরপর জানিত লিয়ানাগেকেও ফেরান তানজিম, জয় থেকে শ্রীলঙ্কার দূরত্ব তখন ৩৬ রান।
তবে এর পরের উইকেট যতটা দ্রুত দরকার ছিল বাংলাদেশের, ততটা দ্রুত মেলেনি। ভেল্লালাগে ও হাসারাঙ্গা ঝুঁকি নেননি, হাতে থাকা বলের সংখ্যা তাদের সে পথটা করে দিয়েছিল। দুজনের জুটি শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে যায় জয়ের দুয়ারে। ২ রান বাকি থাকতে হাসারাঙ্গা ফিরলেও তাতে পার্থক্য গড়ে ওঠেনি।
শিশিরের প্রভাব ছিল ঠিকই। তবে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশকে পোড়াবে আরও কয়েকটি রানের আক্ষেপ। লিটন প্রথম ওভারে ফিরলেও সৌম্য ও নাজমুলের জুটি ভালো একটা ভিত গড়ে দিয়েছিল। সৌম্য ফেরার পর বাংলাদেশকে টানেন হৃদয়। দারুণ হিসাব করে খেলা ইনিংসে বাংলাদেশ পায় লড়াই করার মতো সংগ্রহ। তবে যথেষ্ট হয়নি তা।
আমার ও সৌম্যর আরও লম্বা সময় ব্যাটিং করা উচিত ছিল।নাজমুল হোসেন, বাংলাদেশ অধিনায়ক
শ্রীলঙ্কান সমর্থকদের ধন্যবাদ।মাঠে শ্রীলঙ্কান সমর্থকদের উপস্থিতি খেয়াল করেছেন মেন্ডিসও।
দীর্ঘ সময় ব্যাট করে লক্ষ্যের কাছাকাছি যেতে চেয়েছি আমি ও চারিত আসালাঙ্কাপাতুম নিশাঙ্কা, শ্রীলঙ্কান ওপেনার