ম্যাচটা সিকান্দার রাজারই ছিল। অন্তত রান তাড়ায় নামা শ্রীলঙ্কার ইনিংসের ১৫ ওভার পর্যন্ত অবশ্যই। কিন্তু ব্যাটে বলে দারুণ খেলা জিম্বাবুয়ে অধিনায়ককে হাসতে দিলেন না শ্রীলঙ্কার দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস-দাসুন শানাকার সপ্তম উইকেট জুটি ম্যাচ বের করে নেয় জিম্বাবুয়ের নাগাল থেকে। ম্যাথুস অবশ্য দলকে জিতিয়ে ফিরতে পারেননি। তিনি যখন আউট হন, ২ বলে ৬ রান দরকার শ্রীলঙ্কার। দুষ্মন্ত চামিরা ৪ ও ২ রান নিয়ে শেষ বলে গড়ানো ম্যাচে জয় এনে দলকে।
জিম্বাবুয়ের তোলা ৫ উইকেটে ১৪৩ শ্রীলঙ্কা শেষ বলে টপকে যায় ৩ উইকেট হাতে রেখে। তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে শ্রীলঙ্কা এগিয়ে গেল ১-০ ব্যবধানে।
কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামের ম্যাচটিতে ১৫ ওভার শেষে শ্রীলঙ্কার রান ছিল ৬ উইকেটে ৮৩। জয়ের জন্য তখনো প্রয়োজন ৩০ বলে ৬১ রান। সদ্য অধিনায়কত্ব হারানো শানাকার সঙ্গে মাঠে ম্যাথুস, যিনি টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেছেন প্রায় তিন বছর পর। ততক্ষণে ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেওয়া রাজার বোলিং শেষ।
১৬তম ওভারে ব্লেসিং মুজারাবানিকে টানা দুই চার মেরে পাল্টা আক্রমণের শুরুটা করেন ম্যাথুস। শেষ ওভারে এই মুজারাবানি যখন বল করতে আসেন, শ্রীলঙ্কার দরকার ১৪ রান। এবার প্রথম বল সোজা ব্যাটে আম্পায়ারের মাথার ওপর দিয়ে, আর দ্বিতীয় বলে চতুরতার সঙ্গে স্লিপের দিকে ঠেলে টানা দুই চার নেন ম্যাথুস। চতুর্থ বলে অবশ্য বাউন্ডারির ভেতরে ক্যাচ হয়ে থাকে ৩৮ বলে ৪৬ রানের ইনিংসটি। পঞ্চম বলে নতুন ব্যাটসম্যান চামিরা এলোপাতাড়ি ব্যাট ঘোরালে বল উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে গিয়ে বাউন্ডারি পার হয়। শেষ ডেলিভারিতে বল আকাশে উঠলেও ফাঁকায় পড়ায় জয়ের জন্য দরকারি ২ রান পেয়ে যায় শ্রীলঙ্কা। শানাকা অপরাজিত থাকেন ১৮ বলে ২৬ রান করে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামা জিম্বাবুয়ের ইনিংস প্রায় একাই টেনেছেন রাজা। দুই ওপেনার তিনাশে কামুনহুকামুয়ে ও ক্রেইগ আরভিন যখন ফেরেন, জিম্বাবুয়ের রান ৬ ওভারে ৩৮। সেখান থেকে প্রথমে শন উইলিয়ামস, পরে ব্রায়ান বেনেটকে নিয়ে দলের সংগ্রহ চ্যালেঞ্জিং জায়গায় নিয়ে যান রাজা। ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে দুষ্মন্ত চামিরার বলে শানাকার ক্যাচ হওয়ার আগে ৪২ বলে ৬২ রান করে যান জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক। ইনিংসটিতে ছিল ৫টি চার ও দুটি ছয়।
জিম্বাবুয়ের আর কোনো ব্যাটসম্যান রাজার অর্ধেক রানও তুলতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ রান করেন ওপেনার কামুনহুকামুয়ে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৪ রান উইলিয়ামসনের। শ্রীলঙ্কার দুই স্পিনার মহীশ তিকশানা ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা রান আটকানোর পাশাপাশি উইকেটও তুলে নেন। তিকশানা ৪ ওভারে দেন ১৬ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট, অধিনায়ক হাসারাঙ্গার ২ উইকেটে খরচ ৪ ওভারে ১৯ রান।
বোলারদের এই নৈপুণ্যই শ্রীলঙ্কাকে গড়ে দেয় জয়ের ভিত্তি। যেখানে বাকি কাজটা সেরেছেন ম্যাথুসরা।
জিম্বাবুয়ে: ২০ ওভারে ১৪৩/৫ (রাজা ৬২, কামুনহুকামাওয়ে ২৬, উইলিয়ামস ১৪; তিকশানা ২/১৬, হাসারাঙ্গা ২/১৯)।
শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৪৪/৭ (ম্যাথুস ৪৬, শানাকা ২৬*, মেন্ডিস ১৭; রাজা ৩/১৩)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৩ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস।