বরুণ চক্রবর্তীর বলে বলে ফ্লিক করছিলেন, রবি বিষ্ণয়কে সুইপ। সুইপেরও নানা ধরন আছে। স্লগ সুইপ, রিভার্স, প্যাডেল, হাঁটু গেড়ে সুইপ কত প্রকার ও কী কী, তা দেখাচ্ছিলেন সূর্যকুমার যাদব।
সূর্য মারছেন, বরুণ ও বিষ্ণয়ও টি-টোয়েন্টি দলের অধিনায়ককে আউট করার চেষ্টা করছেন। আর চেষ্টাটা প্রতি বলেই মুখোমুখি লড়াইয়ে রূপ নিচ্ছিল। দুই স্পিনারের বলে দুই-একটি শট ঠিকঠাক টাইমিং হয়নি সূর্যের। সে রাগটা তিনি ঝাড়ছিলেন বেচারা নেট বোলারের ওপর।
সতীর্থদের মধ্যে এমন খুনে প্রতিযোগিতা নেট সেশনে দেখা যায় না। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামের নেটে আজ ভারতীয় দলের অনুশীলনে তা দেখা গেল।
সূর্যর পাশের পেস বোলার ও ভারতের বিশেষজ্ঞ থ্রোয়ার রঘুর বল খেলছিলেন অভিষেক শর্মা। ভারতের এই টি-টোয়েন্টি ওপেনার কেমন ব্যাটিং করেন, তা তো সবার জানা। নেটেও এর ব্যতিক্রম নয়। ক্রিকেটাররা ম্যাচের আবহটা অনুশীলনে নিয়ে আসার কথা বলে থাকেন। ভারতের নেটে আজ ম্যাচের কাছাকাছি আবহই পাওয়া গেল।
সূর্য আর অভিষেক, দুজনই একই সময় নেট সেশন শেষ করে এসে চেয়ারে বসলেন। অভিষেক ঘামে ভিজে একাকার অবস্থা। ক্লান্ত শরীরটাকে চেয়ারে ফেলবেন, এমন সময় অধিনায়ক হাজির। গ্লাভস, প্যাড খোলার সময়ই সতীর্থ ওপেনারের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘অল অ্যাবাউট ইনটেন্ট অ্যান্ড রেসপেক্ট।’
কথাটা থেমে থেমে দুইবার বললেন সূর্য। যেন বিড়বিড় করে কোনো মন্ত্র পাঠ করছেন। একটু দম নিয়ে সূর্য হিন্দিতে যা বললেন তাতে গোয়ালিয়রে ভারতীয় দলের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ের একটা ব্যাখ্যা পাওয়া যায়, ‘ইনটেন্ট ক্লিয়ার না থাকলে তুমি ফেঁসে যাবে। প্রতিপক্ষও চেপে বসবে। তাই প্রতিপক্ষকে সম্মানও করতে হবে।’
এরপর কিছুক্ষণ বসে বসে নেটে ব্যাটিং করা অন্য ব্যাটসম্যানদের ইনটেন্ট বাড়ানোর কাজটাও করছিলেন। রিঙ্কু সিং, রিয়ান পরাগদের ব্যাটিং দেখতে দেখতেই চিৎকার করে উঠলেন, ‘শট রিঙ্কু!’ এরপর ভক্তের মতো হাততালি দিচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর আবার চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘শট ইয়ার, শট! হোয়াট্টা সাউন্ড। একেবারেই অন্য রকম সাউন্ড।’ কথাটা শেষ করতে না করতেই নেট থেকে ব্যাট-বলের দারুণ শব্দ শোনা গেল।
সূর্যও থেমে থাকলেন না, ‘শট রিয়ান পরাগ!’ অধিনায়কের কথা শুনে মনে হয় আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলেন পরাগ। ওই কথার পর দুটি পুল শট খেললেন সামনের পায়ে, একটি লফটেড কাভার ড্রাইভও।
নেটের উইকেটের একটা ধারণাও পাওয়া গেল সূর্যর কথায়, ‘এই নেটের উইকেটগুলো ভালো। খুবই ভালো। ওই পাশেরগুলো আগের দিল্লির মতো। অনেক মন্থর ও নিচু। এটা ভালো।’ ম্যাচের উইকেটের সঙ্গে সাধারণত নেটের উইকেটের মিল থাকে। সে রকম কিছু হলে আগামীকাল দিল্লিতেও রান বন্যার ম্যাচ হতে যাচ্ছে।