বয়স হয়ে গেছে ৩৩ বছর। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর কত দিন খেলবেন মিচেল স্টার্ক? প্রশ্নটা জোরেশোরে না উঠলেও গুঞ্জনটা আছে। কলকাতায় আজ সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কথা বলার সময় এ নিয়ে ধারণা দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার এই তারকা পেসার।
স্টার্ক জানিয়েছেন, এবার বিশ্বকাপে নকআউট পর্বের ম্যাচ দিয়েই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ইতি টানার ইচ্ছা তাঁর নেই। তবে টেস্ট ক্রিকেট যত দিন সম্ভব খেলে যেতে সাদা বলের সংস্করণের ক্রিকেটই আগে ছাড়বেন।
২০১০ সালে ওয়ানডে দিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেক স্টার্কের। এক যুগের বেশি সময়ে দেশের হয়ে ১১৯ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ২৩০টি উইকেট। ২০২৭ বিশ্বকাপে নিজের খেলার কোনো সম্ভাবনাই দেখেন না স্টার্ক। তবে খুব দ্রুতই ৫০ ওভারের সংস্করণ ছাড়ছেন না।
বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী ওয়ানডে ম্যাচ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আগামী ফেব্রুয়ারিতে। এরপর আগামী সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হওয়ার আগে অস্ট্রেলিয়ার জন্য নির্ধারিত ৫০ ওভার সংস্করণের কোনো ম্যাচ নেই। ২০২৫ সালে রয়েছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, যা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা পাকিস্তানে।
স্টার্ক বলেছেন, ‘বিশ্বকাপের পরেও (ওয়ানডে) খেলব। তবে আগামী বিশ্বকাপে না খেলার ব্যাপারে আমার মনে কোনো সন্দেহ নেই। এটা নিয়ে ভাবনাই নেই। চার বছর লম্বা সময়।’ স্টার্ক এরপর যোগ করেন, ‘আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেটই শীর্ষবিন্দু। টেস্ট ছাড়ার আগে আমি অন্য সবকিছু ছেড়ে দেব। আমার কাছে (বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল) অস্ট্রেলিয়ার হয়ে আরেকটি ওয়ানডে ম্যাচের বেশি কিছু নয়। ওয়ানডে ক্রিকেটে পথের শেষটা এখনো হয়নি আমার।’
বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া। এবারের বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ৬.৫৫ ইকোনমি রেটে বোলিং করে এ পর্যন্ত ১০ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। নিজের সেরাটা এখনো দিতে পারেননি। ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপের তুলনায়ও এবার স্টার্ককে একটু ম্লানই লাগছে। তবে স্টার্ক জানিয়েছেন, গত অ্যাশেজের পর থেকেই ছোটখাটো কিছু চোট বয়ে বেড়াচ্ছেন।
তবে নির্দিষ্ট করে বলেননি, এসব ছোটখাটো চোট তাঁর পুরোনো কুঁচকি ও কাঁধের চোটের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কি না। বিশ্বকাপে শুধু তিনি একা নন, অন্য পেসাররাও বেশ কঠিন সময় কাটাচ্ছেন বলে দাবি করলেন স্টার্ক, ‘যে মানে থাকতে চেয়েছিলাম, অবশ্যই সেই মান অনুযায়ী খেলতে পারছি না...কিংবা সর্বশেষ দুই বিশ্বকাপে যেমন খেলেছি, সেই মানেও নেই। তবে শেষ পর্যায়ে এসে পার্থক্য গড়ে দেওয়ার সুযোগটা পাচ্ছি।’
স্টার্ক এরপর ওয়ানডে ক্রিকেটের ধরন ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পেসারদের কঠিন সময়ের কারণটা বোঝালেন, ‘একটি নির্দিষ্ট উইকেটে নতুন বলে সীমানায় দুজন ফিল্ডার রেখে বোলিং করা বোলিংয়ের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোর একটি। ম্যাচ গড়িয়ে চলার সঙ্গে উইকেট বুঝেও বল করতে হয়। এটাই ওয়ানডে ক্রিকেটের ধরন। ফ্ল্যাট উইকেটে দুই প্রান্ত থেকে দুটো নতুন বলে বল করতে হয় আর ৫ উইকেটের বিপরীতে শতকের সংখ্যা এবং স্কোরবোর্ডের দিকে তাকালেও এবার বিশ্বকাপের ধরনটা বোঝা যায়। অনুপাতটা একদমই অসম। টিকে থাকতে বোলারদের পথ খুঁজে নিতে হচ্ছে।’