পাকিস্তানের ক্রিকেট যেন একটা নাট্যমঞ্চ, যেখানে প্রতিনিয়ত মঞ্চস্থ হয় চমকপ্রদ সব নাটক। দলটির বিশ্বকাপ ব্যর্থতার পর নতুন করে শুরু হয়েছে নাটকের মঞ্চায়ন। নিজের পারফরম্যান্স ও নেতৃত্ব নিয়ে বিশ্বকাপের শুরু থেকেই সমালোচিত ছিলেন অধিনায়ক বাবর আজম। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে না পারার দায়ে সরেও যেতে হয় বাবরকে। বাবরের বিদায়ে দলের টেস্ট অধিনায়কত্ব পান শান মাসুদ এবং টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্বের ভার দেওয়া হয়েছে শাহিন শাহ আফ্রিদিকে।
শুধু অধিনায়কত্বেই নয়, পাকিস্তানের কোচিং স্টাফেও আসে ব্যাপক রদবদল। দলের পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় মোহাম্মদ হাফিজকে, যিনি আবার অস্ট্রেলিয়া সফরে থাকবেন প্রধান কোচের ভূমিকায়। প্রধান নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া হয় ওয়াহাব রিয়াজকে। এ ছাড়া পেস বোলিং কোচ হিসেবে উমর গুল এবং স্পিন বোলিং কোচ হিসেবে দলে নিয়োগ দেওয়া হয় সাঈদ আজমলকে।
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের রেশ শেষ হওয়ার আগেই পুরোপুরি নতুন রূপে সেজেছে পাকিস্তান দল। তবে দলের এমন রদবদল ও শান মাসুদকে টেস্ট অধিনায়ক করার বিষয়টি মানতে পারছেন না পাকিস্তানের কিংবদন্তি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদ। তাঁর মতে, অভিজ্ঞতা বিবেচনায় সরফরাজ আহমেদকেই নেতৃত্বে ফেরানো উচিত ছিল পাকিস্তানের।
সম্প্রতি পাকিস্তানের একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় কোচ ও খেলোয়াড়দের বয়সের পার্থক্য উল্লেখযোগ্য হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করে মিয়াঁদাদ বলেছেন, ‘কোচ ও খেলোয়াড়দের বয়সের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য থাকা উচিত। যদি পার্থক্য না থাকে তবে খেলোয়াড়েরা কোচকে সম্মান করবে না।’ এরপর বাবরকে নেতৃত্ব থেকে সরানো ভুল হয়েছে মন্তব্য করে মিয়াঁদাদ আরও বলেছেন, ‘যারা ক্রিকেট বোঝে না, তারাই বাবর আজমে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়েছে।’
এ সময় বাবরের পরিবর্তে শান মাসুদকে নয়, সরফরাজকে নেতৃত্ব দেওয়া উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন মিয়াঁদাদ, ‘সরফরাজকে শুধু দলে জায়গা দেওয়ায় নয়, নেতৃত্বও দেওয়া উচিত ছিল। তাকেই অধিনায়ক করা উচিত ছিল।’ একই সঙ্গে বিদেশিদের জাতীয় দলের কোচের দায়িত্ব দেওয়া অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের অপমান করার শামিল বলেও মন্তব্য করেছেন মিয়াঁদাদ।
এর কয়েক দিন আগে বাবরকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর সমালোচনা করেছিলেন মিয়াঁদাদ। তিনি সে সময় বলেছিলেন, ‘বাবরকে অধিনায়কত্ব থেকে সরানো ঠিক হয়নি। খেলোয়াড়দের যথেষ্ট সম্মান দিতে হবে। একজন ভালো ম্যানেজার রাখা যেত, যার কাজ হতো বাবরকে শক্তিশালী অধিনায়ক হিসেবে গড়ে তোলা। পিসিবি বাবরের সঙ্গে যে আচরণ করেছে, তা দুঃখজনক।’