বিপিএল

রাসেল–নারাইন–রিজওয়ান–মঈনদের নেতৃত্বে লিটন

বিনোদনের ক্রিকেট টি–টোয়েন্টি, গ্যালারি ভরে বেশি এই খেলাতেই। তবে বাংলাদেশে ঘরোয়া টি–টোয়েন্টি বলতে আছে বিপিএল–ই, ক্রিকেটার–দর্শক–সমর্থকদের অপেক্ষা থাকে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টের জন্য। টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বছর বলে এবার সে অপেক্ষা আরও বেশি। ১৯ জানুয়ারি শুরু হতে যাওয়া বিপিএলের দশম আসর সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বী সাত দলকে পরিচয় করিয়ে দিতেই এ আয়োজন। আজ সপ্তম ও শেষ পর্বে থাকছে গতবারের চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস—

ফুটবলে জার্মান আধিপত্য নিয়ে সাবেক ইংলিশ স্ট্রাইকার গ্যারি লিনেকার বলেছিলেন কথাটা, ‘ফুটবল এমন একটা খেলা, যেখানে ২২ জন একটা বলের পেছনে দৌড়ায়, কিন্তু দিন শেষে জেতে জার্মানি।’ বাংলাদেশের একমাত্র ফ্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের আধিপত্য নিয়ে প্রায় একই রকম কথা বলা যায়। ২০১৫ সাল থেকে কুমিল্লা বিপিএলে অংশ নিয়েছে ছয়বার, শিরোপা জিতেছে সর্বোচ্চ চারবার। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হিসেবে নতুন বিপিএল শুরুর আগেও কুমিল্লার লক্ষ্য তাদের স্লোগানের মতোই—‘উইন অর উইন’।

প্রত্যেকেরই ছোট-বড় দায়িত্ব থাকবে। সবাই সবটা ঠিকমতো পালন করলে ভালো ফল আসবে
মোহাম্মদ সালাউদ্দিন, প্রধান কোচ, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস

দলটিতে পঞ্চমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রসদই আছে। থাকছে স্থানীয় ও বিদেশি তারকা, অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের মিশেল। স্থানীয় ক্রিকেটারদের মধ্যে লিটন দাস ও মোস্তাফিজুর রহমান দুজনই বিপিএল ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই কুমিল্লায়। একসময়ের এই দুই তরুণ ক্রিকেটার এখন দলটির স্তম্ভ। এই মৌসুমে কুমিল্লার সঙ্গে সরাসরি চুক্তিতে যোগ দিয়েছেন তাওহিদ হৃদয়। সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে গত মৌসুমে ১৩ ম্যাচের ১২ ইনিংসে ১৪০ স্ট্রাইক রেটে ৪০৩ রান করা হৃদয় হয়ে উঠতে পারেন কুমিল্লার মিডল অর্ডারের বাজি।

স্পিন আক্রমণে তানভীর ইসলামে বরাবরই আস্থা রেখে এসেছে দলটি। তানভীরও হতাশ করেননি, গত মৌসুমে ১৭ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলার ছিলেন এই বাঁহাতি। ড্রাফট থেকে কুমিল্লা দলে ভিড়িয়েছে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, রিশাদ হোসেন, মুশফিক হাসানকে। তিনজনের মধ্যে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলে আসা পেসার মুশফিক হতে পারেন এবারের বিপিএলের চমক। সঙ্গে কুমিল্লার চেনা মুখ মাহিদুল ইসলাম, জাকের আলী তো আছেনই।

তবে বরাবরের মতোই কুমিল্লার মূল শক্তি তাদের বিদেশি তারকারা। পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান, নাসিম শাহ ও খুশদিল শাহ গত মৌসুমে কুমিল্লার হয়ে খেলে গেছেন। এবারও তাঁদের ধরে রেখেছে কুমিল্লা। তিন ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইন, জনসন চার্লস তো কুমিল্লার ঘরেরই ছেলে। ইংলিশ অলরাউন্ডার মঈন আলীকেও এবার কুমিল্লার জার্সিতে দেখা যাবে। ফিরছেন আফগান তারকা রশিদ খানও। কুমিল্লার হয়েই ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন রশিদ। গত বিপিএলে ফরচুন বরিশালের হয়ে বিস্ফোরক ব্যাটিং করা পাকিস্তানি ইফতিখার আহমেদকে এবার দেখা যাবে কুমিল্লার জার্সিতে। জামান খান, রাকিম কর্নওয়াল ও ম্যাথু ওয়াল্টার ফোর্ডের সঙ্গেও কুমিল্লার সরাসরি চুক্তি।

এবার কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসকে নেতৃত্ব দেবেন লিটন দাস

তারকায় ঠাসা এই দলকে তিনটি শিরোপা এনে দিয়েছেন ইমরুল কায়েস। বিদেশি তারকাদের সঙ্গে ইমরুলের সমন্বয় করে খেলার সামর্থ্য সব সময়ই প্রশংসিত হয়ে এসেছে। কিন্তু বিপিএলের সফলতম অধিনায়ককে এ মৌসুমে শুধু খেলোয়াড় হিসেবে দেখা যাবে। সমন্বয়ের কারণে বেশ কিছু ম্যাচে তাঁকে একাদশের বাইরে থাকতে হতে পারে। তাই নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে লিটনকে।

দলটির কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন অবশ্য কুমিল্লাকে একজনের দল ভাবতে চান না। তাঁর কথা, ‘এ ধরনের টুর্নামেন্ট কোনো খেলোয়াড় একা জিতিয়ে দেয়নি এখন পর্যন্ত। একেক দিন একেকজন ম্যাচ জেতাবে। প্রত্যেকেরই ছোট-বড় দায়িত্ব থাকবে। সবাই সবটা ঠিকমতো পালন করলে ভালো ফল আসবে।’

অনুশীলনে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস পেসার মোস্তাফিজুর রহমান

স্থানীয় ক্রিকেটার

লিটন দাস, মোস্তাফিজুর রহমান, তানভীর ইসলাম, তাওহিদ হৃদয়, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, জাকের আলী, মাহিদুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন, ইমরুল কায়েস, মুশফিক হাসান, এনামুল হক।

বিদেশি ক্রিকেটার

মোহাম্মদ রিজওয়ান, সুনীল নারাইন, মঈন আলী, আন্দ্রে রাসেল, ইফতিখার আহমেদ, জামান খান, খুশদিল শাহ, জনসন চার্লস, নূর আহমেদ, নাসিম শাহ, রশিদ খান, রাকিম কর্নওয়াল, ম্যাথু ওয়াল্টার ফোর্ড।

অধিনায়ক

লিটন দাস।

কোচ

মোহাম্মদ সালাউদ্দিন।

গত বিপিএলে অবস্থান

চ্যাম্পিয়ন।