কোথায় ছিল এই ইংল্যান্ড?
আগেই সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে পড়া বর্তমান বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা টানা পাঁচ ম্যাচ হারের পর অবশেষে পেয়েছে আরেকটি জয়। পুনেতে আজ নেদারল্যান্ডসকে ১৬০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে তারা, ফলে ওপরের প্রশ্নটি এখন তোলাই যায়! বেন স্টোকসের বিশ্বকাপে পাওয়া প্রথম শতক, ডেভিড ম্যালান ও ক্রিস ওকসের অর্ধশতকে পুনেতে আগে ব্যাট করে ৩৩৯ রান তোলে ইংল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে এক সময় আবার ধস নেমেছিল, তবে এবার স্টোকসের ইনিংসে শেষ পর্যন্ত বড় সংগ্রহই পায় তারা। জবাবে নেদারল্যান্ডস গুটিয়ে গেছে ১৭৯ রানেই।
সেমিফাইনালের সম্ভাবনা শেষ হয়ে গেলেও ইংল্যান্ডের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ শীর্ষ আটে থেকে বিশ্বকাপ শেষ করা, যাতে মিলবে ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সুযোগ। বড় জয়ে নেট রান রেটে বিশাল উন্নতি হয়েছে তাদের, ৮ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট ও -০.৮৮৫ রান রেট নিয়ে পয়েন্ট তালিকার সাতে উঠে এসেছে ইংল্যান্ড। বাটলারদের শেষ ম্যাচ পাকিস্তানের বিপক্ষে। অন্যদিকে এ হারে আনুষ্ঠানিকভাবে সেমিফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে গেছে নেদারল্যান্ডস, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলাও এখন কঠিন তাদের।
পুনের ছোট মাঠ ও মোটামুটি ব্যাটিং–সহায়ক উইকেটে টসে জিতে ব্যাটিং নেয় ইংল্যান্ড, জনি বেয়ারস্টো আরেকবার ব্যর্থ হলেও ইংল্যান্ডের শুরুটা দারুণ হয় ডেভিড ম্যালানের ৭৪ বলে ৮৭ রানের ঝোড়ো ইনিংসে। ২১তম ওভারে ১ উইকেটে ১৩৩ রান ছিল তাদের। কিন্তু এর আগে রিভার্স র্যাম্প শটে চার মারা জো রুট আবার সেটির চেষ্টায় বোল্ড হলে পথ হারাতে শুরু করে ইংল্যান্ড। সে সময় ১৫ ওভারে ৫৯ রান তুলতে ৫ উইকেট হারায় তারা। ব্যাটিংয়ে দুঃসময় থেকে বেরোতে পারেননি জস বাটলার এদিনও, ১১ বলে ৫ রান করেই তুলে মারতে গিয়ে আউট হন ইংল্যান্ড অধিনায়ক।
কিন্তু একদিকে ধস নামলেও অন্য পাশে অটল ছিলেন বেন স্টোকস, যদিও ভাগ্যের সহায়তা পান তিনি। ৪১ রানে তাঁর কঠিন ক্যাচ ছাড়েন আরিয়ান দত্ত, পরে নেদারল্যান্ডসের রিভিউ থেকেও রক্ষা পান। ৫৮ রানে অর্ধশতক পাওয়া স্টোকস পরের ৫০ রান তোলেন মাত্র ২০ বলেই। বিশ্বকাপে স্টোকসের এটি প্রথম শতক, ম্যাচের পরিপ্রেক্ষিতে বেশ গুরুত্বপূর্ণও। তাঁকে দারুণ সঙ্গ দেন ক্রিস ওকস, দুজনের সপ্তম উইকেট জুটিতে ৮১ বলে ওঠে ১২৯ রান। ওকস করেন ৪৫ বলে ৫১ রান।
স্টোকস তাঁর ইনিংসে ৬টি চারের সঙ্গে মারেন ৬টি ছক্কা, ইনিংসের ২ বল বাকি থাকতে আউট হন নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে। কিন্তু একসময় ৩০০-এর বেশ নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় থাকা ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন ৩৩৯ রান পর্যন্ত, শেষ ১০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ১২৪ রান। ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোতে বেশ ভালো নিয়ন্ত্রণ নিলেও শুরু ও শেষে গুবলেট পাকায় নেদারল্যান্ডস। লোগান ফন বিক একাই দেন ১০টি ওয়াইড, সেটিই বলে দেয় ডাচদের এলোমেলো বোলিংয়ের কিছুটা।
রান তাড়ায় ক্রিস ওকস ও ডেভিড উইলির সামনে প্রথম পাওয়ারপ্লেতে টিকে থাকার কাজটিও করতে পারেনি নেদারল্যান্ডস। ২৩ রান তুলতেই ২ উইকেট হারায় তারা। ভাগ্যকে পাশে পাওয়া সিব্র্যান্ড এঙ্গেলব্রেখট ও ওয়েসলি বারেসির জুটিটা একটু বড় হচ্ছিল, সেটি ভাঙে বারেসির রানআউটে। এ নিয়ে বিশ্বকাপে ১২টি রানআউট হলো ডাচদের, বাকি ৯টি দল মিলে এ সংখ্যা যেখানে ২১।
এঙ্গেলব্রেখট ও বাস ডি লিডি দ্রুত ফেরার পর তেজা নিদামানুরু ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস অপেক্ষায় রাখেন ইংল্যান্ডকে। নিদামানুরু ৩টি ছক্কায় ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করেছিলেন। কিন্তু একদিকে তাঁকে রেখে গুটিয়ে যায় নেদারল্যান্ডস, ১৬ রানেই শেষ ৫ উইকেট হারায় তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩৯/৯ (স্টোকস ১০৮, ম্যালান ৮৭, ওকস ৫১; ডি লিডি ৩/৭৪, আরিয়ান ২/৬৭, ফন বিক ২/৮৮)
নেদারল্যান্ডস: ৩৭.২ ওভারে ১৭৯ (নিদামানুরু ৪১*, এডওয়ার্ডস ৩৮, বারেসি ৩৭; মঈন ৩/৪২, রশিদ ৩/৫৪, উইলি ২/১৯)
ফল: ইংল্যান্ড ১৬০ রানে জয়ী