স্বর্ণা আক্তার নিয়েছেন ৫ উইকেট, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ
স্বর্ণা আক্তার নিয়েছেন ৫ উইকেট, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে বাংলাদেশ

স্বর্ণার ৫ উইকেট, ১১ বছর পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারাল বাংলাদেশ

মুর্শিদা খাতুনের অর্ধশতক, নিগার সুলতানার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ের পর স্বর্ণা আক্তারের ৫ উইকেটে বেনোনিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে স্মরণীয় জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেওয়া ১৫০ রানের লক্ষ্যে ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৩৬ রান তুলতে পেরেছে স্বাগতিকেরা। ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিজেদের প্রথম ম্যাচে জয় পেলেও তার পরের ১০ ম্যাচে জয়শূন্য ছিল বাংলাদেশ। ১২তম ম্যাচে এল দ্বিতীয় জয়। যে কোনো সংস্করণেও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের এটি প্রথম জয়।

টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া বাংলাদেশকে ভালো শুরু এনে দেন শামীমা সুলতানা ও মুর্শিদা খাতুন। উদ্বোধনী জুটিতে দুজন তোলেন ৪৪ রান, যার মধ্যে পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে আসে ৩৫ রান। নন্দুমিসো শাঙ্গাজির বলে শামীমা ক্যাচ তোলার পর সোবহানা মোস্তারিকে নিয়ে মুর্শিদা যোগ করেন আরও ৩৯ রান। ১৭ বলে ১৬ রান করে সোবহানা এলবিডব্লু হয়ে ফিরলে ভাঙে সে জুটি, তবে বাংলাদেশ পায় শক্ত ভিত।

তাতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে টানেন মুর্শিদা, এবার সঙ্গে পান অধিনায়ক নিগার সুলতানাকে। নিগার করেন বুদ্ধিদীপ্ত ও ঝোড়ো ব্যাটিং, ২১ বলে ৩৪ রানের ইনিংসে মারেন ৬টি চার। মুর্শিদা ক্যারিয়ারে চতুর্থ অর্ধশতক পূর্ণ করেন ৫১ বলে। নিগারের সঙ্গে তাঁর অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৪২ বলেই আসে ৬৬ রান, বাংলাদেশ পায় নিজেদের ইতিহাসের পঞ্চম সর্বোচ্চ সংগ্রহ। মুর্শিদা ইনিংসে ৬টি চারের সঙ্গে মারেন ১টি ছক্কা।

মুর্শিদা খাতুনের সঙ্গে নিগারের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে আসে ৪২ বলে ৬৬ রান

আনিকা বোশ ও টাজমিন ব্রিটসের উদ্বোধনী জুটি দক্ষিণ আফ্রিকাকে এনে দেয় আরও ভালো শুরু, পাওয়ারপ্লেতেই ওঠে ৫৪ রান। স্পিননির্ভর বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ সহজেই ভাঙতে পারেনি সে জুটি, ২ ওভারের পর আর বোলিং করেননি নিজের বলে ফিল্ডিং করতে গিয়ে পায়ে চোট পাওয়া মারুফা আক্তারও।

বাংলাদেশকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দেন রাবেয়া খান, তাঁর বলে লং অনে ক্যাচ তোলেন ২৬ বলে ৩০ রান করা অধিনায়ক ব্রিটস। দ্বিতীয় উইকেটটিও আসে পরের ওভারেই, এবার ফাহিমার শিকার আনেরি ডের্কসেন। সে সময় ৭ বলের মধ্যে ৩ রান তুলতে স্বাগতিকেরা হারায় ২ উইকেট। সুনে লুস ও বোশের জুটি অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে আশা দেয় ঠিকই। ১৪ ওভার শেষে দুই দলই ছিল একই অবস্থায়—সে সময় দুই দলেরই স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৯০ রান।

তবে উইকেট হারানোর আগে-পরে কমে আসে দক্ষিণ আফ্রিকার রানের গতি। স্বর্ণার বলে লুসের উইকেটে আরও পিছিয়ে পড়ে তারা। তবে ১৬তম ওভারে ফাহিমার শেষ ২ বলে টানা ২ চার মেরে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রয়োজনীয় রানকে নাগালের মধ্যে রাখেন বোশ।

সে চিত্রটা বদলে যায় স্বর্ণার করা ১৮তম ওভারে। সে ওভারে ৪৯ বলে ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৬৭ রান করা বোশের পর শাঙ্গাজিকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ‘ফেবারিট’ বানিয়ে দেন স্বর্ণা। ১৯তম ওভারে মার্ক্সের উইকেট নেওয়ার সঙ্গে নাহিদা দেন মাত্র ২ রান, ফলে শেষ ওভারে স্বর্ণার আটকানোর জন্য থাকে ২৩ রান।

প্রথম ওভারে ডেলমি টাকার চার মারলেও স্বর্ণা ঘুরে দাঁড়ান দারুণভাবে। তৃতীয় ও চতুর্থ বলে মিকি ডি রিডার ও মাসাবাতা ক্লাসকে ফিরিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট নেন ১৬ বছর বয়সী লেগ স্পিনার। জাহানারা আলম, পান্না ঘোষ ও নাহিদার পর চতুর্থ বাংলাদেশি বোলার হিসেবে মেয়েদের টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট নিলেন তিনি। আর তাতেই আসে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়।