ভারত–পাকিস্তানের লড়াই এখন মাঠের বাইরে
ভারত–পাকিস্তানের লড়াই এখন মাঠের বাইরে

ভারত ও পাকিস্তানে টুর্নামেন্ট আয়োজন স্থগিত করতে বললেন রশিদ লতিফ

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণ ঘিরে আবারও মুখোমুখি অবস্থানে ভারত–পাকিস্তান। ভারত সরকার পাকিস্তানে দল পাঠাতে রাজি নয়। তা জানার পর পাকিস্তান ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে ম্যাচ না খেলার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

মাঝখানে অনিশ্চয়তায় পড়ে যাচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, যা আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারিতে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এখনো সূচি চূড়ান্ত করা যায়নি। পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রশিদ লতিফ মনে করেন, আইসিসির উচিত ভারত ও পাকিস্তানকে কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে না দেওয়া, যতক্ষণ পর্যন্ত দুই দেশ নিজেদের মধ্যে ঝামেলা না মেটায়।

ভারত–পাকিস্তানের মধ্যকার চলমান পরিস্থিতি জটিলতর হয়েছে ভারতের অবস্থানে। ২০০৮ সালের পর পাকিস্তানে যায়নি ভারত ক্রিকেট দল। গত বছর পাকিস্তান এশিয়া কাপের আয়োজক হলেও ভারতের চাওয়ায় টুর্নামেন্টটি শেষ পর্যন্ত হাইব্রিড মডেলে শ্রীলঙ্কায় আয়োজন করা হয়।

এবার ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ক্ষেত্রেও পাকিস্তানে দল না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত সরকার। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) সরকারি সিদ্ধান্তের বিষয়টি আইসিসিকে জানিয়েছে। তা আইসিসির কাছ থেকে জানার পর ক্ষোভে ফেটে পড়েছে পাকিস্তানের ক্রিকেটাঙ্গন। ভারতকে ছাড়াই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন এবং ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে কোনো প্রতিযোগিতায় না খেলার কথা ভাবছে পিসিবি ও দেশটির সরকার—এমন খবরও এসেছে সংবাদমাধ্যমে।

ভারত ক্রমাগতভাবে পাকিস্তানে খেলতে অস্বীকৃতি জানানোর ঘটনায় দেশটির সঙ্গে খেলা বন্ধ করে দেওয়ার পক্ষে রশিদ লতিফও। সাবেক এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান বার্তা সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, ‘পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে খেলা বন্ধ করে দেওয়ার বড় সম্ভাবনা আছে। আমার যদি ক্ষমতা থাকত, আমিই এই পদক্ষেপ নিতাম। এ জন্য আমি কাউকে দোষারোপ করতাম না। তুমি যদি (পাকিস্তানে) খেলতে না চাও, তাহলে আমাদের সঙ্গে খেলোই না। আমি সিদ্ধান্ত নেওয়ার জায়গায় থাকলে এটাই নিতাম। বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে লড়তাম।’

পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার রশিদ লতিফ।

২০২৩ সালের অক্টোবর–নভেম্বরে ওয়ানডে বিশ্বকাপ হয়েছিল ভারতে। আয়োজক স্বত্ব অনুযায়ী পাকিস্তান এশিয়া কাপ পুরোপুরিভাবে আয়োজন করতে না পারলেও ভারতে বিশ্বকাপ খেলতে গেছে। পিসিবির আশা ছিল, এতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিয়ে ভারত অবস্থান বদলাবে। ভবিষ্যতে ভারত যেসব টুর্নামেন্ট আয়োজন করবে (২০২৫ নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ, ২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ২০২৯ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, ২০৩১ ওয়ানডে বিশ্বকাপ), সেসবেও পাকিস্তান কোনো ধরনের শর্ত ছাড়াই অংশগ্রহণ করবে।

কিন্তু পাকিস্তানে না খেলার বিষয়ে ভারতের অনড় অবস্থানে দুই দেশের স্বত্ব পাওয়া টুর্নামেন্টই এখন অনিশ্চয়তায় পড়ার মুখে। পাকিস্তানের হয়ে ৩৭ টেস্ট ও ১৬৬ ওয়ানডে খেলা লতিফ ভবিষ্যতের অচলাবস্থা কাটাতে আইসিসিকে একটি পরামর্শ দিয়েছেন, ‘আমার মতে, ভারত–পাকিস্তান দুই দেশের আয়োজন স্বত্ব স্থগিত করা উচিত। যত দিন না তাদের ঝামেলা মেটে, একটা সমাধান না আসে।’

বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আইসিসিকে আরও কঠোর হওয়ার উপায়ও বলে দিয়েছেন লতিফ, ‘ভারত–পাকিস্তানকে নিষিদ্ধ করা হয় না কেন? কারণ, আইসিসিতে তাদের অবস্থান বেশি।’

পুরো পরিস্থিতির জন্য বিসিসিআইকে দায়ী করে লতিফ যোগ করেন, ‘প্রথমবারের মতো বলছি, দায়টা এখানে বিসিসিআইয়ের। তারা যে কারণ দেখায়, সেটা খুবই দুর্বল। আপনাদের নিরাপত্তা নিয়ে আপত্তি থাকলে সেটা বলুন। আইসিসির নিরাপত্তা দল পাকিস্তানে এসে টুর্নামেন্ট নিয়ে সবুজ সংকেত দিয়ে গেছে। আপনাদের আপত্তি থাকলে ওদের বলতে পারতেন।’