মিরপুরের স্পিন-সহায়ক উইকেটে বাংলাদেশ পেসাররা পাকিস্তানের মাটিতে ইংল্যান্ডের পেসারদের মানসিকতা অনুসরণ করুক, এমন চান দলের পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড। আগামীকাল থেকে ভারতের বিপক্ষে শুরু দ্বিতীয় টেস্টের উইকেটে পেসাররা আরও বেশি আক্রমণাত্মক বোলিং করতে পারেন বলেও মনে করেন তিনি।
মিরপুরে সবশেষ যে টেস্ট হয়েছিল, প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ৯টি উইকেটই নিয়েছিলেন শ্রীলঙ্কার দুই পেসার। শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এটি ব্যতিক্রমী ঘটনাই। ১৪ বছরের মধ্যে ইনিংসে পেসারদের সর্বোচ্চ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড ছিল সেটি।
মিরপুরের উইকেট বরাবরই স্পিন-সহায়ক, পেসারদের কাজটা তাই কঠিনই।
পাকিস্তানের ফ্ল্যাট উইকেটে ইংল্যান্ডের ওলি রবিনসন, জেমস অ্যান্ডারসন, মার্ক উডরা ঝলক দেখিয়েছেন। জো রুটের পরামর্শে শর্ট বলের অস্ত্র কাজে লাগিয়েছিল ইংল্যান্ড।
বিশেষ করে প্রথম টেস্টে রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ইংল্যান্ডকে দারুণ এক জয় এনে দিতে বড় ভূমিকা ছিল রবিনসন-অ্যান্ডারসনের বোলিংয়ের।
মিরপুর টেস্টে তাঁর পেসারদেরও এমন মানসিকতা তৈরি করতে বলছেন ডোনাল্ড। আজ সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘আমি সবসময়ই পাকিস্তানে ইংল্যান্ড পেসারদের মানসিকতার উদাহরণ দিয়েছি। কীভাবে তাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন। তিন স্পিনার থাকলেও আপনার একটু উন্মুক্ত হওয়ার সুযোগ থাকে, পেসার হিসেবে আপনি ব্যয়বহুল বোলিংও করতে পারেন। আপনি শর্ট বা ফুললেংথে দীর্ঘ সময় বোলিং করতে পারেন, অথবা ধরুন ৪ ওভারে সব কিছু নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারেন।’
চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে ভারতের দুই পেসার মোহাম্মদ সিরাজ ও উমেশ যাদবের বোলিংয়ের উদাহরণও টেনেছেন তিনি, ‘আমার মনে হয় শেষ টেস্ট থেকে এ শিক্ষাই পেয়েছি। সিরাজ ও উমেশ যাদব যেভাবে করেছে। তারা শর্ট করেছে, আক্রমণাত্মক করেছে, ক্যাচিং পজিশনে ফিল্ডাররা ছিল। বল একটু রিভার্সও করছিল। স্পিনারদের কাছ থেকে কী করবেন, সেটি আপনি জানেন। পেসারদের কাছ থেকে আমি আরেকটু আক্রমণাত্মক মানসিকতা চাই। এমন পিচে ডাক করা সহজ করা নয়। ফলে গতি থাকলে আপনি আরেকটু ব্যয়বহুল, আরেকটু আগ্রাসী হতে পারেন।’
মিরপুর টেস্টে তাসকিন আহমেদ ফিরছেন, জানিয়েছেন ডোনাল্ড। চোটের কারণে এ টেস্টে খেলা হচ্ছে না ইবাদত হোসেনের। ফলে তাসকিনের সঙ্গে থাকবেন খালেদ আহমেদই। তরুণ এ পেসারের বোলিং নিয়ে ডোনাল্ডের ভাবনা, ‘খালেদের জীবনীশক্তি দারুণ। শক্ত একটা ছেলে, যে শিখতে চায়। প্রতিদিনই জানতে চায়। আমি তাকে দোষ দিতে পারি না, এ দলের কাছে আমি এটিই চাই। সবাই নিজেদের বোঝা ঝেড়ে ফেলুক, এটিই চাই, যাতে খোলামেলা মন নিয়ে উপভোগ করতে পারে, আগ্রাসী হতে পারে। খালেদ যদি ডাউন দ্য লেগের বলেও কোহলিকে আউট করে, আমার কাছে সেটিই দুর্দান্ত বল। আমি খালেদকে নিয়ে চিন্তা করছি না। সে শিখতে চায়, সফল হতে চায়।’
পেস বোলিং কোচ হিসেবে পেসারদের কাছে বাড়তি চাওয়া থাকাটা খুবই স্বাভাবিক ডোনাল্ডের জন্য। তবে তিনিও জানেন, কাজটা শুধু বোলারদের করলেই হবে না। চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ফিল্ডিং যথেষ্টই ভুগিয়েছে বাংলাদেশকে।
এ টেস্টে অমন ভুল আর করা যাবে না, ডোনাল্ড মনে করিয়ে দিয়েছেন সেটিও, ‘বোলিং লাইনআপ হিসেবে আমরা সুযোগ তৈরি করেছিলাম। রান রেট ৩-এর আশপাশে রেখেছিলাম। চট্টগ্রামে তেমন কিছু ছাড়াই দীর্ঘ সময় খেলা হবে, এটা জানা কথা। ফলে যখনই সুযোগ আসবে, নিতে হবে। ক্যাচ ফেলা, কে ফেলল মনে নেই, ইবাদত… এমন ভুল আসলে করা যাবে না। চাপ তৈরি করতে অনেক সময় লাগে, ধৈর্য লাগে, একাগ্রতা লাগে, সৃষ্টিশীল হতে হয়। যখন জুটি বড় হয়, কিছুই পক্ষে আসে না তখন। ফলে অমন সুযোগ এলে নিতে হবে। টেস্ট ক্রিকেট এ কারণেই এমন নিষ্ঠুর। এখানে আমাদের উন্নতি করতে হবে।’