অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারকে ‘সিরিয়াল উইনার’ বা ক্রমিক বিজয়ী উল্লেখ করে সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন তাঁকে ইংল্যান্ডের সীমিত ওভার কোচ করার পক্ষে কথা বলেছেন। সম্প্রতি ইংল্যান্ডের সাদা বলের কোচের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ম্যাথু মট।
২০০৭ সালে সহকারী কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০০৯ সালে ইংল্যান্ডের প্রধান কোচ হন জিম্বাবুয়ের সাবেক উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান ফ্লাওয়ার। তাঁর সময়ে অ্যাশেজের পাশাপাশি প্রথমবারের মতো কোনো বিশ্বকাপ জেতে ইংল্যান্ড—২০১০ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। পরে টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষেও আসে দলটি।
২০১৪ সালে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া ফ্লাওয়ার এখন ইংল্যান্ডের ১০০ বলের টুর্নামেন্ট দ্য হানড্রেডে ট্রেন্ট রকেটসের দায়িত্বে আছেন। তাঁকেই ইংল্যান্ডের পরবর্তী কোচ হিসেবে উপযুক্ত মনে হচ্ছে নাসেরের।
স্কাই স্পোর্টসের ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করা নাসের সম্প্রতি পিএ নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন, ‘বেশ কয়েকজন ভালো প্রার্থী আছে। কুমার সাঙ্গাকারা আছে, অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার আছে—যে একজন “সিরিয়াল উইনার”। সেটা ইংল্যান্ডে এবং ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে।’
এর আগে ভিন্ন একটা সময়ে কাজ করে যাওয়া কারও কাছে ফিরে যাওয়া উচিত হবে কি না, সে প্রসঙ্গে নাসের বলেছেন, ‘কেউ বলবে এটা পশ্চাৎমুখিতা, (তারা বলবে)—ফিরে যেও না, একজন সাবেক ইংল্যান্ড কোচের কাছে ফিরে যেও না। তবে আমার মনে হয় অ্যান্ডি এগিয়েছে অনেকটাই।’
ফ্লাওয়ারের সময়ে সাবেক অধিনায়ক কেভিন পিটারসেনের আইপিএলে খেলার ব্যাপারে বেশ আলোচনা ছিল। এ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছিল। তবে পরবর্তী সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে নিজেই কাজ করেছেন ফ্লাওয়ার, প্রায় সব জায়গায় সফলও হয়েছেন। সেদিকে ফিরে তাকিয়ে নাসের বলেন, ‘অ্যান্ডি ফ্র্যাঞ্চাইজি এবং আইপিএল–বিরোধী ছিল, তবে সেটি অনেক আগে। এখন সে বিশ্বজুড়ে কোচিং করিয়েছে, ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর বেশির ভাগ জিতেছে এবং বেশ ভালো করেছে।’
নাসেরের মতে, ‘সে দারুণ একজন কোচ। তার সিভির (জীবনবৃত্তান্ত) দিকে তাকালেই বুঝবেন। রব কি যদি অ্যান্ডি ফ্লাওয়ারের সিভিটা বের করে দেখে, তাহলে এর চেয়ে ভালো বিকল্প হয় না। অবশ্য অ্যান্ডি যদি (ইংল্যান্ডকে কোচিং) করাতে চায়।’
ইংল্যান্ডের সাবেক এ অধিনায়কের মতে, এখন আসলে সম্ভাব্য কোচ বের করার ব্যাপার নয়। বরং এমন একজনকে খুঁজে বের করা, যে কাজটি করতে চান।
দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মধ্যে ইংল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতালেও সর্বশেষ দুটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের ব্যর্থতার পর মূলত সরে যেতে হয় মটকে। পুরোটা সময় তাঁর অধিনায়ক হিসেবে ছিলেন জস বাটলার। স্বাভাবিকভাবেই বাটলারের অধিনায়কত্বও পড়েছে সমালোচনার মুখে। বিশেষ করে এউইন মরগানের মতো একজনের জায়গায় দায়িত্ব নিলে প্রত্যাশার চাপও বেশি থাকা স্বাভাবিক।
আপাতত বাটলারকে অধিনায়ক হিসেবে রেখে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে উপযুক্ত মনে করেন নাসের, ‘জস সদা তৎপর এবং বুদ্ধিমান একটা ছেলে। সে জানে, তারা হারতে থাকলে এরপর তাকে চলে যেতে হবে। আমার মনে হয় অধিনায়ক-কোচের যে বৈচিত্র্য, সেটিই বাটলার ও মটের ক্ষেত্রে সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।’
সেটি কীভাবে, এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেছেন, ‘বাটলার এত নরম সুরে কথা বলে, শান্তশিষ্ট একজন। ফলে আপনার হয়তো আরেকটি বৈচিত্র্যময় এক ব্যক্তিত্বকে (প্রধান কোচ হিসেবে) দরকার। (এউইন) মরগান (ট্রেভর) বেইলিসের সঙ্গে কাজ করেছে, কারণ মরগান প্রভাববিস্তারী এবং বৈচিত্র্যময় একজন অধিনায়ক ছিল। আমার মনে হয়, এই ইংল্যান্ড দলকে সামনে এগিয়ে নিতে তাদের এমন একজন কোচকে লাগবে, যে আরেকটু বেশি সক্রিয় হবে।’