পারভেজ হোসেনের টুকটাক উইকেটকিপিংয়ের অভ্যাস আছে। ওপেনিং ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি মাঝেমধ্যে তাঁকে উইকেটের পেছনে গ্লাভস হাতে দাঁড়াতে দেখা যায়। কাল পারভেজের সেই দক্ষতাকেও আরেকটু ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলেন সহকারী কোচ নিক পোথাস।
ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি উইকেটকিপিংয়েরও উন্নতি এলে ক্ষতি কী! যেই অবস্থা, বাংলাদেশ দলের একাদশে জায়গা করে নিতে হলে বাড়তি কিছু না করলেই নয়। আর আপনি যদি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান হন, তাহলে তো কথাই নেই।
আফিফ হোসেনের কথাই ধরুন। বাঁহাতি-আধিক্যে একাদশে জায়গা হচ্ছে না তাঁর। ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় লোয়ার মিডল অর্ডারে খেললেও আফিফের ব্যক্তিগত পছন্দ টপ অর্ডার।
টপ অর্ডার আর কার কার পছন্দ? পারভেজের কথা তো বলাই হলো। নাজমুল হোসেন, সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান ও সাকিব আল হাসান। জাতীয় দলের বাইরে থাকা মোহাম্মদ নাঈম শেখ, জাকির হাসানেরও নাম আসবে। প্রত্যেকেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কাকে রেখে কাকে টপ অর্ডারে খেলানো হবে—এ প্রশ্নের উত্তরটা প্রতিটি বড় টুর্নামেন্টের আগেই বাংলাদেশ দলকে খুঁজতে হয়।
সাকিব ২০১৯ সালে এক বছরের অন্য নিষিদ্ধ হওয়ার আগে সাদা বলের ক্রিকেটে ৩ নম্বর ব্যাটসম্যানের জায়গায়টা নিজের করে নিয়েছিলেন। এক বছরের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ক্রিকেটে ফেরার পর সে জায়গাটা তিনি নাজমুলের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। তিন সংস্করণের ক্রিকেটে ধারাবাহিকভাবে রান করে সে জায়গাটা নাজমুল নিজের করে নিয়েছেন।
তামিম ইকবাল না থাকায় ওপেনিংয়েও নতুন যে কয়জনকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তাঁরাও বাঁহাতি। গত বছরের ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরে সৌম্য সরকারকে টপ অর্ডারে ফিরিয়ে এনে বাঁহাতিদের প্রতিযোগিতাটা আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। শ্রীলঙ্কা ও জিম্বাবুয়ে সিরিজে সৌম্যের চোটের সুযোগ কাজে লাগিয়ে রান করেছেন তানজিদও।
বাঁহাতিদের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকলেও টপ অর্ডারের একমাত্র ডানহাতি লিটন দাসের প্রতিদ্বন্দ্বী কেউ নেই। যে কারণে তিন সংস্করণের ক্রিকেটে ছন্দে না থাকলেও একের পর এক সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন তিনি। তিনে নাজমুল থাকায় টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দুজন বাঁহাতি ওপেনার খেলানোর মানেই প্রতিপক্ষের বোলিং পরিকল্পনাটা সহজ করে দেওয়া। তাই ওপেনিংয়ে লিটনের ফর্মে ফেরার ওপর বাংলাদেশের ব্যাটিং পরিকল্পনার অনেক কিছুই নির্ভর করছে।
কাল দলের সহকারী কোচ নিক পোথাসের কথায়ও সে সুর খুঁজে পাওয়া গেল। রানে না থাকা লিটন দাসকে নিয়ে পোথাসের কথা, ‘লিটন আমাদের অনেক কিছু দিচ্ছে। সে বিশ্বমানের ক্রিকেটার। সে ফিল্ডিংয়ে যা দিচ্ছে, সিনিয়র খেলোয়াড় হিসেবে যে ভূমিকা রাখছে—সবই। আপনারা যা দেখছেন, তার চেয়ে অনেক বেশি সে দলে অবদান রাখছে।’
লিটনের মতোই গুরুত্বপূর্ণ আরেক ডানহাতি তাওহিদ হৃদয়ও। ছন্দে থাকা এই ব্যাটসম্যানের জায়গা বদলানোর কোনো সুযোগ নেই। রানে আছেন মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলী, রিশাদ হোসেন ও শেখ মেহেদী হাসানও।
প্রশ্ন হচ্ছে, জিম্বাবুয়ে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচ দিয়ে দলে ফিরলে সাকিবের জায়গা কোথায় হবে? শোনা যাচ্ছে, অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার আবারও ফিরতে পারেন প্রিয় ৩ নম্বর পজিশনে। তাঁকে জায়গা করে নিতে নাজমুলকে উদ্বোধনে দেখা যেতে পারে।
নির্বাচক হান্নান সরকার অবশ্য এখনই এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাইলেন না, ‘আজ (গতকাল) আমরা পরের দুই ম্যাচের দল নিয়ে বসব। তখন নিশ্চয়ই আলাপ হবে।’
শেষ দুই ম্যাচে বাঁহাতি-জট খুলবে তো?