আহমেদাবাদের গ্যালারি সেদিন প্রস্তুত ছিল। লাখো দর্শকের নীল সমুদ্র, ক্ষণে ক্ষণে সেই সমুদ্রে গর্জন দিয়ে জানান দিচ্ছিল, একটা বিশ্বকাপের জন্য কতটা অপেক্ষা করছিলেন ভারতের মানুষ।
ফাইনালের পথে একের পর এক প্রতিপক্ষকে গুঁড়িয়ে আসা রোহিত শর্মাদের হাতে ট্রফি দেখতে মাঠে উপস্থিত স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও। তবে মোদি থেকে শুরু করে গ্যালারিতে থাকা একজন খুদে সমর্থকও সেদিন হাসিমুখে ফিরতে পারেনি। শুধু কি গ্যালারির মানুষ নাকি! ভারতের ফাইনাল হারে টিভির পর্দার সামনেও তো কেঁদেছেন ভারতের কোটি মানুষ।
গত বছরের এই দিনেই ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনালে হারে রোহিত শর্মার দল। ভারতের করা ২৪০ রান ৭ ওভার আর ৬ উইকেট হাতে রেখেই তাড়া করে অস্ট্রেলিয়া।
অথচ অস্ট্রেলিয়া সেদিন ৪৭ রান করতেই হারায় ৩ উইকেট। ভারতীয় সমর্থকেরা হয়তো তখন আশা দেখছিলেন। তাঁদের আশাভঙ্গের জন্য একজন ট্রাভিস হেডই যথেষ্ট ছিল। ভারতীয় বোলারদের বেধড়ক পিটিয়ে হেড সেদিন খেলেন ১২০ বলে ১৩৭ রানের ইনিংস। ম্যাচের ফল এই এক ইনিংসেই নির্ধারিত হয়ে যায়।
ফাইনালে হারানোর আগে আরও একবার পুরো গ্যালারিকে স্তব্ধ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেটা ম্যাচের ২৯তম ওভারে। এই ওভারে যাওয়ার আগে ফাইনালের আগে সংবাদ সম্মেলনে ঘুরে আসা যাক।
ফাইনালের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক প্যাট কামিন্সকে ভারতের দর্শক নিয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে বলেছিলেন, দর্শকের গর্জন তিনি থামিয়ে দিতে চান। যেমন কথা তেমন কাজ। কোহলিকে বোল্ড করে ২৯তম ওভারে নিস্তব্ধতা নামিয়ে আনেন কামিন্স। তাঁর শর্ট লেংথের বল আলতো করে খেলতে চেয়েছিলেন বিরাট কোহলি। তবে বল যে বেশি উঠবে, ভাবতে পারেননি। ব্যাটের কানায় লেগে বল গিয়ে স্টাম্প ভেঙে দেয়। ৬৩ বলে ৫৪ রান করা কোহলির অমন আউটে স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো গ্যালারি।
ভারতের কষ্ট অবশ্য কিছুটা হলেও এখন কমার কথা। কারণ, সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত। তবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ দিয়ে কি ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ ফাইনাল হারের কষ্ট ভোলা যায়!
এক বছর পর ভারত দল এখন অস্ট্রেলিয়াতেই আছে। ২২ নভেম্বর শুরু হবে বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফি। এই সিরিজের প্রতিটি টেস্টই একেকটা ফাইনাল। এখন দেখা যাক, সম্মানের এই ফাইনালে জয়টা কোন দলের হয়!