তামিম–সাকিবকে আবার একসঙ্গে জাতীয় দলে দেখা যাবে?
তামিম–সাকিবকে আবার একসঙ্গে জাতীয় দলে দেখা যাবে?

তামিম সত্যিই ফিরবেন তো, সাকিবের খবর‍ নেই

আর মাত্র দুই দিন বাকি দল ঘোষণার। কিন্তু নির্বাচকেরা এখনো জানেন না চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে তাঁরা দুই অভিজ্ঞ তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবালকে রাখতে পারবেন কি না। নির্বাচকেরা দুজনকেই দলে চাইলেও দুই রকম কারণে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না।

তামিমের বিষয়টি তো গত পরশুই জানা গেছে। গ্র্যান্ড সিলেট হোটেলে তিন নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন, আবদুর রাজ্জাক ও হান্নান সরকারের সঙ্গে আলোচনায় তামিম শুরুতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাবে দেখালেও শেষে দু–এক দিন সময় নিয়েছেন। পরিবার ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সঙ্গে কথা বলে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাবেন। যদিও জানা গেছে, তামিমের মত বদলানোর সম্ভাবনা কম। আবারও হয়তো ‘না’ই বলবেন তিনি নির্বাচকদের।

প্রায় ১৫ মাস আগে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা তামিম যদি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দিয়ে দলে ফিরে কোনো কারণে ভালো করতে না পারেন, বাংলাদেশের বাস্তবতায় সমালোচনার সব তিরের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হবেন তিনিই। সাধারণ ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যম, এমনকি সতীর্থ ক্রিকেটারদের মনোযোগও তাঁকে ঘিরেই বেশি থাকবে। এত দিন পর আইসিসির টুর্নামেন্টের মতো বড় আসরে ফিরে সেই চাপ কতটা সামলাতে পারবেন, তা তামিমের চিন্তাতেও আছে বলে জানা গেছে। ক্যারিয়ারের পড়ন্ত বেলায় এত বড় সিদ্ধান্ত বদল করাটা তাঁর উচিত হবে কি না, তা নিয়ে খোদ তামিম–ঘনিষ্ঠদের মধ্যেই প্রশ্ন আছে।

তামিম–সাকিব যখন জুটি বেঁধে ব্যাটিংয়ে।

সাকিবের বিষয়টি অবশ্য সাকিবের হাতে নেই। গত ২ ডিসেম্বর বার্মিংহামের অদূরে লাফবরো ইউনিভার্সিটিতে বোলিং অ্যাকশনের পরীক্ষা দিয়ে উতরাতে পারেননি। সর্বশেষ ২১ ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে দেওয়া পরীক্ষায়ও ফলাফল নেতিবাচক এসেছে বলে খবর। যদিও এ ব্যাপারে বিসিবি এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানতে পারেনি। বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সাকিব ও ইসিবির উদ্যোগে পরীক্ষাটি হয়েছে। এ নিয়ে চূড়ান্ত কিছু জানালে ইসিবি বা সাকিবই জানাবেন বিসিবিকে।

আইসিসির অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বোলারের অ্যাকশন প্রথমবার অবৈধ ঘোষণার পর দুই বছরের মধ্যে আরেকবার নিষিদ্ধ হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিনি পরের এক বছর বোলিং করতে পারবেন না। এমনকি ওই এক বছরের মধ্যে অ্যাকশন শোধরানোর পরীক্ষাও আর দিতে পারবেন না। আর আইসিসি মনোনীত কোনো সেন্টারে পরীক্ষা দিয়ে অ্যাকশনের বৈধতার ছাড়পত্র না নেওয়া পর্যন্ত সাকিব ঘরোয়া ক্রিকেট ছাড়া অন্য কোথাও বোলিং করতে পারবেন না।

বিসিবির একটি সূত্র অবশ্য জানিয়েছে, চেন্নাইয়ের পরীক্ষায় আসা নেতিবাচক ফলে ‘টেকনিক্যাল এরর’ বা কারিগরি ত্রুটি থেকে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে এই পরীক্ষার ফলাফল ধর্তব্যের মধ্যে আনা হবে না। কিন্তু চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল ঘোষণার আগে নতুন করে পরীক্ষা দেওয়ার সময় নেই বললেই চলে। ১২ জানুয়ারি আইসিসিতে খেলোয়াড় তালিকা পাঠানোর শেষ দিন হলেও ১২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তাতে পরিবর্তন আনা যাবে। কিন্তু বিসিবি চাচ্ছে, কোনো ‘যদি’–‘কিন্তু’ না রেখে যা করার একবারেই করতে।

সাকিব যদি বোলিং করতে না–ই পারেন, নির্বাচকেরা তাঁকে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে দলে নেবেন কি না, সেটা একটা প্রশ্ন। তামিমের মতো তো তিনিও ওয়ানডে থেকে দীর্ঘ বিরতিতে আছেন, সর্বশেষ ওয়ানডে খেলেছেন ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর। অন্য সংস্করণেও সাম্প্রতিক ফর্ম খুব একটা ভালো নয়। ১২ জানুয়ারির মধ্যে তাঁর বোলিং অ্যাকশন নিয়ে কোনো সুখবর এলে তো ভালো, নয়তো দলের সমন্বয়ের কথা ভেবে হলেও হয়তো শুধু ব্যাটসম্যান সাকিবকে দলে রাখতে চাইবেন না নির্বাচকেরা।