বিটাক মোড়ের টিকিট কাউন্টার ফাঁকা। কোনো ভিড় নেই। সকাল সকাল জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এসেও ইংল্যান্ড-বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজের কোনো আমেজ পাওয়া গেল না। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ আগামীকাল এই মাঠে গড়াবে।
ক্রিকেটাররা সে ম্যাচ সামনে রেখে অনুশীলন করছেন। ঐচ্ছিক অনুশীলন হওয়ায় তাসকিন আহমেদ, লিটন দাস, মেহেদী হাসান মিরাজ, আফিফ হোসেনদের মাঠে দেখা গেল না। সাকিব আল হাসান অবশ্য সকাল সকাল মাঠে এসেছেন। সময় নিয়ে বোলিং করেছেন। ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল কিছুক্ষণ ব্যাটিং করেছেন। মুশফিকুর রহিম তাঁর রুটিন মেনে অনুশীলন করেছেন।
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রথম দুটি ম্যাচ হেরে সিরিজ খুইয়েছে বাংলাদেশ। কালকের ম্যাচটা তাই শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। ওয়ানডে সিরিজ থেকে অর্জনের তেমন কিছু নেই বলেই হয়তো দলের মধ্যে ওয়ানডের চেয়ে টি-টোয়েন্টির ব্যস্ততাই বেশি দেখা গেল।
৯ মার্চ এ মাঠেই শুরু হবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। সেটি সামনে রেখেই আজ ওয়ানডে দলের সঙ্গে অনুশীলনে এসেছেন টি-টোয়েন্টি দলের ক্রিকেটাররা। ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি দলের বাইরে থাকা বেশ কয়েকজনও ছিলেন অনুশীলনে। বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে বাংলাদেশের নেটে দেখা গেছে। ছিলেন লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
তবে কোচিং স্টাফের নজর ছিল টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা রনি তালুকদার ও শামীম হোসেনের দিকে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের পাশাপাশি নেটে দুজনের ব্যাটিং দেখছিলেন কোচিং স্টাফের সদস্যরা। শামীমের নেটে বল করছিলেন দুই স্পিনার নাসুম আহমেদ ও প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি দলে ডাক পাওয়া তানভীর ইসলাম। রনির নেটে ছিলেন দুই পেসার শরীফুল ইসলাম ও অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা রেজাউর রহমান।
শামীমের কাছে ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের পরিষ্কার বার্তা, ‘শামীম! ছক্কা অথবা চার, ওকে? কোনো ব্লকিং নেই। শুধু চার-ছয়। এখন থেকে টানা ১৪ বল, এটাই হবে।’ কথাটা শুনতেই যেন শামীমের শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল। নাসুমের আর্ম বলটি প্রায় শুয়ে পড়ে স্কয়ার লেগে ঘুরিয়ে দিলেন এই বাঁহাতি।
প্রতি বল মারার চেষ্টায় শামীমের হাত থেকে বেরিয়ে আসছিল অদ্ভুত কিছু শট। কিছু টাইমিং হচ্ছিল, কিছু টপ এজ হয়ে যাচ্ছিল আকাশে। কিন্তু তাতে কোচিং স্টাফের সদস্যদের কোনো আপত্তি দেখা গেল না। সিডন্স নেটের ওপাশ থেকে বলছিলেন, ‘বাউন্ডারি কোথায় মারা যায় ভাব। মনে রাখবে, শুধু চার-ছক্কা। সুইপ, রিভার্স সুইপ, পুল শট খেল।’
কিছুক্ষণ পর রনিকেও চার-ছক্কার বার্তা দিলেন সিডন্স। উত্তরে রনি জানালেন, তিনি এর মধ্যেই দুটি চার মেরেছেন। সিডন্সের চাহিদা আরও বেশি, ‘শুধু দুটি নয়। আরও মারতে হবে।’
এরপর ডাগআউটে বসে থাকা তামিম ইকবালকে ডাকলেন সিডন্স। রনিকে কিছু কথা বুঝিয়ে দিতে তাঁর দোভাষী দরকার, সে জন্যই তামিমকে ডাকা। এরপর মেরে খেলার বার্তাটা তামিমকে বুঝিয়ে দেওয়ার পর সেটি রনির কানে পৌঁছে দেন ওয়ানডে অধিনায়ক। শরীফুলের করা পরের বলটি স্কুপ করে স্কয়ার লেগে ঠেলে দেন রনি।
টি-টোয়েন্টির কোচিং চলছিল বোলারদেরও। পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড পেসারদের সঙ্গে বলের ফাঁকে ফাঁকে কথা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথও ছিলেন স্পিনারদের পাশে। যেন সবার ভাবনায় শুধু ২০ ওভারের খেলা।