মাহমুদউল্লাহ ফিরেছেন। ফিরেছেন দুর্দান্তভাবে। ‘মূল’ দলে প্রথম ইনিংসে জাকের আলী দেখিয়েছেন, কেন তাঁকে নিয়ে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন এমন কথা বলেন। তবে মাহমুদউল্লাহ ও জাকেরের ইনিংস যথেষ্ট হয়নি প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে জয় এনে দিতে। ২০৭ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ৩ রানে হেরে শুরু করেছে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ৩ ম্যাচ সিরিজে আজ তাই স্বাগতিকদের টিকে থাকার লড়াই। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার হাতছানি সিরিজ জয়ের।
প্রথম আলো লাইভে আপনাকে স্বাগত!
সিলেট স্ট্রাইকার্সের হয়ে ১২ ইনিংসে মাত্র ১৭৫ রান, গড় ১৪, স্ট্রাইক রেট ৯৩। বিপিএলটা নাজমুলের ভালো কাটেনি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে শুরুটা করেছিলেন সময় নিয়ে। কিন্তু ২২ বলে ২০ রান করেই থমকে যান। স্বাভাবিকভাবেই তাঁকে নিয়েই দুশ্চিন্তাটা বেশি। শ্রীলঙ্কা সিরিজ থেকে ব্যাটিং কোচের দায়িত্ব নেওয়া ডেভিড হেম্পের প্রথম চ্যালেঞ্জও নাজমুলকে ছন্দে ফেরানো।
আজ ম্যাচের আগে নেট সেশনে নাজমুলের সঙ্গে হেম্পের ব্যাটিং সেশনে যা দেখলেন মোহাম্মদ জুবাইর, পড়ুন সেটি।
আবার টসে জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। আবার ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কাও বলছেন, শিশিরের কারণে টসে জিতলে একই সিদ্ধান্ত নিতেন তিনিও।
অপরিবর্তিত আছে বাংলাদেশ একাদশ। শ্রীলঙ্কা এনেছে একটি পরিবর্তন। স্পিনার আকিলা দনাঞ্জয়ার জায়গায় দলে এসেছেন পেসার দিলশান মাদুশঙ্কা।
বাংলাদেশ একাদশ
নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন দাস, সৌম্য সরকার, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, মেহেদী হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, রিশাদ হোসেন ও জাকের আলী।
শ্রীলঙ্কা একাদশ
আভিস্কা ফার্নান্ডো, কুশল মেন্ডিস, কামিন্দু মেন্ডিস, সাদিরা সামারাবিক্রমা, চারিত আসালাঙ্কা (অধিনায়ক), অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, দাসুন শানাকা, মহীশ তিকশানা, দিলশান মাদুশঙ্কা, বিনুরা ফার্নান্ডো, মাতিশা পাতিরানা।
ওভার দ্য উইকেট থেকে ডানহাতি আভিস্কা ফার্নান্ডোর বিপক্ষে লেংথ থেকে ভেতরের দিকে বল নিয়েছেন শরীফুল ইসলাম। হাত খোলার সুযোগ দেননি শ্রীলঙ্কা ওপেনারকে। শেষ বলে বের করে নিয়েছিলেন, তাতে খোঁচা দিলেও অবশ্য ব্যাটে লাগেনি। শরীফুল শুরু করেছেন মেডেন দিয়ে।
১ ওভারে ০/০
শরীফুলের মতো আঁটসাঁট শুরু তাসকিনেরও। তাঁর তৃতীয় বলে গিয়ে প্রথম রান নিতে পেরেছেন কুশল মেন্ডিস, থার্ডম্যানে সিঙ্গেল থেকে। এরপর হয়েছেন সফল।
আগের ওভারে শরীফুলের কাছ থেকে রান নিতে না পারা আভিস্কা এবার লেংথ থেকে তুলে মারতে গিয়েছিলেন তাসকিনকে। তবে সুবিধা করতে পারেননি। কানায় লেগে উঠেছে বল, নিজেই ক্যাচ নেওয়ার যথেষ্ট সময় পেয়েছেন তাসকিন।
আভিস্কা ৭ বলে ০, শ্রীলঙ্কা ১/১!
নেমেই অবশ্য চার মেরেছেন কামিন্দু মেন্ডিস। লেংথ ঠিক থাকলেও অফ স্টাম্পের বাইরে একটু জায়গা দিয়েছিলেন তাসকিন।
২ ওভারে ৫/১।
নিশ্চিত চার আটকাতে গিয়ে হাতে চোট পেয়েছেন শরীফুল। বোলিং চালিয়ে যেতে অবশ্য সমস্যা হয়নি এরপর। রান তুলতে অবশ্য বেশ সমস্যায় পড়ছে শ্রীলঙ্কা। লেগ সাইডে একটি ওয়াইডসহ শরীফুল দিয়েছেন ৩ রান।
ডিপ স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কা। স্ট্রেইট ড্রাইভে চার। তাসকিনের ওপর চড়াও কামিন্দু মেন্ডিস। শেষ বলে কোমরসমান বলকে স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ওভারের দ্বিতীয় ছক্কাটি মেরেছেন কুশল মেন্ডিস। প্রথম ওভারে সফল তাসকিন দ্বিতীয় ওভারে দিলেন ১৭ রান।
৪ ওভারে ২৫/১।
প্রথম ম্যাচে দ্বিতীয় বলে উইকেট হারানোর পর পাওয়ারপ্লেতে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল ২ উইকেটে ৪৫ রান। আজ প্রথম ৩ ওভারশেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৮/১। ৬ ওভারে সেটিই গিয়ে দাঁড়াল ৪৯/১!
পঞ্চম ওভারে প্রথম স্পিনার হিসেবে এসেছিলেন মেহেদী। শেষ বলে গিয়ে তাঁকে চার মেরেছেন মেন্ডিস, স্লটে পেয়ে টেনে মেরেছেন লং অফ দিয়ে।
পরের ওভারে এসেছেন মোস্তাফিজ। কাট করে চার মেরে শুরু করেছিলেন কামিন্দু মেন্ডিস। সেটি শেষ করেছেন পুল করে ছক্কা মেরে। মাঝে মেন্ডিস দারুণ কাভার ড্রাইভে মেরেছেন আরেকটি চার। ১৫ রান দিয়ে শুরু করেছেন মোস্তাফিজ। শুরুর চাপ সামাল দিয়ে ছুটছে শ্রীলঙ্কা।
১/১ থেকে ৫১/১।
দুই মেন্ডিস—কামিন্দু ও কুশলের জুটিতে ৫০ রান হয়ে গেছে।
পাওয়ারপ্লের পরপরই রিশাদ হোসেনকে এনেছেন নাজমুল। প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সেরা বোলার বলতে হবে তরুণ লেগ স্পিনারকেই। তাঁর প্রথম ওভারে এসেছে শুধু ৪টি সিঙ্গেল। মেহেদীর পর রিশাদ—দুই স্পিনারই ভালো শুরু করলেন। শ্রীলঙ্কার রানের গতিতে লাগাম দিতে পারবেন তাঁরা?
পাওয়ারপ্লের শেষ ৩ ওভারে উঠেছিল ৪১ রান। রিশাদের পর মেহেদীও চাপ তৈরি করেছিলেন, দুজনের ১১ বলে আসেনি কোনো বাউন্ডারি। মেহেদীর ওভারের শেষ বলে মিডউইকেট দিয়ে টেনে ছক্কা মেরে মোমেন্টাম আবার শ্রীলঙ্কার দিকে নিয়ে গেলেন কুশল মেন্ডিস। শ্রীলঙ্কা ৮ ওভারে ৬৪/১।
জুটি ভাঙতে নাজমুল এনেছেন সৌম্যকে। ব্রেকথ্রু দিলেন তিনিই। অফ স্টাম্পের বাইরের লেংথ বলে ব্যাট চালিয়ে কট বিহাইন্ড কুশল মেন্ডিস, হয়তো বাড়তি বাউন্সে ভড়কে গেছেন তিনি। ২২ বলে ৩৬ রানে ফিরলেন কুশল, কামিন্দুর সঙ্গে জুটি থামল ৪২ বলে ৬৬ রানে।
প্রথম ওভারে সৌম্য দিয়েছেন ৫টি সিঙ্গেল। নিয়েছেন উইকেট।
৯ ওভারে ৬৯/২।
আগের বলেই মেরেছিলেন ছক্কা। রিশাদের গুগলি পড়তে পারেননি এরপর কামিন্দু মেন্ডিস। তাতেই যেন গোলমাল হয়ে গেল সব। পড়িমড়ি করে সিঙ্গেল নিতে গেলেন, যেটি আদতে হওয়ার কথা নয়। সামারাবিক্রমাও তাঁর ডাকে সাড়া দিয়েছেন। তবে নন স্ট্রাইক প্রান্তে পৌঁছাতে পারেননি কামিন্দু। মেহেদীর থ্রো ধরে স্টাম্প ভেঙেছেন রিশাদ। শ্রীলঙ্কা হারিয়েছে তৃতীয় উইকেট, ৭৭/৩। দুই থিতু ব্যাটসম্যান ফিরলেন পরপর ২ ওভারে।
আগের ম্যাচেও ১ ওভার করেছেন। এবার প্রথম ওভারে ব্রেকথ্রু দিলেও সৌম্যকে পরের ২ ওভারে ফেরাননি নাজমুল। মেহেদীর পর এনেছেন শরীফুলকে। মেহেদী দিয়েছেন মাত্র ৩ রান। তবে ছক্কা মেরে শরীফুলকে ‘স্বাগত’ জানিয়েছেন শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক চারিত আসালাঙ্কা। ক্রিজে এখন প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ২০০-এর ওপরে নিয়ে যাওয়ার দুই কারিগর—আসালাঙ্কা ও সামারাবিক্রমা।
১২ ওভারে ৯২/৩।
প্রথম ম্যাচে ছিলেন খরুচে। আজ প্রথম ওভারে দিয়েছিলেন ১৫ রান। সেই মোস্তাফিজ এবার ফেরালেন সামারাবিক্রমাকে। আরও অনেক ব্যাটসম্যান যে ভুল করেন, সামারাবিক্রমাও মোস্তাফিজকে আগে খেলতে গিয়ে করেছেন সেটি। পিচে থেমে আসা বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন সামারাবিক্রমা। ৯২ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা।
মেহেদীকে অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে টেনে ছক্কা আসালাঙ্কার। ওই শটে ১০০ পেরিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা। সামারাবিক্রমা ফিরলেও আসালাঙ্কার মনোভাবটা পরিষ্কার। ২ বল পর মেহেদীকে দ্বিতীয় ছক্কাটি মেরেছেন আসালাঙ্কা। এবার স্লটে পেয়েছিলেন একেবারে, আবার লং অফ দিয়ে টেনে মেরেছেন তিনি।
মেহেদী এরপর ফিরে এসেছেন দারুণভাবে। লেংথ কমিয়ে এনে জোরের ওপর করেছিলেন। জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে মিস করে বোল্ড শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক। আসালাঙ্কার সঙ্গে দ্বৈরথে জয়ী মেহেদী, শ্রীলঙ্কা ১৩.৫ ওভারে ১১২/৫।
প্রথম ম্যাচে শেষ ৫ ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল ৭০ রান। আজ তুলবে কত? ক্রিজে তুলনামূলক নতুন দুই ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস ও দাসুন শানাকা।
শুরুটা করেছিলেন মেডেন দিয়ে। শরীফুল ইনিংসে লাইন-লেংথ ধরে রাখলেন দারুণভাবে। ম্যাথুস-শানাকাও তাঁর শেষ ওভার খেলেছেন দেখেশুনে। উইকেট না পেলেও দারুণ এক স্পেল শেষ করলেন বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার।
৩ ওভার বাকি, ১৩৭/৫।
মোস্তাফিজকে ছক্কা মারার পর ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ তুলেছিলেন শানাকা। তবে সহজতম ক্যাচটি হাতে নিয়েও ফেলে দিয়েছেন মেহেদী। মোস্তাফিজের শেষ ওভারে এসেছে ৯ রান। শ্রীলঙ্কা থেমেছে ৫ উইকেটে ১৬৫ রানে।
প্রথম ৩ ওভারে শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৮/১। দুই মেন্ডিস—কুশল ও কামিন্দু সে চাপ সামলে শ্রীলঙ্কাকে এগিয়ে নেন অনেকটাই। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা সে জুটি থামিয়ে বাংলাদেশকে স্বস্তি দেন সৌম্য। চারিত আসালাঙ্কা আবার আগের ম্যাচের মতোই বিপজ্জনক হয়ে ওঠার ইঙ্গিত দেন আজও। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি। দুই মেন্ডিসের মতো তিনিও ফেরেন শ্রীলঙ্কার জন্য অসময়ে।
শেষ দিকে শানাকা ও ম্যাথুস ৩৭ বলে তুলেছেন ৫৩ রান। তবে সেটি ঠিক শ্রীলঙ্কাকে এক লাফে পার করানোর মতো ছিল না।
টসে জিতে আজও অনুমিতভাবেই ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া নাজমুল নিশ্চিতভাবেই ম্যাচের মাঝপথে খুশি হবেন। আগের ম্যাচে ২০৬ রানের লক্ষ্যে বাংলাদেশ হেরেছে ৩ রানে, সেখানে ১৬৬ রানের লক্ষ্য বেশ স্বস্তিকর।
বোলিংয়ে তাঁকে সবচেয়ে বেশি স্বস্তি দিয়েছেন শরীফুল। বিপিএলের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি এ ম্যাচে উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে দিয়েছেন মাত্র ২০ রান। সৌম্য ব্রেকথ্রু এনে দিয়েছেন। দুই স্পিনারও প্রয়োজনমতো করেছেন আঁটসাঁট বোলিং।
তবে কাজটা এখন ব্যাটিংয়ে করতে হবে, নাজমুল জানেন সেটি।
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের করা প্রথম ওভারে এসেছে দুটি চার। সৌম্যর পর মেরেছেন লিটন। দুটিই অবশ্য আটকানোর মতো ছিল। তবে বাংলাদেশ পেয়েছে ভালো শুরু।
১ ওভারে ১০/০।
দিলশান মাদুশঙ্কার ওভারের শেষ ৩ বলে সৌম্য মেরেছিলেন ২ চার। পরেরটি ছিল দারুণ এক লফটেড শটে। ম্যাথুসকে এরপর টানা দুই চারে শুরু করেছিলেন লিটন। সৌম্য-লিটন বাংলাদেশকে এনে দিয়েছেন দুর্দান্ত শুরু। ৩ ওভারে ২৮/০।
বিনুরা ফার্নান্ডোর শর্ট লেংথের বলে সৌম্য করেছিলেন পুল। আম্পায়ার গাজী সোহেল অবশ্য দেন আউট, তাঁর মতে বটম-এজড হয়েছিলেন সৌম্য। রিভিউ করেছিলেন সৌম্য। আল্ট্রা-এজে দেখা গেছে স্পাইক। তবে টেলিভিশন আম্পায়ার মাসুদুর রহমান বলেছেন, স্পাইক দেখানোর সময় বল ও ব্যাটের মধ্যে ‘গ্যাপ’ দেখেছেন তিনি। আউট ভেবে প্রায় বাউন্ডারির কাছে পৌঁছে যাওয়া সৌম্য ফিরে এসেছেন আবার। ১০ বলে তখন তাঁর রান ১৪।
স্বাভাবিকভাবেই তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি শ্রীলঙ্কা দল। আম্পায়ার শরফুদ্দৌলাকে ঘিরে ধরেছেন তারা। ওদিকে কোচ ক্রিস সিলভারউড গিয়েছিলেন চতুর্থ আম্পায়ার তানভীর আহমেদের কাছেও। শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে খেলা। তবে এ সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা হবে অনেক, তা বলাই যায়।
মাদুশঙ্কার বলে লিটনের আয়েশী পুল। পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারের প্রথম বলে লিটনের মারা ছক্কায় ৫০ পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশ, সেটিও বিনা উইকেটে। পরের বলে শুধু পুশ করেই লিটন মেরেছেন চার। শেষ বলে এসেছে আরেকটি চার, যদিও সেটি লেগ বাই থেকে। ৬ ওভারে বাংলাদেশ তুলে ফেলেছে ৬৩ রান।
সেটি আবার রিভিউ করেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে রিপ্লেতেই দেখা যাচ্ছিল, বল পড়েছে লেগ স্টাম্পের বাইরে।
প্রথম ৬ ওভারে শ্রীলঙ্কা তুলেছিল ১ উইকেটে ৪৯ রান। ম্যাচের এ পর্যায়ে বাংলাদেশ এগিয়ে পরিষ্কার ব্যবধানে।
শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ব্রেকথ্রু এনে দিলেন মাতিশা পাতিরানা। শর্ট বলে পুল করেছিলেন সৌম্য, তবে গতির কাছে হার মেনেছেন। মিডউইকেটে ক্যাচ তুলেছেন ২২ বলে ২৬ রান করে, ৬৮ রানে ভেঙেছে ওপেনিং জুটি। সৌম্য আউট হওয়ার পরও আম্পায়ার শরফুদ্দৌলার সঙ্গে এসে কথা বলতে দেখা গেছে চারিত আসালাঙ্কাকে।
দারুণ শুরু পেয়েছিলেন। এরপর পাতিরানার শর্ট বলে ব্যাট ছুড়ে আউট লিটন। শর্ট মিডউইকেটে ক্যাচ তুলেছেন ২৪ বলে ৩৬ রান করে। ৮৩ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারাল বাংলাদেশ।
৬৬ বলে দরকার ৮৩ রান।
লিটন ও সৌম্যর ওপেনিং জুটি বাংলাদেশকে এনে দিয়েছে শক্ত ভিত। দুজনই ফিরেছেন এরই মধ্যে। তবে রান তাড়ায় বাংলাদেশ এখন স্বস্তিতেই। অন্তত খাতা-কলমে। তবে রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে এক ওভারেই দুবার ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে নাজমুল ও তাওহিদ হৃদয়ের।
১০ ওভারশেষে শ্রীলঙ্কার স্কোর ছিল ৭৮/৩।
গত ম্যাচের মতো এবারও শুরুতে সময় নিয়েছেন নাজমুল। এবার খোলস ছেড়ে বেরোনোর ইঙ্গিত তাঁর। ফার্নান্ডোর স্লোয়ারে স্ল্যাপ করে চার মারলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। সৌম্য ও লিটন ফেরার পর বাংলাদেশ এগোচ্ছে হৃদয়ের সঙ্গে নাজমুলের জুটিতে, ১৩তম ওভার শেষে যেটি অবিচ্ছিন্ন ৩২ রানে। রানিং বিটুইন দ্য উইকেটেও দুজনের উন্নতি স্পষ্ট এখন।
১৩ ওভারে ১১৫/২
সমীকরণটা বাংলাদেশের জন্য কঠিন নয় মোটেও…
এ পরিস্থিতি থেকে দরকার নেই জাকেরের মতো ইনিংসও।
টসের সময় আসালাঙ্কা বলেছিলেন, অতিরিক্ত রান দেওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে ভাবতে হবে তাঁদের। পাতিরানা এবার দিলেন ডাউন দ্য লেগে ওয়াইড, যাতে হয়েছে চারও। হৃদয় ও নাজমুলের জুটিতে ৫০ রান উঠে গেছে তাতে।
এরপর হ্যামস্ট্রিংয়ে টান নিয়ে উঠে গেছেন পাতিরানা, নিজের শেষ ওভারের ২ বল বাকি রেখেই। সে ওভার শেষ করতে এসেছেন ম্যাথুস।
২৪ বলে দরকার ২৭ রান।
গেম। সেট। ম্যাচ।
ফিফটির জন্য নাজমুলের প্রয়োজন ছিল ৩ রান। জয়ের জন্য ২ রান। শানাকাকে স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে দুটিই নিশ্চিত করলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বশেষ ৮ ইনিংস আগে ২০ রান পেরিয়েছিলেন নাজমুল। এবার অপরাজিত থাকলেন ৩৮ বলে ৫৩ রান করে। ক্যারিয়ারে এটি তাঁর চতুর্থ ফিফটি।
গত ম্যাচে বোলাররা ঠিক সুবিধা করতে না পারলেও বড় লক্ষ্যে বাংলাদেশকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানরা। আজ প্রথম ওভারেই মেডেন করে শরীফুল ইসলাম যেন বার্তা দিলেন—নিজেদের কাজটা তাঁরা করবেন কীভাবে।
সিলেটে বোলাররা শ্রীলঙ্কাকে ১৬৫ রানে দেওয়ার পর কাজ সহজ হয়ে আসে বাংলাদেশের। লিটন ও সৌম্যর ৬৮ রানের ওপেনিং জুটি এরপর কার্যত ছিটকে দেয় শ্রীলঙ্কাকে। সৌম্যর রিভিউ নিয়ে বিতর্ক হয়েছে, তবে ম্যাচের গতিপথে সেটি খুব একটা প্রভাব রাখতে পারেনি। বরং দীর্ঘ হতাশা প্রকাশ করে হয়তো নিজেদের কাজটি আরেকটু কঠিন করে তুলেছে লঙ্কানরা।
ফর্ম খুঁজে ফেরা নাজমুলের সঙ্গে হৃদয়ের জুটিটা শুরুতে নড়বড়ে ছিল, বিশেষ করে রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে। দুজনই সময় নিয়েছেন। ছন্দে ফিরেছেন। শ্রীলঙ্কা ফিরতে পারেনি আর।
লিটন ও সৌম্য ভালো শুরু পেলেও ইনিংস সেভাবে বড় করতে পারেননি। কিন্তু রান তাড়ায় বাংলাদেশকে নিরাপদে পার করিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন হৃদয়। দুজনের জুটি অবিচ্ছিন্ন থাকে ৫৫ বলে ৮৭ রানে।
শ্রীলঙ্কা বোলিংয়ে সে অর্থে হুমকি তৈরি করতে পারেনি। অতিরিক্ত খাতের বরাদ্দে আজও হাতখোলা ছিল তারা। বাংলাদেশের ৫টি অতিরিক্ত রানের বিপরীতে তারা দিয়েছে ২৩ রান। ১৬৫ রানের সম্বল নিয়ে যেটির চড়া মূল্যই দিতে হয়েছে তাদের।
রান তাড়ায় দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়া নাজমুল ম্যাচসেরা হয়েছেন ৩৮ বলে ৫৩ রানের অপরাজিত ইনিংসে।
কোনো বোলারকে আলাদা করে কৃতিত্ব দিতে চাই না। সবাই দারুণ করেছে।নাজমুল হোসেন