দলের রান ১৮৪। এর ১৩৭-ই নিকোলাস পুরানের। সেটিও কিনা মাত্র ৫৫ বলে।
দিন কয়েক আগে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ব্যাটসম্যান এমন খুনে ব্যাটিং করেছেন মেজর লিগ ক্রিকেটের ফাইনালে এমআই নিউইয়র্কের হয়ে।
সিয়াটলের বিপক্ষে নিউইয়র্কের মোট রানের শতকরা ৭৪.৪৬ করেছেন পুরান। টি-টোয়েন্টিতে এক ইনিংসে দলের রানে সবচেয়ে বেশি অবদান কি না, সেই গবেষণাও শুরু হয়েছিল। প্রথম আলোসহ অনেক সংবাদমাধ্যমেই সেদিন লেখা হয়েছিল স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টি এক ইনিংসে শতকরা হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত অবদান পুরানের।
কিন্তু তাতে বড় একটি ভুলই হয়েছিল। মেজর লিগ ক্রিকেট ২০ ওভারের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগ হলেও যে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি নয়। তাই পুরানের ওই রেকর্ড স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির রেকর্ড বলে গণ্য হবে না। পুরানের টি-টোয়েন্টি পরিসংখ্যানেও যোগ হবে না ১৩৭ রানের সেই ইনিংস।
একইভাবে উদাহরণ হিসেবে আনা যায় এ সপ্তাহের শুরুতেই কাবুল প্রিমিয়ার লিগে ৪৮ রানের সেই ওভারের কথা। যে ওভারে একাই ৪২ রান নিয়েছিলেন আফগান ব্যাটসম্যান সাদিকউল্লাহ আতাল। কাবুল প্রিমিয়ার লিগের স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি মর্যাদা না থাকায় এক ওভারে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডে নেই ওই কীর্তি।
এখন প্রশ্ন করতেই পারেন, বিশ্বজুড়ে এত এত টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের কোনগুলো স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির অন্তর্ভুক্ত। আর জানতে চাইতে পারেন স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির মর্যাদা পাওয়ার শর্তগুলোই বা কী।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি মাত্রই স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি। তবে ঘরোয়া টুর্নামেন্টগুলোর কোনগুলো স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি, সেটি নির্ধারণ করে দেয় আইসিসি। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির মর্যাদা পাওয়ার প্রধান শর্তই হলো টেস্ট খেলুড়ে দেশে হতে হবে সেই টুর্নামেন্ট। যেমন বিপিএল, আইপিএল, পিএসএল, বিগ ব্যাশ, এলপিএলের মতো টুর্নামেন্ট। আর এ কারণেও একঝাঁক তারকা ক্রিকেটার নিয়েও স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি নয় যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ ক্রিকেট, কানাডার গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি, আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টি।
আবার টেস্ট খেলুড়ে দেশ হলেই সব টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির মর্যাদা পায় না। কাবুল প্রিমিয়ার লিগটাই যেমন। আইসিসি ওই টুর্নামেন্টকে স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির মর্যাদা দেয়নি। তবে আফগানিস্তানের প্রধান টি-টোয়েন্টি লিগ শপাগিজা টি-টোয়েন্টির স্বীকৃত মর্যাদা আছে।
বাংলাদেশে এখন স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির দুটি টুর্নামেন্ট-বিপিএল ও ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। এ ছাড়া জাতীয় লিগের টি-টোয়েন্টি সংস্করণ হলে সেটিও স্বীকৃত টি-টোয়েন্টির মর্যাদা পায়।
ভারতে আইপিএলের বাইরে এ স্বীকৃতি আছে সৈয়দ মুশতাক আলী ট্রফির। পাকিস্তানে পিএসএল, ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি কাপ আছে এই তালিকায়। ইংল্যান্ডে টি-টোয়েন্টি ব্ল্যাস্ট ও এমনকি ১০০ বলের দ্য হানড্রেডের রেকর্ডও যোগ হয় স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে।
এ ছাড়া টেস্ট খেলুড়ে দেশের ক্রিকেট বোর্ডগুলো আয়োজিত টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টগুলো আইসিসির স্বীকৃতি পেতে পারে। সম্প্রতি টি-টোয়েন্টি লিগগুলোয় হস্তক্ষেপের কথাও জানায় আইসিসি। একাদশে নির্দিষ্টসংখ্যক স্থানীয় ক্রিকেটার ছাড়া কোনো লিগকে স্বীকৃতি না দেওয়ার কথাও জানায় তারা।