বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ানরা বল টেম্পারিং করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলী। ৫২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের মতে, ডিউক বলে কমপক্ষে ৪০ ওভার খেলা না হলে রিভার্স সুইং করানো যায় না।
কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার পেসাররা সেটি ১৫ ওভারের পরই করাতে পেরেছেন। যে কারণে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ভোগাতে পেরেছেন মিচেল স্টার্ক, প্যাট কামিন্স, ক্যামেরন গ্রিনরা। প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছেন বিরাট কোহলি, চেতেশ্বর পূজারারা।
১৯৯৬ সালে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা বাসিত আলী ক্রিকেট নিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘বাসিত আলী শো’তে কথা বলেন। গতকাল টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে যে অনুষ্ঠানটি করেন, তার শিরোনাম দেন ‘অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিতভাবে বল টেম্পারিং করেছে’।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই বাসিত বলেন, ‘যাঁরা ম্যাচটি টিভিতে দেখেছেন, ধারাভাষ্য দিয়েছেন এবং আম্পায়ারিং করেছেন, তাঁদের সবার জন্য হাততালি দিচ্ছি। অস্ট্রেলিয়া এত পরিষ্কারভাবে বল বানিয়েছে, কিন্তু কেউই কিছু বলল না।’ অস্ট্রেলিয়ার ‘বল বানানো’র ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বাসিত বলেন, ‘সবচেয়ে বড় উদাহরণ হচ্ছে ব্যাটসম্যানের বল ছেড়ে দিতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যাওয়া। প্রমাণ দিচ্ছি। ৫৪তম ওভারে শামি যখন বোলিং করছিল, তখন বলের শাইন ছিল বাইরের দিকে, বল স্মিথের কাছ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিল। এটাকে রিভার্স সুইং বলে না। রিভার্স সুইং হচ্ছে যখন শাইন ভেতরের দিকে থাকবে এবং বল ভেতরে ঢুকবে।’
অস্ট্রেলিয়াকে ৪৬৯ রানে অলআউট করে ব্যাটিংয়ে নামার পর প্রথম ২০ ওভারের মধ্যেই বিপর্যয়ে পড়ে ভারত। স্কোরবোর্ডে ৭১ রান তুলতে আউট হন রোহিত শর্মা, শুবমান গিল, চেতেশ্বর পূজারা ও বিরাট কোহলি। বাসিতের মতে, ১৫তম ওভারের কাছাকাছি সময়ে বল টেম্পারিং করেছে অস্ট্রেলিয়া।
ওই সময়ের কথা তুলে ধরে বিস্ময় প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘১৬, ১৭ আর ১৮তম ওভারের দিকে তাকান। যে বলটায় কোহলি আউট হলো, ওটার শাইন দেখুন। মিচেল স্টার্কের হাতে থাকা বলের বাইরের দিকে শাইন ছিল, কিন্তু বলটা গেল উল্টো দিকে। জাদেজা খেলল অন সাইডে, বল উড়ে গেল পয়েন্টের দিকে। আম্পায়ার কি তখন অন্ধ ছিলেন? সেখানে যারা যারা ছিল, কেউই এই সাধারণ ব্যাপারটা দেখল না!’
বাসিত যে সময়ের কথা বলেছেন, সে সময়ে ভারতের দুই ব্যাটসম্যান আউট হন। ১৪তম ওভারের পঞ্চম বলে ক্যামেরন গ্রিনের বলে পূজারা আর ১৯তম ওভারের দ্বিতীয় বলে মিচেল স্টার্কের বলে কোহলি। গ্রিনের বলটি ছিল অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে, পূজারা ব্যাট উঁচিয়ে ছেড়ে দিতে চাইলে বল ভেতরে ঢুকে অফ স্টাম্পে আঘাত হানে।
আর স্টার্কের বলে কোহলি আউট হন বুকের দিকে ছুটে আসা বল স্লিপে ক্যাচ দিয়ে। দুটি ডেলিভারি বিশ্লেষণ করে বাসিতের মন্তব্য, ‘গ্রিন বলের শাইনের দিকটা সামনে রেখে পূজারাকে বোলিং করেছে, আর বল কি না ধেয়ে গেল ভেতরের দিকে? আমি অবাক। বিসিসিআই এত বড় ক্রিকেট বোর্ড, তারা কি এটা দেখেনি? না দেখার মানে হচ্ছে, আপনি ক্রিকেটের দিকে মনোযোগী নন। ভারত ফাইনালে উঠেছে এতেই তারা খুশি। ১৫-২০ ওভারের সময় বল কি রিভার্স সুইং করে? তা–ও ডিউক বলে? কোকাবুরা বল রিভার্স সুইং করতে পারে। কিন্তু ডিউক বলে রিভার্স সুইং করতে অন্তত ৪০ ওভার লাগে।’