অনেক দিন ধরে যে কথা বন্ধ, সেটা আর কারও অজানা নয়। মুখ দেখাদেখিও প্রায় বন্ধ বলা চলে। এবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করে নিলেন বিরাট কোহলি। ইনস্টাগ্রামে ‘আনফলো’ করেছেন সাবেক অধিনায়ক ও বিসিসিআই প্রধানকে।
সৌরভের ‘ফলো’ তালিকায় অবশ্য এখনো কোহলির নাম দেখা যাচ্ছে। তবে দুজনের পারস্পরিক সম্পর্কে যে ব্যাপক অবনতি হয়েছে, সেটি স্পষ্ট হয়ে গেছে গত দুই দিনের ঘটনাপ্রবাহে।
শনিবার আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের মুখোমুখি হয়েছিল কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। রান তাড়ায় পিছিয়ে থাকা দিল্লি যখন হারের মুখে, বাউন্ডারিতে আমান হাকিম খানের ক্যাচ নেন কোহলি। যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন, সেটি ছিল দিল্লি ডাগআউটের সামনের অংশ। আর ডাগআউটে অন্যদের সঙ্গে বসা ছিলেন দিল্লির ক্রিকেট পরিচালক সৌরভ। ক্যাচ নেওয়ার পর দিল্লি ডাগআউটে সৌরভের দিকে তাকিয়ে ‘রক্তচক্ষু’ দৃষ্টি দেন কোহলি।
সৌরভ অবশ্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি। কিছুক্ষণ পর ম্যাচ শেষ হলে দেখা মেলে ‘প্রতিক্রিয়া’র। মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় দিল্লি কোচিং স্টাফের সদস্যদের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছিলেন কোহলি। সৌরভের সামনে ছিলেন দিল্লির প্রধান কোচ রিকি পন্টিং। কোহলি পন্টিংয়ের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কথা বলার সময় সৌরভ পেছন দিয়ে ঘুরে পন্টিংকে টপকে যান, এড়িয়ে যান কোহলির সঙ্গে করমর্দন।
কোহলির ‘দৃষ্টি’ আর সৌরভের ‘এড়িয়ে যাওয়ার’ দৃশ্য ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক দিন পর ভারতের একাধিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, দিল্লি-বেঙ্গালুরু ম্যাচের আগের দিন পর্যন্ত ইনস্টাগ্রামে কোহলির ‘ফলো’ তালিকায় ছিলেন সৌরভ। কিন্তু রোববার দেখা গেছে, তালিকায় সাবেক বিসিসিআই সভাপতি নেই। যদিও সৌরভের ইনস্টাগ্রাম ‘ফলো’ তালিকায় আগের মতোই বহাল কোহলি।
সৌরভের সঙ্গে কোহলির এই মানসিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাত বছর দেড়েক আগে। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ভারতের টি-টোয়েন্টি সংস্করণের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন কোহলি। এর কিছুদিন পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই কোহলিকে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকেও সরিয়ে দেয়। ওই সময় বিসিসিআইয়ের সভাপতি ছিলেন সৌরভ।
ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক কোহলির ওয়ানডে অধিনায়কত্ব চলে যাওয়া নিয়ে বলেছিলেন, বিসিসিআই কোহলিকে টি-টোয়েন্টির নেতৃত্ব না ছাড়ার অনুরোধ করেছিল। তিনি সেটা মেনে না নিলে নির্বাচকেরা সিদ্ধান্ত নেন, সাদা বলের ক্রিকেটে আলাদা অধিনায়ক রাখার মানে হয় না। যে কারণে কোহলিকে ওয়ানডের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে সৌরভের বক্তব্যের সপ্তাহখানেক পর কোহলি জানান, তাঁর সঙ্গে কথা বলা ছাড়াই বিসিসিআই ওয়ানডে অধিনায়কত্ব কেড়ে নিয়েছিল। যার জেরে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে টেস্টের অধিনায়কত্বও ছাড়েন কোহলি। গত বছরের অক্টোবরে বিসিসিআই প্রধানের চেয়ার থেকে সরে যেতে হয় সৌরভকেও।
গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের ওই সময়ের প্রধান নির্বাচক চেতন শর্মা এক স্টিং অপারেশনে জানান, কোহলিকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর বিষয়ে সৌরভ কলকাঠি নাড়েননি। তবে এ–ও বলেন, ‘সৌরভ রোহিতের পক্ষপাত না করলেও কোহলিকে কখনোই পছন্দ করত না।’