শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে জিম্বাবুয়ে
শ্রীলঙ্কাকে ৪ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে জিম্বাবুয়ে

ম্যাথুসের শেষ ওভারে ২৪ রান তুলে স্মরণীয় জয় জিম্বাবুয়ের

জয়ের জন্য শেষ ওভারে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ছিল ২০ রান। বোলিংয়ে অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস, শ্রীলঙ্কার ইনিংসে যাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৫১ বলে ৬৬ রানের দারুণ এক ইনিংস। বোলিংয়ে শেষ ওভারে জিম্বাবুয়েকে আটকে রাখার দায়িত্বটা তাঁর কাঁধেই বর্তেছিল। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬ বছরের অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ ম্যাথুস প্রথম বলে দিলেন ১১! মানে প্রথম বলটি ছিল নো এবং সেই বলে ছক্কা মারার পরের ডেলিভারিতে লুক জঙ্গুয়ের কাছে চারও হজম করেন ম্যাথুস। সমীকরণ নেমে আসে ৫ বলে ৯ রানে। যে ওভারের শুরুতে পিছিয়ে ছিল জিম্বাবুয়ে, তারাই তখন পরিষ্কার ফেবারিট।

ম্যাথুসের দ্বিতীয় বলটি ছিল স্লোয়ার, সেটাও বাতাসে ভাসিয়ে সীমানা পার করলেন জঙ্গুয়ে। পরের ২ বলে ১ রান দিয়ে ম্যাথুস একটু ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন, জঙ্গুয়ের উইকেটও পেয়ে যেতে পারতেন। তবে মহীশ তিকশানা ক্যাচ ফেলায় হয়নি সেটি। শেষ ২ বলে যখন দরকার ২, এমন পরিস্থিতিতে তখন ক্লাইভ মাদান্দে যেন নায়ক হয়ে উঠতে চাইলেন। ম্যাথুসের পঞ্চম বলকে হাঁটু গেড়ে ডিপ মিডউইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা মেরে জিম্বাবুয়ের ৪ উইকেটের দুর্দান্ত জয় এনে দেন মাদান্দে। এই জয় শুধু দুর্দান্ত কেন, জিম্বাবুয়ের জন্য স্মরণীয়ও। টি-টোয়েন্টিতে এই নিয়ে পঞ্চমবারের দেখায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম জয়ের দেখা পেল জিম্বাবুয়ে। সিরিজেও ১-১ ব্যবধানে সমতায় ফিরল সিকান্দার রাজার দল।

কলম্বোয় টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ১৭৩ রান তুলেছিল শ্রীলঙ্কা। জিম্বাবুয়ে এই রান তাড়া করতে নেমে জিতেছে মূলত দুটি ইনিংসে ভর করে। ওপেনার ক্রেগ আরভিন খেলেছেন ৫৪ বলে ৭০ রানের ইনিংস। আর সাতে নামা জঙ্গুয়ের ব্যাট থেকে এসেছে ১২ বলে ২৫। জঙ্গুয়ে যখন ব্যাটিংয়ে নামেন ১৯ বলে ৪৩ রান দরকার ছিল জিম্বাবুয়ের। কঠিন এই লক্ষ্যকে ১ বল হাতে রেখে জিম্বাবুয়ে যেভাবে মুঠোবন্দি করল তাতে স্বাগতিকদের অসহায়ত্বই ফুটে উঠেছে।

অথচ জিম্বাবুয়ের ইনিংসেও শ্রীলঙ্কা ধস নামিয়েছিল। দলীয় ১০৩ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানের মধ্যে তিনজনকে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ওভারসংখ্যা তখন ১৩.৩। পরের ওভারে তিকসানা শন উইলিয়ামসকেও তুলে নেওয়ায় সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল শ্রীলঙ্কাই। মাঝে এক ওভার পর বিপজ্জনক আরভিনও ফিরে গেলে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল স্বাগতিকেরা। কিন্তু রায়ার্ন বার্লের ৯ বলে ১৩ রানের পর জঙ্গুয়ের ১২ বলে ২৫ ও মাদান্দের ৫ বলে ১৫ রানের ছোট ছোট ইনিংসগুলোই শেষ পর্যন্ত মহাগুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায় জিম্বাবুয়ের জয়ে।

জয় উদ্‌যাপন জঙ্গুয়ের। পাশে হতাশ ম্যাথুস

এর আগে শ্রীলঙ্কা দুটি অর্ধশতকে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পেয়েছিল শুরুতে ধস নামার পর। ৫ ওভারের মধ্যে ২৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল শ্রীলঙ্কা। সেখান থেকে চারিত আসালঙ্কার ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৬৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস। আর ম্যাথুস ৬৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা: ২০ ওভারে ১৭৩/৬ (আসালঙ্কা ৬৯, ম্যাথুস ৬৬; মুজারাবানি ২/৩৬, জঙ্গুয়ে ২/৩২)

জিম্বাবুয়ে: ১৯.৫ ওভারে ১৭৮/৬ (আরভিন ৭০, বেনেট ২৫, জঙ্গুয়ে ২৫*; তিকশানা ২/২৫, চামিরা ২/৩০)

ফল: জিম্বাবুয়ে ৪ উইকেটে জয়ী।