খেলাধুলাকে রাজনীতির সঙ্গে না মেশাতে নানা মহল থেকে বোঝানোর চেষ্টা করা হলেও ভারত সরকার ক্রীড়া কূটনৈতিক চাল চালিয়েই যাচ্ছে।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলতে রোহিত–কোহলি–বুমরাদের পাকিস্তানে পাঠানো হবে না, তা কদিন আগেই জানিয়ে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার। এরপর ভারত কাবাডি দলের পাকিস্তান সফরও আটকে দেওয়া হয়েছে। গতকাল এসেছে এ ধরনের আরেকটি খবর। দৃষ্টিহীনদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আয়োজক পাকিস্তান হওয়ায় টুর্নামেন্ট থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছে ভারত।
জাতীয় ক্রিকেট দল ও কাবাডি দলকে পাকিস্তানে যেতে না দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত সরকার যে কারণ সামনে এনেছে, দৃষ্টিহীন ক্রিকেট দলের ক্ষেত্রেও তা–ই—নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ। ২৩ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানে হতে চলেছে দৃষ্টিহীনদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। টুর্নামেন্টে অংশ নিতে আজই পাঞ্জাবের আটারি–ওয়াগা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার কথা ছিল ভারতের দৃষ্টিহীন ক্রিকেটারদের। কিন্তু সরকার অনুমতি না দেওয়ায় খেলা হচ্ছে না তাঁদের।
বিশ্বকাপে খেলতে না পারাকে হৃদয়বিদারক মনে হচ্ছে ভারত দৃষ্টিহীন ক্রিকেট দলের অধিনায়ক দুর্গা রাও টোম্পাকির। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেছেন, ‘আমরা আবেগ দিয়ে খেলি এবং বিশাল গর্ব নিয়ে দেশের প্রতিনিধিত্ব করি। আমরা সব সময় বড় মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মুখিয়ে থাকি। এই সুযোগ (বিশ্বকাপে খেলতে না পারা) হাতছাড়া হওয়া হৃদয়বিদারক। যা–ই হোক, সামনে আরেকটি বিশ্বকাপ আছে। তাই আমরা অনুশীলন ও প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
পাকিস্তানে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে রেখে দিল্লিতে অনুশীলন ক্যাম্পের আয়োজন করেছিল ভারতের দৃষ্টিহীনদের ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (সিএবিআই)। ক্যাম্পে ২৫ ক্রিকেটারকে ডাকা হয়েছিল। সেখান থেকে বিশ্বকাপের জন্য চূড়ান্ত স্কোয়াড বেছে নেওয়ার কথা ছিল।
দিল্লিতে প্রস্তুতি নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানিয়েছেন দুর্গা রাও টোম্পাকি, ‘আমরা একটি সফল ক্যাম্প করেছি এবং সেখানে উদীয়মান প্রতিভা দেখেছি। আমরা বিশ্বাস করি, তারা দলকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে। এই প্রতিভাগুলোর যত্ন নিতে হবে এবং পরবর্তী টুর্নামেন্ট এলে আমাদের দল প্রস্তুত কি না, তা নিশ্চিত করার সময় এসেছে।’ পাকিস্তানে দৃষ্টিহীনদের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে ভারতীয় দলকে প্রাথমিকভাবে অনাপত্তিপত্র (এনওসি) দিয়ে রেখেছিল দেশটির ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। কিন্তু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র পায়নি।
শেষ মুহূর্তে ভারতীয় দলের পাকিস্তানে যাওয়া আটকে গেলেও সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছে সিএবিআই। এক বিবৃতিতে তারা জানিয়েছে, ‘এটা দলের জন্য অনেক বড় ধাক্কা হলেও (নিরাপত্তা নিয়ে) সরকারের উদ্বেগ এবং এর জন্য নেওয়া সিদ্ধান্তকে আমরা পুরোপুরি সম্মান জানাই।’