বল হাতে সফল ছিলেন সাকিব
বল হাতে সফল ছিলেন সাকিব

এলপিএল

বল হাতে ‘কৃপণ’ সাকিবের ব্যাট কথা বলেনি

৯ ইনিংস, ১৭.২৫ গড়ে ১৩৮ রান, স্ট্রাইক রেট ১১৫—লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) ব্যাট হাতে সাকিব আল হাসানের পারফরম্যান্স এটা। গড়পড়তা? বোধ হয় সেটাই।

এলপিএলে সাকিব ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি কিংবা এমন সময়ে ক্রিজে এসেছেন, যখন তাঁর কিছুই করার ছিল না, এমন অভিযোগ করার সুযোগ নেই। গলের হয়ে নিয়মিতই মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করেছেন এই বাঁহাতি। বল হাতে অবশ্য সাকিব বরাবরের মতোই সফল। তবে নামটা যেহেতু সাকিব, শুধু এক বোলিংয়ে ভক্তরা কেন খুশি হবেন! সবাই তো অলরাউন্ডার সাকিবকেই দেখতে চাইবেন।

এলিপিএলে রান করাটা ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন ছিল। ৯ ইনিংসে ২৭৯ রান করেই টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হয়েছেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমও যে ধারাবাহিকভাবে ভালো খেলতে পেরেছেন, এমন নয়। এরপরও এক সেঞ্চুরি ও এক ফিফটিতে ৮ ইনিংসে ২৬১ রান করে টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক বাবর। শ্রীলঙ্কার উইকেট রান তোলা খানিকটা কঠিন হলেও ব্যাটসম্যান সাকিবের পাশে এমন সংখ্যা কিছুটা বেমানানই; যদিও ব্যাট হাতে টুর্নামেন্টে শুরুটা ভালো করেছিলেন সাকিব।

প্রথম ম্যাচে ১৪ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলা সাকিব দ্বিতীয় ম্যাচে করেছিলেন ২১ বলে ৩০ রান। দ্বিতীয় ম্যাচে রানআউটে কাটা না পড়লে ইনিংস আরও বড় হতেও পারত। এরপর টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ হয়েছেন সাকিব। যার মধ্যে অনেক ইনিংসেই ক্রিজে থিতু হওয়ার পর উইকেট দিয়ে এসেছেন। গতকাল বি-লাভ ক্যান্ডির বিপক্ষে তাঁর ১৭ রানের ইনিংসটাকেই উদাহরণ হিসেবে নেওয়া যায়।

৯ ইনিংসে মাত্র ১৩৮ রান করেছেন সাকিব

গতকাল সাকিব ব্যাটিংয়ে নামেন গল টাইটানসের তৃতীয় উইকেট পতনের পর। মুজিব উর রহমানকে দারুণ এক চার মেরে ভালো কিছুর ইঙ্গিতও দেন। এরপর আরাচচিগের ওভারে টানা দুই বলে আউটের হাত থেকেও বাঁচেন। প্রথমবার আম্পায়ার্স কলের সুবিধায় এলবিডব্লিউ থেকে, পরেরবার বান্দারার ক্যাচ ছাড়ায়।

দুবার ‘জীবন’ পেয়েও ১৫ বলে ১৭ রান করেই থামেন সাকিব। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩০ রানের পর সাকিবের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস ছিল ১৯, খেলেছিলেন প্রথম কোয়ালিফায়ারে ডাম্বুলা অরার বিপক্ষে।

আগেই বলা হয়েছে, সাকিবের ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে এবার আর ভক্তদের অভিযোগ তোলার সুযোগ নেই। কারণ, ৯ ইনিংসের মধ্যে সাকিব ৪ নম্বরেই ব্যাট করেছেন পাঁচবার। আর বাকি চার ইনিংসে ব্যাট করেছেন ৫ নম্বরে।

বল হাতে সাকিব প্রথম ম্যাচ থেকেই ছিলেন স্বরূপে। ১০ ম্যাচে উইকেট নিয়েছেন ১০টি, সেটা খুব বেশি না হলেও ইকোনমি রেট ছিল চোখে পড়ার মতো। মাত্র ৫.৭০ ইকোনমিতে বোলিং করেছেন সাকিব।

এলপিএলে সাকিবের দলেই ছিলেন আরও দুই বাংলাদেশি লিটন দাস ও মোহাম্মদ মিথুন। লিটন সাকিবের মতো পুরো টুর্নামেন্টে খেলেননি, খেলেছেন ৩ ম্যাচ। এই ৩ ম্যাচে নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। প্রথম দুই ম্যাচে এক অঙ্কের ঘরে আউট হওয়ার পর গতকাল বি-লাভ ক্যান্ডির বিপক্ষে আউট হয়েছেন ১৯ বলে ২৫ রান করে। মিথুন গলের একাদশে এক ম্যাচেও জায়গা পাননি।

তাওহিদ হৃদয় প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই সবার নজর কেড়েছেন

তবে সাকিব-লিটনকে ছাপিয়ে এলপিএলে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার বোধ হয় তাওহীদ হৃদয়। নিজের প্রথম ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগেই সবার নজর কেড়েছেন এই ব্যাটসম্যান। ৬ ইনিংসে ৩৮.৭৫ গড় ও ১৩৫.৯৬ স্ট্রাইক রেটে রান করেছেন ১৫৫। ফিফটি একটি। এবারের আসরে খেলেছিলেন পেসার শরীফুল ইসলামও। শরীফুল ১ ম্যাচে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। সেই ম্যাচে ১ ওভার বল করে ৭ রান দিয়েছেন শরীফুল।