প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ১ উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় পেয়েছে মোহামেডান। শেখ জামাল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে হারিয়েছে সহজেই। জিতেই চলছে আবাহনী, এবার প্রতিপক্ষ রূপগঞ্জ টাইগার্স।
ম্যাচ খেলেছেন ৬টি, শতক ৩টি, অর্ধশত ১টি—এবারের প্রিমিয়ার লিগে প্রাইম ব্যাংকের ওপেনার পারভেজ হোসেনের পারফরম্যান্স এটি। তরুণ এই বাঁহাতি ওপেনারের সর্বশেষ শতকটি এসেছে আজ। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে মোহামেডানের বিপক্ষে ১১১ বলে ১১০ রানের ইনিংস খেলেছেন, তাতে ছিল ৬টি করে চার ও ছয়। রান পেয়েছেন আরেক বাঁহাতি ওপেনার তামিম ইকবালও। ৮৩ বলে ৬৫ রান করেছেন তিনি। দুজনের ইনিংসের সৌজন্যে প্রাইম ব্যাংক ৫০ ওভারে তোলে ২৭৯ রান।
কিন্তু জয়ের জন্য তা যথেষ্ট হয়ে ওঠেনি। ১৫ রান তুলতেই ৩ উইকেট হারালেও মোহামেডানকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন মাহিদুল ইসলাম। এবারের ঢাকা লিগে চতুর্থ অর্ধশতক তুলে নিয়ে মোহামেডানকে জয়ের পথ দেখিয়ে যান এই উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। চতুর্থ উইকেটে আরিফুল ইসলামের সঙ্গে ১২১ রানের জুটি গড়েন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিকতে পারেননি দুজনের কেউই। মাহিদুল ফেরেন ৯২ বলে ৭৮ রান করে, আরিফুল ৪৫-এ।
অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহর ৩৩ বলে ৪২ রান মোহামেডানকে আরেকটু এগিয়ে নেয়। কিন্তু মোহামেডানের একজন ফিনিশারের দরকার ছিল। আবু হায়দার ৩৬ বলে ৫৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলে সে দায়িত্বটা পালন করেন। আরেক পেসার কামরুল ইসলাম ১৪ বলে ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। দুজনের সৌজন্যে ১ উইকেট হাতে রেখে ৪৭তম ওভারে প্রাইম ব্যাংকের রান টপকে যায় মোহামেডান।
বিকেএসপিতে পাশের মাঠেই শেখ জামালের হয়ে ৩ নম্বরে ব্যাটিং করেছেন সাকিব আল হাসান। গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে সাকিবের এবারের মৌসুমের প্রথম অর্ধশতকের সৌজন্যে শেখ জামাল ২৩৩ রান করে। ৬৫ বলে ৫৩ রান করেন সাকিব। শেষের দিকে আরেক অলরাউন্ডার জিয়াউর রহমান ৪৪ বলে তোলেন ৫৫ রান। বৃষ্টির কারণে জয়ের জন্য গাজীর নতুন লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪৫ ওভারে ২৩২ রান।
কিন্তু রান তাড়ায় গাজীর ব্যাটসম্যানদের বেশি দূর এগোতে দেননি সাকিব ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। সাকিব ৯ ওভার বল করে মাত্র ১৪ রান দিয়ে নিয়েছেন ২ উইকেট। চোট ও অসুস্থতায় দীর্ঘদিন খেলার বাইরে থাকা মৃত্যুঞ্জয় আজ ফেরার ম্যাচে ৪১ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। দুজনের নৈপুণ্যে ৪২.২ ওভারে ১৯২ রানে থামে গাজীর ইনিংস। ৩৯ রানের জয়ে পয়েন্ট তালিকার ২ নম্বর জায়গাটা ধরে রেখেছে শেখ জামাল।
ফতুল্লায় রূপগঞ্জ টাইগার্সকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে আবাহনী। এনামুল হক ও মোহাম্মদ নাঈম বরাবরের মতো আজও ভালো শুরু এনে দিয়েছেন। দুই ওপেনার যখন আউট হন, দলের রান ২ উইকেটে ৭৬। জাকের আলী, তাওহিদ হৃদয় ও মোসাদ্দেক হোসেনের সৌজন্যে আবাহনী শেষ পর্যন্ত ৪ উইকেটে ৩২০ রান করে।
জাকের তিনে নেমে ৯৫ বলে খেলেছেন ৭৮ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। তবে সব আলো কেড়ে নিয়েছেন হৃদয়। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ৮৪ বলে ১২৫ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। ১৪৮ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে চার ছিল ১১টি, ছয় ৬টি। তবে হৃদয়ের চেয়ে দ্রুতগতিতে রান তুলেছেন আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক, ২৬ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ৪৩ রানে।
পরে বল হাতে উইকেটও নিয়েছেন মোসাদ্দেক। মাত্র ১.২ ওভার বল করে ৩ উইকেট শিকার করেছেন এই অফ স্পিনার। তবে রূপগঞ্জের একাদশে মূল ধাক্কাটা দিয়েছেন নাহিদুল ইসলাম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ১০ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন নাহিদুল। ৭ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ২ উইকেট সাইফউদ্দিনের। তাতে ১৪০ রানের বড় জয় পায় আবাহনী।