ওয়াকার ইউনিস খোলাখুলিই বলেছেন, পার্থ টেস্টে পাকিস্তানি পেসারদের বলে গতি কম দেখে তিনি চিন্তিত। শাহিন আফ্রিদিদের বলে গতি কমে যাওয়ার বিষয়টি অস্ট্রেলিয়ানদেরও চোখ এড়ায়নি।
মিচেল স্টার্ক মনে করেন, অতীতে পাকিস্তানের পেসাররা অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে যে ধরনের গতিতে বল করেছিলেন, এবার পার্থ টেস্টে সেটা দেখা যায়নি, যা তাঁর সতীর্থদের বিস্মিত করেছে।
অবশ্য টেস্টে সফল হওয়ার জন্য গতিকেই সেরা ও চূড়ান্ত মাধ্যম বলে মনে করেন না স্টার্ক।
পার্থ টেস্ট ৩৬০ রানে জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট শুরু হবে আগামী মঙ্গলবার মেলবোর্নে। আজ রবিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন স্টার্ক। প্রথম টেস্টে পাকিস্তানের চার পেসার শাহিন, খুররম শাহজাদ, আমের জামাল ও ফাহিম আশরাফদের খুব কম বলই ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতি ছাড়িয়েছে। বিষয়টি আলাদাভাবে অস্ট্রেলিয়ানদেরও চোখে পড়েছে বলে জানান স্টার্ক, ‘পাকিস্তানি পেসারদের কম গতি দেখে আমাদের সবাই কিছুটা অবাক হয়েছে। বিশেষ করে যখন আপনি জানেন যে ওদের বোলাররা এখানে ঘণ্টায় ১৫০ কিমি গতি তুলে থাকে।’
স্টার্কদের অবাক লাগার মূল কারণ হলো, পাকিস্তানের আক্রমণভাগে জোরে বল করা পেসারের আধিক্য। উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে পাকিস্তানকে বলা হয় ফাস্ট বোলারদের উর্বর ভূমি, যে দেশের পেসাররা অস্ট্রেলিয়ায় সহায়ক কন্ডিশনে ধারাবাহিকভাবে ভালো গতি তুলে থাকেন। স্টার্ক অবশ্য বলে বেশি গতি থাকাকে আবশ্যক মনে করছেন না, ‘আমার মনে হয় না গতি থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বা থাকতেই হবে। এটা ঠিক যে গতি বেশি থাকলে সাফল্য পেতে সুবিধা হয়।’
সাম্প্রতিক সময়ে পাকিস্তানের গতি তারকা হিসেবে দেখা হয় শাহিন, নাসিম শাহ ও হারিস রউফদের। এর মধ্যে নাসিম গত সেপ্টেম্বরে পাওয়া চোট থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠেননি। আর রউফ টেস্টের বদলে বিগ ব্যাশে খেলাকে প্রাধান্য দিয়েছেন। পার্থে বোলিং আক্রমণের নেতা হিসেবে থাকা শাহিনের গতি স্পষ্টতই কম ছিল। দুই ইনিংস মিলিয়ে মাত্র ২ উইকেট পাওয়া এই বাঁহাতি পেসারের গড় গতি ছিল ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটারের কম, যা দ্বিতীয় ইনিংসে ছিল ১২০–এ।
একাদশে থাকা অন্য তিন পেসারের কেউই দ্রুতগতির ডেলিভারি দেওয়া বোলার নন। ম্যাচজুড়ে মিডিয়াম–ফাস্ট গতিতে বল করে গেছেন শাহজাদ। আর প্রথম ইনিংসে ৬ উইকেট তোলা জামাল অল্প কিছু ডেলিভারিতেই ঘণ্টায় ১৪০ কিমির ঘর স্পর্শ করতে পেরেছেন। বিপরীতে অপটাস স্টেডিয়ামের পিচে নিয়মিতই ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতির বল করে গেছেন অস্ট্রেলিয়ার জস হ্যাজলউড, প্যাট কামিন্স ও স্টার্ক।
অবশ্য সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের ভেন্যু এমসিজিতে গতি খুব একটা ভূমিকা রাখবে না বলে ধারণা স্টার্কের, ‘স্কট বোলান্ডের দিকে দেখুন, সে কিন্তু টানা বেশি গতিতে বল করে না। কিন্তু মেলবোর্নে প্রচুর মুভমেন্ট আদায় করতে পারে। এটা ঠিক যে মেলবোর্ন ওর হোম গ্রাউন্ড, অনেক দিন ধরে খেলে। কিন্তু ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও দেখেছি, ওর প্রতিটি বলই উইকেট পাওয়ার মতো। যে কারণে আমার মনে হয় না যে এখানে গতি খুব বেশি কাজে দেবে।’
স্টার্কের এক দিন আগে ইএসপিএনের ‘অ্যারাউন্ড দ্য উইকেট’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পাকিস্তানের পেস বোলিংয়ে গতি কমে যাওয়া নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন দেশটির সাবেক অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিস। সাবেক এই গতি তারকা জানান, পাকিস্তানের ঘরোয়া ক্রিকেটেও ইদানীং আগের মতো প্রচুরসংখ্যক ফাস্ট বোলার দেখা যাচ্ছে না।