ধবলধোলাইয়ের শঙ্কা নিয়ে আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ
ধবলধোলাইয়ের শঙ্কা নিয়ে আজ সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশের আধিপত্যও তাহলে শেষ

আজ সিরিজের শেষ ওয়ানডে। খেলা সেই সেন্ট কিটসে। এ ম্যাচের আগে কী বলতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ? তাঁকে জিজ্ঞেস না করেও অনুমান করে বলে দেওয়া যায় বাংলাদেশ অধিনায়ক চাইবেন, সিরিজটা আগেই হেরে গেলেও অন্তত শেষ ম্যাচটা জিততে। যাতে ধবলধোলাই এড়াতে পারে বাংলাদেশ। সে আত্মবিশ্বাস কাজে লাগতে পারে টি–টোয়েন্টি সিরিজেও।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশকে সান্ত্বনার জয় খুঁজতে হবে—এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতাই বটে। ক্রিকেটের পুরোনো শক্তিগুলোর মধ্যে এই একটা দলের বিপক্ষেই যে ওয়ানডে সিরিজে সাফল্যটাকে নিয়ম বানিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। এবারের আগে দুই দলের ৬টি ওয়ানডে সিরিজের ৫টিতেই জয় বাংলাদেশের। সর্বশেষ পরাজয় সেই ২০১৪ সালে। বাংলাদেশের এই আধিপত্য শুধু দেশের মাটিতেই ছিল না। ২০১৮ ও ২০২২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে গিয়েও সর্বশেষ দুটি ওয়ানডে সিরিজ জিতে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। তো ১৫ বছর ধরে যাদের সঙ্গে ওয়ানডে পারফরম্যান্সের ধারাটা এমন, তাদের বিপক্ষে সিরিজ হেরে গিয়ে শেষ ম্যাচে ধবলধোলাই এড়াতে বাংলাদেশ সান্ত্বনার জয় পেতে চাইবে, এবার বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশাটা বোঝাতে এটাই যথেষ্ট।

অথচ এবার অ্যান্টিগায় দুর্দান্ত জয়ে টেস্ট সিরিজ ড্র করে ফেলার পর ওয়ানডের ইতিহাস ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে বলেই আশাই জেগেছিল। কারণ, এর আগে যে সিরিজগুলোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে, সেগুলোতেই আবার টেস্টে নাকানিচুবানি খেয়েছে। এবার যেহেতু টেস্ট সিরিজ ড্র করে বাড়তি সাহস সঞ্চয় করা গিয়েছিল, ওয়ানডের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি না হওয়ার কোনো কারণ ছিল বলে মনে হয়নি।

দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টস করছেন দুই অধিনায়ক

তবু সিরিজটা বাংলাদেশ প্রথম দুই ম্যাচেই হেরে গেল এবং শেষ ম্যাচে এসে কাঁপতে হচ্ছে ধবলধোলাইয়ের শঙ্কায়। কেন? একটা কারণ তো বলাই যায়, এই দলটা অনভিজ্ঞ। জ্যেষ্ঠ ক্রিকেটারদের বেশির ভাগই নেই। নির্দিষ্ট করে বললে শুধু মাহমুদউল্লাহই আছেন। প্রথম দুই ওয়ানডেতে অভিজ্ঞতার মূল্য দিয়ে দারুণ দুটি ফিফটি করে মাহমুদউল্লাহ চাইলে এখন এ ঘোষণাও দিয়ে দিতে পারেন যে ‘আমি কিন্তু সহজে ওয়ানডে ছাড়ছি না।’

কথাটা বলা বিশেষ করে পরশুর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে অন্য ব্যাটসম্যানদের অবস্থা দেখে। শুরুতে ওপেনার তানজিদ হাসান আগের ম্যাচের ভালো ব্যাটিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন। কিন্তু এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে এ–ও দেখলেন, অন্য প্রান্ত থেকে একে একে বিদায় নিচ্ছেন ওপরের দিকের তিন ব্যাটসম্যান। ১১৫ রানে ৭ উইকেট পড়ে যাওয়ার পর মাহমুদউল্লাহকে কিনা সংগত খুঁজতে হলো ৯–এ নামা পেসার তানজিদ হাসানের ব্যাটে!

৬২ বলে ৪৫ রান করে অষ্টম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৯২ রানের জুটি গড়ে তানজিম সেটি দিয়েছেনও। কিন্তু যে উইকেটে প্রথম ওয়ানডেতে ২৯৪ রান করেও ১৪ বল বাকি থাকতে হারতে হয়েছে, সেই উইকেটে ২২৭ রানের লক্ষ্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের তুড়ি মেরেই অতিক্রম করে ফেলার কথা। সেটাই হয়েছেও। ব্র্যান্ডন কিং আর এভিন লুইসের ১০৯ রানের ওপেনিং জুটিতে ভর করে ৭ উইকেটের জয় চলে আসে ৩৭তম ওভারেই। ম্যাচ শেষে অধিনায়ক মিরাজ শুরুর দিকের বোলিংয়ের প্রশংসা করেও স্বীকার করে নিয়েছেন ব্যাটিং–ব্যর্থতা, ‘প্রথম ১০ ওভারে আমরা দারুণ বোলিং করেছি, বিশেষ করে রানা ছিল আমাদের সেরা বোলার। কিন্তু এই উইকেটে এই স্কোর ডিফেন্ড করা বোলারদের জন্য খুবই কঠিন।’ সঙ্গে সেই পুরোনো উপলব্ধি তো আছেই, ‘আমাদের স্কোর যথেষ্ট ছিল না, ৩০০ রানের বেশি করা দরকার ছিল।’

রান কত করতে হবে, প্রতিপক্ষকে কত রানে আটকে রাখতে হবে—এসব পরিস্থিতি অনুযায়ী বদলায়। তবে সান্ত্বনার জয় নিয়ে ওয়ার্নার পার্কে ধবলধোলাই এড়ানোর শর্তটা কিন্তু আজও একই—ভালো ক্রিকেট খেলা।