প্রথম ম্যাচে ওমান চমকে দিয়েছিল আয়ারল্যান্ডকে। এবার তাদের মুঠোয় থাকা ম্যাচটি ছিনিয়ে নিয়ে গেল স্কটল্যান্ড। মাইকেল লিস্কের ৬১ বলে ৮৯ রানের অপরাজিত দুর্দান্ত ইনিংসে শেষ বলে গিয়ে আয়ারল্যান্ডের দেওয়া ২৮৬ রানের লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলেছে স্কটিশরা, সেটাও ১ উইকেট বাকি রেখে। স্কটল্যান্ড নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার কোনো ওয়ানডে জিতল ১ উইকেটের ব্যবধানে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে তাদের শুরুটা হলো দারুণ। অন্যদিকে প্রথম দুই ম্যাচে হেরে নিজেদের কাজটি কঠিন করে তুলল আয়ারল্যান্ড।
ম্যাচের শেষ ওভারেও হয়েছে নাটক। ৬ বলে প্রয়োজন ছিল ৮ রান, স্কটল্যান্ডের তখন বাকি ২ উইকেট। মার্ক অ্যাডাইরের বলে ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে খেলেছিলেন মাইকেল লিস্ক, লং অনে হ্যারি টেক্টরের জন্য সেটি ছিল ‘সহজ’ ফিল্ডিং। টেক্টর সেটি মিস করে যাওয়ায় বাউন্ডারি পান লিস্ক। ম্যাচের চিত্রও যেন ফুটে ওঠে তাতে। পরের বলে সিঙ্গেল, তৃতীয় ডেলিভারিতে অ্যাডাইরের শর্ট বলে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ তোলেন শায়ান শরিফ। অ্যাডাইর আবার শর্ট করেন, আবার ডট। পরের বলও শর্ট, এবার অবশ্য ১ রান বাই। শেষ বলে ইনসাইড-এজে চার পান লিস্ক, তাতেই স্কটল্যান্ড মাতে উল্লাসে।
অথচ শেষ ওভারের অনেক আগেই ম্যাচটি শেষ করে দেওয়ার সুযোগ তৈরি করেছিল আয়ারল্যান্ড। রান তাড়ায় ৩৪তম ওভারে সপ্তম উইকেট হারিয়ে ফেলে স্কটল্যান্ড, জয় থেকে তখনো ১৩৫ রান দূরে তারা। সেখান থেকে স্কটল্যান্ডের ঘুরে দাঁড়ানোর ভিতটা তৈরি করেন লিস্ক, সঙ্গী হিসেবে পান মার্ক ওয়াটকে। দুজনের জুটিতে ওঠে ৬৭ বলে ৮২ রান। ৪৩ বলে ৪৭ রান করে ওয়াট ফিরলেও শরিফকে নিয়ে আরও ৫০ রান যোগ করেন লিস্ক, যদিও এ জুটিতে শরিফের অবদান মাত্র ৬ রান।
শেষ ৪ ওভারে প্রয়োজন ছিল ৪৪ রান। ৪৭তম ওভারের শেষ ৫ বলে জশ লিটলের কাছ থেকে লিস্ক তোলেন ২১ রান। নিজেদের ইতিহাসের চতুর্থ সর্বোচ্চ সফল রান তাড়ার দিকে তাতেই বড় একটা লাফ দেয় স্কটল্যান্ড। এরপর তো শেষের ওই নাটক। আজ শেষ ৩ উইকেট জুটিতে স্কটল্যান্ড তুলেছে ১৩৭ রান, যেটি তাদের রেকর্ড।
ঠিক আগের ম্যাচটি আয়ারল্যান্ড হেরেছিল ওমানের সঙ্গে ২৮১ রান তুলে। এমন উইকেটে মোটামুটি নিরাপদ স্কোর মনে করলেও দুবারই হারতে হলো তাদের। আজ অবশ্য এমন স্কোরকে একসময় মনে হচ্ছিল সুদূরের কল্পনা। টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ব্রেন্ডন ম্যাকমুলানের তোপে পড়ে ৭০ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল তারা।
সেখান থেকে আয়ারল্যান্ডকে টানেন কার্টিস ক্যাম্ফার ও জর্জ ডকরেল। দুজনের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে আসে ১৩৬ রান, সপ্তম উইকেটে গ্যারেথ ডিলানিকে নিয়ে আরও ৫০ রান যোগ করেন ক্যাম্ফার। ইনিংসের ১ বল বাকি থাকতে আউট হওয়ার আগে ক্যাম্ফার করেন ১০৮ বলে ১২০ রান, ডকরেল খেলেন ৬৯ রানের ইনিংস। ম্যাকমুলেন ৫ উইকেট নেন ৩৪ রানে।
দিনের অন্য ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে ওমান। টসে হেরে আগে ব্যাটিং করা আরব আমিরাত তোলে ৮ উইকেটে ২২৭ রান। সর্বোচ্চ ৫৮ রান আয়ান আফজালের, ৪৯ রান করেন ভৃত্য অরবিন্দ। ১৪ রানে ২ উইকেট হারালেও ওমান জয় পায় ২৪ বল বাকি থাকতেই। আকিব ইলিয়াস, শোয়েব খানের পর ফিফটি পান মোহাম্মদ নাদিম, ৩৬ বলে ৪১ রান আয়ান খানের। এর আগে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে বড় ব্যবধানে হেরেছিল আরব আমিরাত।