সেই ১৯৮৫ সাল থেকে শুরু, তারপর ১৯৯৬, ২০০২ আর ২০১২-যতবারই ওয়েস্ট ইন্ডিজে খেলতে গেছে নিউজিল্যান্ড, ওয়ানডেতে সিরিজ হারের হতাশা নিয়ে দেশে ফিরতে হয়েছে তাদের। এবার তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি হেরে যাওয়ার পর উঁকি দিচ্ছিল পুরানো স্মৃতি। তার ওপর চোটের কারণে দ্বিতীয় ওয়ানডের আগ মুহূর্তে ছিটকে পড়েন অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন।
এমন অবস্থা থেকেই ঘুরে দাঁড়িয়ে এবার জয়ের গল্পই লিখল কিউইরা। বৃষ্টিবিঘ্নিত দ্বিতীয় ওয়ানডে জিতে সিরিজে সমতা আনার পর কাল তৃতীয় ওয়ানডেতে ক্যারিবীয়দের উড়িয়েই দিয়েছে টম ল্যাথামের দল। বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ৩০১ রান নিউজিল্যান্ড টপকে গেছে ১৭ বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখে।
৫ উইকেটের এ জয়ে ম্যাচের সঙ্গে সিরিজও জিতে নিয়েছে কিউইরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে যা পায়নি তারা আগের চারবারের চেষ্টাতে। সিরিজসেরা হয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার, আর শেষ ওয়ানডের ম্যাচসেরা ল্যাথাম।
ম্যাচটি যে হারতে হবে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ তা মাঝবিরতিতেও ভাবতে পারেনি। ম্যাচ শেষে ক্যারিবীয় অধিনায়ক নিকোলাস পুরান বলেছেন, ‘এই হার মেনে নেওয়াটা কঠিন। এই উইকেটে তিন শ বেশ ভালো রান। নিউজিল্যান্ড ইনিংসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আমরাই এগিয়ে ছিলাম। সত্যি বলতে কী, বোলারদের কাছে এর বেশি আর কী চাইতে পারতাম! কিন্তু নিউজিল্যান্ড খুব ভালো ব্যটিং করেছে।’
নিউজিল্যান্ডের ভালো ব্যটিংটা এসেছে ‘দশে মিলে করি কাজ’ ধরনে। আগের ওয়ানডের ম্যাচসেরা ফিন অ্যালেন মাত্র ৩ রান করে আউট হলেও ধাক্কাটা সামলে নেন বাকি ব্যাটসম্যানরা। দ্বিতীয় উইকেটে মার্টিন গাপটিল-ডেভন কনওয়ের ৮২ রান, চতুর্থ উইকেটে ল্যাথাম ও ড্যারিল মিচেলের ১২০ রান আর শেষ দিকে জিমি নিশাম-মিচেল ব্রেসওয়েলের অবিচ্ছিন্ন ৪৮ রানের জুটি কিউইদের জয়ের পথ সহজ করে দেয়।
তিন অংকের ইনিংস কারও নেই, তবে ফিফটি করেছেন চারজন। গাপটিল ৬৪ বলে ৫৭, কনওয়ে ৬৩ বলে ৫৬, ল্যাথাম ৭৫ বলে ৬৯ আর মিচেল ৪৯ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন। এ চারজনের সবাই আউট হয়ে যাওয়ার পর শেষদিকে নেমে ৪ ছয়ে ১১ বলে ৩৪ রান করে জয় নিশ্চিত করেন নিশাম।
এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ওয়েস্ট ইন্ডিজের ইনিংসে রান পেয়েছেন শুধু টপ অর্ডাররা। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান শাই হোপ আর কাইল মেয়ার্স মিলে প্রথম উইকেটে তোলেন ১৭৩ রান। ৩৪.৫ ওভার খেলে এই রান তোলেন তাঁরা। ১০০ বলে ৫১ রান করা হোপকে ফিরিয়ে জুটিতে ভাঙন ধরান ট্রেন্ট বোল্ট। অন্য প্রান্তে মেয়ার্সের ব্যাটিং ছিল হোপের বিপরীত, আউট হওয়ার আগে ১১০ বলে ১২টি চার ও ৩টি ছয়ে ১০৫ রান করেন তিনি।
তিন নম্বরে নামা অধিনায়ক পুরানের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান মূলত তিন শ পেরোয়। বোল্টের বলে স্যান্টনারের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৫৫ বলে ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ৯১ রান করেন পুরান।