দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিতে মুখোমুখি বাংলাদেশ–ভারত। গোয়ালিয়রে হওয়া প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটের বড় ব্যবধানে সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে স্বাগতিকেরা। তিন ম্যাচ সিরিজে আশা বাঁচিয়ে রাখতে আজ জিততেই হবে নাজমুল হোসেনদের।
টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ দল ভারতকে এখন পর্যন্ত মাত্র একবারই হারাতে পেরেছে। ২০১৯ সালের সেই ম্যাচটি ছিল দিল্লিতেই, আজ দ্বিতীয় টি–টোয়েন্টিও একই মাঠে।
বিস্তারিত পড়ুন এখানে।
দিল্লিতে টসে জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন। প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক বলেছেন ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে শিশির পড়তে পারে। যা পরে ব্যাট করা দলের জন্য ভালো হবে।
বাংলাদেশ দল প্রথম টি–টোয়েন্টির দল থেকে এক পরিবর্তন এনেছে। বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলামের জায়গায় একাদশে ঢুকেছেন ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান।
বাংলাদেশ একাদশে এক পরিবর্তন আনলেও ভারত খেলছে আগের ম্যাচের দল নিয়েই।
বাংলাদেশ একাদশ: পারভেজ হোসেন, লিটন দাস, নাজমুল হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদউল্লাহ, জাকের আলী, মেহেদী হাসান মিরাজ, রিশাদ হোসেন, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান।
ভারত একাদশ: অভিষেক শর্মা, সঞ্জু স্যাসমন, সূর্যকুমার যাদব, নীতিশ কুমার, হার্দিক পান্ডিয়া, রিয়ান পরাগ, রিংকু সিং, ওয়াশিংটন সুন্দর, বরুণ চক্রবর্তী, অর্শদীপ সিং ও মায়াঙ্ক যাদব।
বাংলাদেশ টসে জিতে ফিল্ডিং নেওয়ায় ব্যাটিংয়ে নামছে ভারত। দলটির অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব টসে হেরে যাওয়ার পর বলেছেন, তাঁর দল প্রথমে ব্যাটিংই করতে চেয়েছিল।
‘আমরা প্রথমে ব্যাটিংই করতে চেয়েছি। প্রথম ম্যাচেই আগে বোলিং করেছি। আমি কয়েকজন মাঠকর্মীর সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছেন কিছুটা শিশির পড়তে পারে। আমরা বোলারদের চ্যালেঞ্জে ফেলতে চাই। তারা (শিশিরে) ভেজা বলে কী করতে পারে দেখতে চাই।’ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম ভারতের ছোট বাউন্ডারির মাঠগুলোর একটি। দুই পাশের বাউন্ডারির দূরত্ব ৫৫ মিটার ও ৬৩ মিটার, আর সোজাসুজি ৭২ মিটার। বাউন্ডারি ছোট বলে ২০০+ রান এখানে সাধারণ ঘটনা। ২০২৪ আইপিএল যার অন্যতম দৃষ্টান্ত।
পড়তে পারে প্রথম আলোয় আজই প্রকাশিত এই লেখাটি: নাজমুলরা আজ ১৮০ করতেই পারেন, তবে দিল্লি বহুদূর
বাংলাদেশ দল বোলিং শুরু করেছে মেহেদী হাসান মিরাজের স্পিন দিয়ে। প্রথম বল ডট গেলেও পরের দুই বলেই চার মেরেছেন সঞ্জু স্যামসন। ওভারের শেষ বলে চার পেয়েছেন আরেক ওপেনার অভিষেক শর্মাও। সব মিলিয়ে প্রথম ওভারেই ভারত করেছে বিনা উইকেটে ১৫ রান।
প্রথম পাঁচ বলে ২ রান—ভারতের দুই ওপেনারকে কিছুটা চাপেই ফেলেছিলেন তাসকিন আহমেদ। আর সেটিরই পুরস্কার পেয়েছেন ওভারের শেষ বলে। দিয়েছিলেন স্লোয়ার, গতি ছিল ঘণ্টায় ১২২.৩ কিলোমিটার। আর এই বলেই মিড অফে নাজমুলের হাতে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন সঞ্জু স্যামসন (৭ বলে ১০ রান)।
ভারতের রান ২ ওভারে ১ উইকেটে ১৭। অভিষেক শর্মার সঙ্গে নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে যোগ দিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব।
ভারতের আরেক ওপেনারের উইকেটও পেয়ে গেল বাংলাদেশ! তানজিম হাসানের বলে বোল্ড অভিষেক শর্মা (১১ বলে ১৫)।
তৃতীয় ওভারে মিরাজের বদলে বোলিংয়ে আসা তানজিম তৃতীয় ও চতুর্থ বলে দুটি চার হজম করেছিলেন। দুটিই অভিষেকের ব্যাট থেকে। তবে ষষ্ঠ বলে হাসলেন তানজিম। অভিষেক অফ স্টাম্পের বাইরের বল মারতে গেলে ব্যাটের ভেতরের অংশে লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে। আর সে আঘাত এমনই যে, উপড়ে গেছে অফ স্টাম্পই। টানা দুই ওভারে উইকেট হারাল ভারত।
৩ ওভার শেষে ভারতের রান ২ উইকেটে ২৫। ব্যাটিংয়ে সূর্যকুমার যাদবের সঙ্গে নীতিশ রেড্ডি।
দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর ভারতের ব্যাটসম্যানদের আপাতত চাপেই রেখেছেন তাসকিন–তানজিম। প্রতি বলে হাত খোলার সুযোগ পাচ্ছেন না সূর্যকুমার, নীতিশরা। এর মধ্যে আউটের সুযোগও দিয়েছেন নীতিশ। যদিও কঠিনই।
তানজিমের বলে পুল করতে চেয়েছিলেন নীতিশ, বল তাঁর গ্লাভস ছুঁয়ে পেছনে গেলে হাতে পেয়েছিলেন লিটন। তবে ভারসাম্য ধরে রাখতে না পারায় বল হাতে জমাতে পারেননি বাংলাদেশ উইকেটকিপার। নীতিশ ‘জীবন’ পেলেন ৫ রানে।
আরেকটি স্লোয়ার বল, আরেকটি উইকেট। মোস্তাফিজের অফ স্টাম্পের ধীর গতির বল ড্রাইভ করতে গিয়ে মিড অফে নাজমুলের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব (১০ বলে ৮)। স্পিডোমিটার জানাচ্ছে, মোস্তাফিজের ডেলিভারিটির গতি ছিল ঘণ্টায় ১১৬.৯ কি.মি.।
৪৩ রানে তৃতীয় উইকেট হারাল ভারত। নতুন ব্যাটসম্যান রিংকু সিং।
ছয় ওভার শেষে ভারতের রান ৩ উইকেটে ৪৫। ফিরে গেছেন টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান সঞ্জু স্যামসন, অভিষেক শর্মা ও সূর্যকুমার যাদব। তাঁদের ফিরিয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান ও মোস্তাফিজুর রহমান। স্পিনারদের মধ্যে এক ওভার করেছেন মিরাজ, সে ওভারেই এসেছে ১৫ রান।
ভারতের হয়ে ব্যাটিংয়ে আছেন রিংকু সিং ও নীতিশ রেড্ডি।
প্রথম ওভারে ১৫ রান নিলেও দ্রুত ৩ উইকেট শিকার করে ভারতের রানে লাগাম টেনেছে বাংলাদেশ। এ কারণেই কি না, ভারতকে ম্যাচের প্রথম ছক্কা অষ্টম ওভার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হল!
রিশাদ হোসেনকে স্লগ সুইপে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ৬টি মেরেছেন রিংকু সিং।
৮ ওভার শেষে ভারতের রান ৩ উইকেটে ৬২। রিংকু ১৪, নীতিশ ১২ রানে ব্যাট করছেন।
নিজের প্রথম ওভারে উইকেটশিকারীর তালিকায় নাম লেখাতে পারতেন মাহমুদউল্লাহও। তাঁকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বল ব্যাটে নিতে পারেননি নীতিশ রেড্ডি। প্যাডে লাগার পর আউটই মনে হয়েছে।
কিন্তু আবেদন করলেও আম্পায়ার সাড়া দেননি। বাংলাদেশ রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল স্টাম্পে ঠিকই লাগত। কিন্তু ইমপ্যাক্ট আম্পায়ার্স কল হওয়ায় আবারও বেঁচে গেলেন নীতিশ, যিনি এর আগে লিটনের হাতে ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছেন। রিভিউর আগের বলে ছয় আর পরের বলে চারসহ মাহমুদউল্লাহর ওভারটি থেকে ১৫ রান পেয়েছে ভারত।
ভারতের রান ৯ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৭।
দশম ওভার শেষে পানি পানের বিরতি ঘোষণা করেছেন আম্পায়ার। বিরতির আগে হওয়া শেষ ১৪ বলে ৪৬ রান তুলেছে ভারত। রীতিমতো তাণ্ডব!
দশম ওভারে রিশাদের প্রথম বলে চার নেন রিংকু। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে নীতিশকে স্ট্রাইকে পাঠালে তিনি টানা দুই বলে মারেন ছক্কা। এরপর নীতিশ সিঙ্গেল নিয়ে রিংকুকে স্ট্রাইক দিলে এই বাঁহাতিও মারেন ছক্কা। সব মিলিয়ে ৬ বলে ২৪ রান খরচ রিশাদের। রিশাদের করা আগের ওভারে ব্যাটসম্যানরা নেন এক ছক্কাসহ ৯ রান। মাঝে মাহমুদউল্লাহর ওভার থেকে ওঠে ১৫ রান।
১০ ওভার শেষে ভারতের রান ৩ উইকেটে ১০১। রিংকু ২৬, নীতিশ ৩৬ রানে ব্যাট করছেন।
প্রথম ১৩ বলে নিয়েছিলেন ১৩ রান। মাহমুদউল্লাহ ‘নো’ বল করলে একটি ফ্রি হিট পেয়ে যান। সেই ফ্রি হিটে ছয় মেরে রীতিমতো ঝোড়ো ব্যাটিং শুরু করেন নীতিশ রেড্ডি। ফিফটি পেয়ে গেলেন ২৭তম বলেই। গোয়ালিয়রে আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টি অভিষেক হওয়া এই ডানহাতি ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি করলেন দ্বিতীয় ম্যাচেই।
ভারতের রান ১২ ওভারে ৩ উইকেটে ১২২।
ভারত ছুটছে দুই শ রানের দিকে। মিরাজের করা ইনিংসের ১৩তম ওভার থেকে ২৬ রান তুলেছেন রিংকু–নীতিশরা। এর মধ্যে তিন ছক্কা, এক চারসহ ২৪ রানই নিয়েছেন নীতিশ। এরই মধ্যে চতুর্থ উইকেটে শতরানও হয়ে গেছে।
ভারতের রান ১৩ ওভারে ৩ উইকেটে ১৪৮।
ব্যাট চালালেই বাউন্ডারি—রীতিমতো ‘ত্রাস’ই হয়ে উঠেছিলেন নীতিশ রেড্ডি। ডানহাতি এ ব্যাটসম্যানের ঝড় থামল মোস্তাফিজের স্লোয়ারে। বল উঠল আকাশে, এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ নিলেন মিরাজ। থামল নীতিশের ৩৪ বলে ৭৪ রানের ইনিংস। ৭ ছক্কা ও ৪ চারের যে ইনিংসে প্রথম ১৩ বলে করতে পেরেছিলেন মাত্র ১৩ রান!
ভারতের রান ১৪ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫২। নতুন ব্যাটসম্যান হার্দিক পান্ডিয়া।
নীতিশ রেড্ডির পর ফিফটির দেখা পেলেন রিংকু সিংও। তানজিমের করা ১৬তম ওভারের শেষ তিন বলে বাউন্ডারি (৪,৪,৬) মেরে ২৬ বলে পঞ্চাশ ছুঁয়েছেন এই বাঁহাতি। এটি তাঁর তৃতীয় ফিফটি।
১৬ ওভার শেষে ভারতের রান ৪ উইকেটে ১৮২। রিংকু ৫৩, পান্ডিয়া ১৬ রানে ব্যাট করছেন।
ম্যাচে নিজের শেষ বলে রিংকু সিংকে ফেরালেন তাসকিন আহমেদ। অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট ডেলিভারি পুল করতে গিয়ে বাউন্ডারিতে জাকের আলীকে ক্যাচ দিয়েছেন রিংকু (২৯ বলে ৫৩ রান)।
তাসকিন বোলিং শেষ করলেন ৪–০–১৬–২ ফিগারে।
ভারত ১৭ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ১৮৫। পান্ডিয়ার সঙ্গে ব্যাটিংয়ে রিয়ান পরাগ।
তাসকিনের মতো নিজের শেষ বলে উইকেট পেলেন তানজিমও। ওভারের চতুর্থ ও পঞ্চম বলে তাঁকে ছয় মেরেছেন রিয়ান পরাগ। শেষ বলেও মারতে গিয়ে বল আকাশে তুলে ক্যাচ হয়েছেন মাহমুদউল্লাহর হাতে (৬ বলে ১৫)।
তানজিম বোলিং শেষ করেছেন ৪ ওভারে ৫০ রানে ২ উইকেট নিয়ে।
ভারত ১৯ ওভারে ৬ উইকেটে ২১৩ রান।
তিন পেসার ১২ ওভার করে ফেলায় বিশতম ওভারে একজন স্পিনার আনতেই হতো। বাংলাদেশ অধিনায়ক দায়িত্বটা দিলেন নিজের প্রথম তিন ওভারে ৪৭ রান দিয়ে উইকেটহীন থাকা রিশাদ হোসেনকে।
এই ওভারেই রিশাদ পেলেন সবচেয়ে বড় সাফল্য। দিলেন মাত্র ৮ রান। নিলেন ৩ উইকেট। রিশাদকে তুলে মারতে গিয়ে ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া (১৯ বলে ৩২), বরুণ চক্রবর্তী (২ বলে ০) ও অর্শদীপ সিং (২ বলে ৬)।
টসে হেরে ব্যাট করতে নামা ভারত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ২২১ রান করেছে। এটি আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৭ সালে পচেফস্ট্রুমে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৪ উইকেটে ২২৪ এখনো শীর্ষে।
ভারতের রান দুই শ পেরিয়েছে মূলত নীতিশ রেড্ডি ও রিংকু সিংয়ের কারণে। পাওয়ার প্লের মধ্যে ভারতের তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানকে আউট করে ভালোভাবে ম্যাচে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের দুই তরুণ চতুর্থ উইকেটে ১০৮ রানের জুটি গড়ে দলকে নিয়ে বড় রানের দিকে নিয়ে যান। নীতিশ ফিফটি করেন ২৭ বলে, রিংকু ২৬ বলে।
ইনিংসের ৭ থেকে ১৫— এই আট ওভারের মধ্যে ভারত তোলে ১ উইকেটে ১২০ রান। শেষ ওভারে রিশাদের ৮ রানে ৩ উইকেট পাওয়া বাদ দিলে ম্যাচে বাংলাদেশের স্পিনাররা ভুগেছেন বেশি। তিন পেসারের ১২ ওভার থেকে এসেছে ১০০, তিন স্পিনারের ৮ ওভার থেকে এসেছে ১১৬ রান।
ভারতের ২২১ রান তাড়ায় প্রথম ওভারেই ১৪ রান পেয়েছে বাংলাদেশ। অর্শদীপ সিংয়ের করা ওভারটিতে ৩টি চার মেরেছেন পারভেজ হোসেন।
নীতিশ রেড্ডির করা পরের ওভারে অবশ্য ৬ রানের বেশি আসেনি।
বাংলাদেশ ২ ওভারে বিনা উইকেটে ২০ রান।
অর্শদীপের প্রথম ওভারে তিন চার মেরেছিলেন পারভেজ। একই বোলারের পরের ওভারে বোল্ড হলেন এই বাঁহাতি। অফ স্টাম্পের বাইরের তাঁর ব্যাটে লেগে স্টাম্পে আঘাত হেনেছে (১২ বলে ১৬)। সিরিজের প্রথম ম্যাচেও অর্শদীপের বলে একইভাবে বোল্ড হয়েছিলেন পারভেজ।
নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এসেছেন নাজমুল হোসেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক নিজের প্রথম দুই বলেই মেরেছেন চার।
৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ২৯। নাজমুলের সঙ্গে উইকেটে লিটন দাস।
নেমে প্রথম দুই বলেই চার। ভালো কিছুরই ইঙ্গিত ছিল নাজমুল হোসেনের ব্যাটে। কিন্তু সেটা ওই পর্যন্তই। ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে লং অনে হার্দিক পান্ডিয়ার হাতে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক (৭ বলে ১১)।
নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে এসেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ওভারের শেষ বলে তাওহিদ হৃদয়ের বিরুদ্ধে এলবিডব্লু আউট চেয়ে রিভিউ নিয়েছিল ভারত। সফল হয়নি।
উইকেট–পতনের মিছিলে যোগ দিয়েছেন লিটন দাসও। ম্যাচে বরুণ চক্রবর্তীর প্রথম বলেই বোল্ড হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান (১১ বলে ১৪)। বাংলাদেশ হারাল তৃতীয় উইকেট।
বাংলাদেশ ৬ ওভারে ৩ উইকেটে ৪৩।
টানা তৃতীয় ওভারে উইকেট হারাল বাংলাদেশ। পঞ্চম ওভারে নাজমুল, ষষ্ঠ ওভারে লিটনের পর সপ্তম ওভারে ফিরলেন তাওহিদ হৃদয়। বাঁ হাতি স্পিনার অভিষেক শর্মার বলে বোল্ড হয়েছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান (৬ বলে ২)।
বাংলাদেশ দল ৭ ওভারে ৪ উইকেটে ৫২। ব্যাট করছেন মিরাজ ও মাহমুদউল্লাহ।
জয়ের জন্য লক্ষ্য ২২২, ওভারপ্রতি ১১ রানের বেশি। বাংলাদেশ প্রথম দশ ওভারে নিতে পেরেছে মাত্র ৭০ রান। জিততে হলে শেষ ৬০ বলে আরও ১৫২ রান করতে হবে বাংলাদেশকে, হাতে আছে ৬ উইকেট।
৪৬ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর বাংলাদেশকে টানছেন এখন মিরাজ–মাহমুদউল্লাহ।
ব্যাটিং অর্ডারে পদোন্নতি দিয়ে পাঁচে নামানো হয়েছিল মিরাজকে। তবে বড় লক্ষ্যের ম্যাচে তা কাজে লাগেনি। ১৬ বলে ১৬ রান করে রিয়ান পরাগের বলে লং অফে বদলি ফিল্ডার রবি বিষ্ণয়কে ক্যাচ দিয়েছেন মিরাজ।
বাংলাদেশ ১১ ওভারে ৫ উইকেটে ৮০ রান।
মায়াঙ্ক যাদবের বলটায় গতি ছিল একটু বেশিই—ঘণ্টায় ১৪৭ কি.মি.। জাকের সেটি স্কয়ার লেগ বাউন্ডারিতে ওয়াশিংটন সুন্দরের হাতে তুলে দিয়েছেন (২ বলে ১)।
নতুন ব্যাটসম্যান রিশাদ হোসেন এক বল পরই মেরেছেন চার। বাংলাদেশ ১২ ওভারে ৬ উইকেটে ৮৭।
বরুণ চক্রবর্তীতে মিড উইকেট দিয়ে ওড়াতে চেয়েছিলেন রিশাদ। পান্ডিয়া বেশ খানিকটা দৌড়ে গিয়ে বল হাতেই জমালেন না, শরীরের ভারসাম্য ধরে রেখে ক্যাচও নিশ্চিত করলেন না। টিভি ধারাভাষ্যে বলা হলো, এই ক্যাচ ধরার জন্য ২৭ মিটার জায়গা কাভার করেছেন পান্ডিয়া।
রিশাদের আউটে বাংলাদেশ হারাল সপ্তম উইকেট। নতুন ব্যাটসম্যান তানজিম হাসান।
১৪ ওভার শেষে বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ৯৪।
একের পর এক উইকেট হারানো বাংলাদেশ অবশেষে তিন অঙ্কে পৌঁছাল। ১৫তম ওভারের চতুর্থ বলে মায়াঙ্ক যাদবকে ছক্কা মেরে এক শতে পৌঁছেছে বাংলাদেশের রান। এই এক শ অবশ্য স্রেফ মাইলফলকই। জয়ের লক্ষ্য এখন দূর, বহুদূর...।
ক্রিকেটকে মহা অনিশ্চয়তার খেলা বলা হলেও কখনো কখনো ফল আগেই নিশ্চিত হয়ে যায়। দিল্লিতে বাংলাদেশ–ভারত টি–টোয়েন্টির এই মুহূর্তের পরিস্থিতও তেমনই।
১৮ ওভার শেষে বাংলাদেশ দলের রান ৮ উইকেটে ১২২। বাকি দুই ওভার, জয়ের জন্য দরকার ঠিক ১০০ রান।
বাংলাদেশ এখন হারের ব্যবধান কমানোর চেষ্টায় খেলছে। উইকেটে আছেন ৩৫ বলে ৩৯ রান করা মাহমুদউল্লাহ।
বাংলাদেশ অলআউট হয়নি। ব্যাট করেছে পুরো ২০ ওভার। তাতে ১২০ বল খেলে ৯ উইকেটে করেছে ১৩৫ রান।
ভারতের ২২১ রান তাড়ায় বাংলাদেশের শুরুটা হয়েছিল প্রথম ওভারে ১৪ রান তুলে। কিন্তু তিন চারে শুরু করা পারভেজ হোসেন অর্শদীপের দ্বিতীয় ওভারে বোল্ড হতেই খেই হারাতে শুরু করে বাংলাদেশ। শুরু হয় একের পর এক উইকেটের পতন। দাঁড়ায়নি জুটিও। সর্বোচ্চ ৩৪ রান যোগ হয় মাহমুদউল্লাহ–মিরাজের পঞ্চম উইকেট জুটিতে। আর ব্যক্তিগত পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৩৯ বলে ৪১ রান আসে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে।
ভারতের হয়ে বল হাতে নিয়েছেন ৭ জন। প্রত্যেকেই অন্তত একটি করে উইকেট পেয়েছেন। ভারতের ইনিংসে মোট ছক্কা ছিল যেখানে ১৫টি, বাংলাদেশের ইনিংসে মাত্র ৪টি।
শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৩৫ রানে আটকে থেকে ৮৬ রানের বড় ব্যবধানেই হেরেছে বাংলাদেশ। এই হারে এক ম্যাচ বাকি থাকতে তিন টি–টোয়েন্টি সিরিজ ২–০ ব্যবধানে জিতে নিয়েছে ভারত।
দেশের মাটিতে এ নিয়ে টানা ১৬টি টি-টোয়েন্টি সিরিজে অপরাজিত থাকল ভারত। এই ১৬ সিরিজের ১৪টিই জিতেছে ভারত, ড্র হয়েছে অন্য দুটি।
ভারত: ২০ ওভারে ২২১/৯ (সঞ্জু ১০, অভিষেক ১৫, সূর্যকুমার ৮, নীতিশ ৭৪, রিংকু ৫৩, পান্ডিয়া ৩২, পরাগ ১৫, ওয়াশিংটন ০*, বরুণ ০, অর্শদীপ ৬, মায়াঙ্ক ১*; মিরাজ ০/৪৬, তাসকিন ২/১৬, তানজিম ২/৫০, মোস্তাফিজ ২/৩৬, রিশাদ ৩/৫৫, মাহমুদউল্লাহ ০/১৫)।
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৩৫/৯ (পারভেজ ১৬, লিটন ১৪, নাজমুল ১১, হৃদয় ২, মিরাজ ১৬, মাহমুদউল্লাহ ৪১, জাকের ১, রিশাদ ৯, তানজিম ৮, তাসকিন ৫*, মোস্তাফিজ ১*; অর্শদীপ ১/২৬, নীতিশ ২/২৩, ওয়াশিংটন ১/৪, বরুণ ২/১৯, অভিষেক ১/১০, মায়াঙ্ক ১/৩০, রিয়ান ১/১৬)।
ফল: ভারত ৮৬ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: নীতিশ রেড্ডি।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ভারত ২–০ ব্যবধানে এগিয়ে।