বক্ষ হইতে বাহির হইয়া আপন বাসনা মম/ ফিরে মরীচিকা সম।/ বাহু মেলি তারে বক্ষে লইতে বক্ষে ফিরিয়া পাই না।
বাংলাদেশের এবারের বিশ্বকাপটা যেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘মরীচিকা’ কবিতার এ তিনটি লাইনের মতোই কাটছে। ম্যাচ জয়ের যে ইচ্ছা নিয়ে মাঠে খেলতে নামেন সাকিব আল হাসানরা, সে ইচ্ছা মরীচিকার মতো কোথায় মিলিয়ে যায়! ব্যাটসম্যানরা ভালো রান করা আর শতকের ইচ্ছা নিয়ে মাঠে নামেন, বোলাররাও থাকেন ভালো কিছু করার আশায়, সে–ও যেন মায়াবী মরীচিকা হয়েই আছে এখনো।
এবারের বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত চারটি করে ম্যাচ খেলে ফেলেছে সব কটি দল। ১০ দলের বিশ্বকাপ। ৭টি দলের ব্যাটসম্যানদের কেউ না কেউ শতকের দেখা পেয়েছেন। শতক না পেয়ে এক বিন্দুতে থাকা তিন দল বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও নেদারল্যান্ডস। তিন দলই আবার পেয়েছে একটি করে জয়।
এখন পর্যন্ত এবারের বিশ্বকাপে শতক হয়েছে ১৬টি। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫টি শতক দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের। কুইন্টন ডি কক প্রথম দুই ম্যাচে টানা দুটি শতক পেয়েছেন। প্রথমটি শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। সেই ম্যাচে ডি কক ছাড়াও শতক করেছেন রেসি ফন ডার ডুসেন ও এইডেন মার্করাম। মার্করামের সেই শতক আবার যেনতেন ছিল না। ৪৯ বলে করা তাঁর শতকটি আবার বিশ্বকাপের দ্রুততম।
ডি কক তাঁর দ্বিতীয় শতকটি পেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০২ রানে জয়ের ম্যাচে। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকার চতুর্থ ব্যাটসম্যান হিসেবে এবারের বিশ্বকাপে দলের পঞ্চম শতকটি করেছেন কাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২২৯ রানে জেতা ম্যাচে হাইনরিখ ক্লাসেন।
দুটি করে শতক আছে ভারত, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া দলের। ভারতের শতক দুটির একটি বিরাট কোহলির, অন্যটি রোহিত শর্মার। পাকিস্তানের পক্ষে শতক করেছেন আবদুল্লাহ শফিক ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। কুশল মেন্ডিসের পর শ্রীলঙ্কার হয়ে শতক করেছেন সাদিরা সামারবিক্রমা। নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে শতক পেয়েছেন যথাক্রমে ডেভিড কনওয়ে ও রাচিন রবীন্দ্র এবং মিচেল মার্শ ও ডেভিড ওয়ার্নার। ইংল্যান্ডের একমাত্র শতকটি ডেভিড ম্যালানের।
আফগানিস্তান, নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশ—এই তিন দলের মধ্যে অর্ধশতকের লড়াইয়ে যৌথভাবে ডাচদের সঙ্গে শীর্ষে বাংলাদেশ। দুই দলেই আছে ৬টি করে অর্ধশতক। বাংলাদেশের পক্ষে দুটি করে অর্ধশতক করেছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। অন্য দুটি অর্ধশতক মেহেদী হাসান মিরাজ ও তানজিদ হাসানের। নেদারল্যান্ডসের ৬টি অর্ধশতক ৬ ব্যাটসম্যানের। আফগানিস্তানের পক্ষে ৪টি অর্ধশতক করেছেন ৪ জন।
এই তিন দলের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসটি অবশ্য আফগানিস্তানের রহমানউল্লাহ গুরবাজের। দিল্লিতে ইংল্যান্ডকে হারানো ম্যাচে ৮০ রান করেছেন এই আফগান ওপেনার। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংসটি খেলেছেন লিটন, ধর্মশালায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে করেছেন ৭৬ রান।