অবিশ্বাস্য!
গতকাল গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ১২৮ বলে ২০১ রানের ইনিংস দেখার পর সবার অনুভূতি হয়তো ছিল এমনই। ২৯২ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ৯১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে যখন ধুঁকছিল অস্ট্রেলিয়া, সেখান থেকে ৮ম উইকেটে প্যাট কামিন্সের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ২০২ রানের জুটিতে ১৯ বল বাকি থাকতেই দলকে জিতিয়ে ফেরেন ম্যাক্সওয়েল। এমন এক ইনিংস যিনি খেলেছেন, সেই ম্যাক্সওয়েলের নাকি কোনো অনুভূতি কাজ করছে না! গতকাল ম্যাচ শেষে জানিয়েছেন ম্যাক্সওয়েল নিজেই।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে গতকালের ম্যাচে শতকের পর থেকেই ক্র্যাম্প নিয়ে খেলেছেন ম্যাক্সওয়েল, সিঙ্গেলস নিতে পারেননি, শট খেলছিলেন পা না নড়িয়েই। এমনকি দশম ব্যাটসম্যান অ্যাডাম জাম্পা একাধিকবার ওয়াংখেড়ের ড্রেসিংরুমে সিঁড়ি বেয়ে নেমে এসেছিলেন ক্রিজে নামবেন বলে, কিন্তু ম্যাক্সওয়েল উঠে আসেননি, ইতিহাস রচনার সাধ পেয়ে বসেছিল যে! শেষ পর্যন্ত মাঠ ছেড়েছেন দলকে জিতিয়েই।
ম্যাচ শেষ সংবাদকর্মীদের ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, ‘তরতাজা লাগছে, যদিও অনুভূতি খুব একটা কাজ করছে না। দুর্দান্ত ছিল। মনে হয়েছে আমি আর প্যাটি (প্যাট কামিন্স) মজা করছিলাম। আগামী কয়েক দিনে হয়তো পরিস্থিতি আরও বুঝতে পারব, আশা করছি হ্যামস্ট্রিং ও পায়ের পেছনের মাংসপেশিতে নড়াচড়া ফিরে পাব। বর্তমানে অবস্থা বেশ বাজে।’
গতকাল ম্যাক্সওয়েল প্রথম ৫১ বলে করেছিলেন ৫০ রান, পরের ৫০ করতে লাগে মাত্র ২৫ বল। পরের ১০০ রান তিনি করেছেন মাত্র ৫২ বলে। কীভাবে এমন একটা ইনিংসে খেলে দলকে জিতিয়েছেন সেই কৌশলও বলেছেন ম্যাক্সওয়েল, ‘আমরা জানতাম, শেষ ১৩ ওভারের মধ্যে রশিদের ১৮ বল বাকি ছিল। রশিদকে ম্যাচে প্রভাব ফেলতে না দেওয়ায় আমার মনে হয়েছে অন্য বোলারদের বাউন্ডারি মারতে পারব। রশিদকেই অকার্যকর রাখতে গুরুত্ব দিয়েছি, শেষ দিকে তাকে কোনো ভূমিকা রাখতে দিতে চাইনি। শেষদিকে ম্যাচটা যদি ওর প্রভাবমুক্ত রাখতে পারি, তাহলে সব ঠিক আছে—এই ভাবনা ছিল।’
ম্যাক্সওয়েল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলতে পারেননি। ইংল্যান্ড ম্যাচের আগে আহমেদাবাদের একটি গলফ কোর্সে সতীর্থদের নিয়ে খেলতে গিয়েছিলেন তিনি। এক রাউন্ড খেলার পর গলফ কার্টে (একধরনের ছোট গাড়ি) চড়ে ক্লাব হাউস থেকে টিম বাসের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। এ সময় হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে চলন্ত কার্টের পেছন দিক থেকে পড়ে গেলে মাথায় আঘাত পান।
তবে ম্যাক্সওয়েল আর এমন চোটে পড়তে চান না। এখন থেকে সতর্কই থাকবেন। বলেছেন, আপাতত গলফ কার্ট থেকে দূরে থাকবেন, ‘গত দুই সপ্তাহ অনেক ব্যস্ত গেছে। অদ্ভুত কেটেছে দুই সপ্তাহ। প্রথম দুই ম্যাচের পর তো অনেকেই আমাদের বিশ্বকাপ থেকে বাদ দিয়েই দিয়েছিল। যথাসময়ে টানা ছয়টা জয় তুলে নিয়েছি, আর এমন উদ্দীপ্ত প্রতিপক্ষের বিপক্ষে আমরা আজ আমাদের সেরাটা খেলতে পারিনি। তাই সেমিফাইনালে পৌঁছানো দুর্দান্ত এক অনুভূতি। আর গলফ কার্ট থেকে কিছুদিন দূরে থাকব।’