দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান হাইনরিখ ক্লাসেন
দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যান হাইনরিখ ক্লাসেন

ক্লাসেনের মার দেখে ‘হালাকু খানের’ কথা মনে পড়েছে রমিজের

মুম্বাইয়ে গতকাল ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২৪৩ রানে দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেট হারানোর পর কে ভেবেছিল তাদের ইনিংসটি ৩৯৯-এ গিয়ে থামবে। মার্কো ইয়ানসেনকে নিয়ে অবিশ্বাস্য এই কাজটি করেছেন হাইনরিখ ক্লাসেন। দুজন মিলে ৭৭ বলে গড়েছেন ১৫১ রানের জুটি। ৬৭ বলে ১২ চার ও ৪ ছক্কায় ১৬২.৬৮ স্ট্রাইক রেটে ক্লাসেন করেছেন ১০৯ রান। আর ৪২ বলে ৩ চার ও ৬ ছক্কায় ১৭৮.৫৭ স্ট্রাইক রেটে ৭৫ রান করে অপরাজিত ছিলেন ইয়ানসেন।

এ দুজনের ব্যাটে প্রথম ইনিংস শেষে ইংল্যান্ডকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। এমন পারফরম্যান্সের পর ক্লাসেন ও ইয়ানসেন দারুণভাবে প্রশংসিত হচ্ছেন। ইয়ানসেনকে নিয়ে ক্লাসেন যেভাবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে এগিয়ে নিয়েছেন, সে জন্য তাঁকে হালাকু খানের সঙ্গেও তুলনা করেছেন পাকিস্তানের সাবেক অধিনায়ক রমিজ রাজা। হালাকু খান ছিলেন মঙ্গোলীয় শাসক। যিনি বাগদাদ নগরে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর জন্য পরিচিত। ক্লাসেনের ইনিংসটি রমিজকে তেমনই ধ্বংসযজ্ঞের কথায় মনে করিয়ে দিয়েছে। এ সময় তিনি ক্লাসেনের নামটি আলাদাভাবে মনে রাখার কথাও বলেছেন।

দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড ম্যাচের বিশ্লেষণ করতে গিয়ে নিজের ইউটিউব চ্যানেলে রমিজ প্রথমেই কথা বলেছেন ইংলিশদের অসহায় আত্মসমর্পণ নিয়ে। তিনি বলেছেন, ‘ইংল্যান্ডের জন্য অনেক বাজে একটি দিন ছিল। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছ থেকে বড় একটি হারের স্বাদ পেয়েছে তারা। কেউ এমনটা আশা করেনি। কারণ, ইংল্যান্ড যখন খেলে, তখন নিজেদের মন-প্রাণ দিয়ে খেলে। কিন্তু আজকের ম্যাচটা একেবারেই একপেশে ছিল। ৪০০ রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে তারা তাড়াতাড়ি আউটও হয়ে গেছে।’

বিশ্বকাপে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছেন রমিজ রাজা

বড় রান তাড়া করতে গিয়ে অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ায় ইংলিশদের রান রেটে যে বড় প্রভাব পড়েছে, সেটি মনে করিয়ে দিয়ে রমিজ বলেছেন, ‘নেট রানে এত বড় প্রভাব পড়েছে যে ইংল্যান্ড এখন তলানিতে আফগানিস্তানের সঙ্গী হয়েছে। এটা একদিক থেকে অনেক বড় ধাক্কা। বোলিংয়ে বৈচিত্র্য তো ছিল কিন্তু ধারাবাহিকতা ও শৃঙ্খলা ছিল না। একইভাবে ফিল্ডিংও ছিল গড়পড়তা। আর এক দিক থেকে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ওরাই ম্যাচে ফিরতে দিয়েছে।’

এ সময় ক্লাসনেকে হালাকু খানের সঙ্গে তুলনা করে তাঁর নামটা মনে রাখার কথা বলেন রমিজ, ‘হাইনরিখ ক্লাসেন, এই নাম আপনারা মনে রাখবেন। কারণ, এর আগে তার এত বেশি নাম ছিল না। কিন্তু বড় মঞ্চে এখন সে বড় পারফরম্যান্স করে দেখাচ্ছে। ৬০ বলে কেউ যদি ১০০ রান করে দেখায় (সেটা দুর্দান্ত)। বলা যায় শেষের দিকের ব্যাটসম্যান ইয়ানসেনকে সঙ্গে নিয়ে সে ইনিংসকে ফের দাঁড় করিয়েছে। অবশ্য শুধু দাঁড়ই করায়নি, সে রীতিমতো হালাকু খান হয়ে গিয়েছিল।’

দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং গভীরতার প্রশংসা করে রমিজ আরও বলেছেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং লাইন অনেক গভীর এবং যেকোনো সময় তারা ফিরতি আঘাত দিতে পারে। ক্লাসেন অনেক বড় ইনিংস খেলেছে। কারণ, ২৩০-৪০ রানে ৫ উইকেট পড়ে গিয়েছিল, সেখান থেকে ৪০০ করে ফেলেছে তারা। যেখানে ওভারপ্রতি ১৪ রান করে ১৫০ রানের জুটি গড়েছে এ দুজন, ৬ষ্ঠ উইকেটে এমন জুটি গড়তে পারা অনেক বড় অর্জন। ৫ উইকেট পড়ার পর ইংল্যান্ড হয়তো ভাবছিল আর একটি উইকেট গেলেই তারা ম্যাচে ফিরে আসবে। সে সময় ক্লাসেন শুধু ব্যাটিংই শুধু দুর্দান্ত করেনি, বরং পাল্টা আঘাতে অনেক বড় ইনিংস খেলেছে।’