ব্যাটিংটা যে তিনি ভালোই পারতেন, সেটা তো সারা দুনিয়াই জানে। তবে আরও একটা কাজ বেশ ভালো পারতেন শচীন টেন্ডুলকার, সেটা সম্ভবত তাঁর সতীর্থ ও ড্রেসিংরুমের লোকজন ছাড়া খুব বেশি মানুষ জানতেন না। কী সেটা? প্রাঙ্ক করা, মানুষকে বোকা বানানো। সতীর্থদের সঙ্গেই কাজটা বেশি করতেন টেন্ডুলকার।
৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে ভারতীয় দৈনিক মিড ডে-র সঙ্গে এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে টেন্ডুলকারই শুনিয়েছেন সতীর্থদের নানা সময়ে বোকা বানাতে তিনি কী করেছেন, সেই গল্প। অবশ্য সব সময়ই যে তিনিই এটা করেছেন, তা নয়, নিজেও শিকার হয়েছেন অনেকবার। সেই গল্পও আছে সাক্ষাৎকারে।
বিনোদ কাম্বলির সঙ্গে পরিকল্পনা করে ট্যাপ ছেড়ে সৌরভ গাঙ্গুলীর রুম পানিতে ভাসিয়ে দেওয়ার গল্পটা অবশ্য অনেকেই জানেন। ওই ঘটনাটা ইন্দোরের। সৌরভ নাকি রুমে ঢুকে দেখেছিলেন, তাঁর রুম পানিতে টইটুম্বুর, পানিতে ভাসছে ব্যাট–প্যাড সবকিছু।
তবে নিজের করা সেরা প্রাঙ্কের গল্প শোনাতে গিয়ে টেন্ডুলকার এটা নয়, বলেছেন অন্য এক ঘটনার কথা। সেটারও শিকার কৈশোর থেকে টেন্ডুলকারের সতীর্থ ও বন্ধু সৌরভই। আর ওই ঘটনায় টেন্ডুলকারের সঙ্গে পরিকল্পনায় জড়িত ছিলেন দলের বাকি সব সতীর্থ।
গল্পটা শুনুন টেন্ডুলকারের মুখেই, ‘আমরা কেরালায় ছিলাম। অনুশীলন শেষ হয়েছে। ড্রেসিংরুমে ফিরে সাপোর্ট স্টাফদের সবাইকে বললাম বের হয়ে যেতে। জন (রাইট) ছিল আমাদের কোচ। আমরা বললাম, শুধু খেলোয়াড়েরা উপস্থিত থাকতে পারবে। সাপোর্ট স্টাফদের বলা হলো, খুবই সিরিয়াস কিছু ব্যাপার আছে, যা শুধু দলের খেলোয়াড়েরা আলোচনা করবে। আমরা একসঙ্গে বসলাম এবং আলোচনা শুরু হলো, ‘‘দাদা, তুমি পত্রিকায় কী বলেছ? কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে, ওরা বলেছে, তুমি আমাদের নামে বাজে কথা বলেছ। এটা তো ঠিক নয়। তুমি অধিনায়ক, মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলার সুবিধা একমাত্র তোমারই আছে। কিন্তু এর মানে এই না যে তুমি গিয়ে যা খুশি তা-ই বলবে।” দাদা বলেছিল, ‘‘ঈশ্বরের দোহাই, আমি কিছু বলিনি।” তখন আমরা তাকে মনে করিয়ে দিলাম যে আজ ১ এপ্রিল। কিছু নকল সংবাদপত্র প্রিন্ট করে আনার আইডিয়াটা দারুণ ছিল।’
এ তো গেল টেন্ডুলকারের পরিকল্পনায় অন্যকে বোকা বানানোর গল্প। তিনি নিজেও অনেকবার প্রাঙ্কের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে যেটা সবচেয়ে মজার, টেন্ডুলকার শুনিয়েছেন সেই গল্পটাও, ‘নিউজিল্যান্ডে যখন আমরা ২০০৯ সালের সিরিজটা জিতলাম, ওই সফরের ঘটনা। হরভজন সিংয়ের রুমের বাইরে একটা হট বাথটাব ছিল। হোটেলের একটা পাশে ছিল উন্মুক্ত ব্যালকনি। এর ফলে সবাই গিয়ে সেই বাথটাবে বসতে পারত। সবাই গিয়েছিল। কিন্তু আমি বলেছিলাম, আমার ইচ্ছা করছে না। কিন্তু দলের বাকি সবাই আমাকে বাথটাবে নামাবেই। আমার হাতে ছিল একটা ক্লাব স্যান্ডউইচ। এরপরই যা হলো, সবাই মিলে আমাকে চ্যাংদোলা করে টাবে ফেলে দিল এবং আমি দেখলাম, স্যান্ডউইচটা পানিতে ভাসছে। আসলে আমি বুঝতেই পারিনি ওরা এমন কিছু করবে। জহির (খান), যুবি (যুবরাজ সিং), হরভজন সিং ও আশিস (নেহরা) মিলে কাজটা করেছিল।’