গত দু-এক বছরে বাংলাদেশ দলে সবচেয়ে উন্নতি করা বিভাগ কোনটি? অবশ্যই পেস বোলিং বিভাগ। বাংলাদেশ ক্রিকেটে ইতিবাচক দিক খুঁজতে গেলে ঘুরেফিরে আসে পেস বোলিং নিয়ে আলোচনা। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ হোক কিংবা বড় কোনো টুর্নামেন্ট, ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করছেন শুধু পেসাররাই। সর্বশেষ এশিয়া কাপেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি বোলারদের তালিকায় শীর্ষ দশে আছেন বাংলাদেশের শরীফুল ইসলাম ও তাসকিন আহমেদ। তবে হাসান মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমানও ভালো করছেন। এশিয়া কাপে পেস বিভাগে যোগ দেওয়া তরুণ তানজিম হাসানও এসেই চমক দেখিয়েছেন। চোটে পড়ার আগপর্যন্ত দারুণ ছন্দে ছিলেন ইবাদত হোসেনও। সব মিলিয়ে পেস বিভাগের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এসব নিয়েই কথা বলেছেন বাংলাদেশ দলের পেস বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড।
ডোনাল্ড—নামটা আলাদা করে পরিচয় না করিয়ে দিলেও চলে। দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পরিচিত ছিলেন ‘সাদা বিদ্যুৎ’ নামে। গত বছর মার্চে তাঁকে পেস বোলিং কোচ বানিয়ে নিয়ে এসেছে বিসিবি। এরপর তাঁর অধীনে নতুন বলে পেসারদের উন্নতি চোখে পড়ার মতো। নতুন বলে পাওয়ার প্লের মধ্যে আগে সেভাবে উইকেট নিতে পারত না বাংলাদেশ। ডোনাল্ডের অধীনে বাংলাদেশের পেসাররা যে সেই দক্ষতা ও মানসিকতা অর্জন করেছেন সর্বশেষ এশিয়া কাপই তার প্রমাণ। প্রায় প্রতি ম্যাচেই নতুন বলে উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ভীতিও ছড়িয়েছেন তাসকিন-শরীফুলরা। এর রহস্য কী?
ডোনাল্ড রহস্যটা ভাঙলেন এভাবে, ‘আমি যখন প্রথম এই চাকরিটা নিই, তখন পাওয়ার প্লে’তে বাউন্সার মারায় আমরা অনেক পিছিয়ে ছিলাম। আমি ওদের বলেছি, ফল নিয়ে না ভেবে আক্রমণাত্মক হতে। আমরা পাওয়ার প্লেতে নির্মম হব, সেটা যেভাবেই হোক। ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিতে হলে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের আউট করতে হবে। আপনি যদি রয়েসয়ে খেলেন, তাহলে সারা দিন বল কুড়াতে হবে। আমরা গত এক-দেড় বছরে সামগ্রিকভাবে এই মানসিকতাটা গ্রহণ করেছি।’
ভারতে ৫ অক্টোবর থেকে শুরু হবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। এখন বিশ্বকাপেরই শেষ প্রস্তুতি নিচ্ছে বাংলাদেশ দল। চোটের কারণে এশিয়া কাপের পাশাপাশি বিশ্বকাপেও খেলতে পারবেন না ইবাদত। এতে ‘পরিকল্পনা ওলট-পালট হয়েছে’ জানানোর পাশাপাশি ডোনাল্ড বলেছেন, ইবাদতের অনুপস্থিতি বাংলাদেশ দলের জন্য ‘বিরাট ক্ষতি’। কিন্তু ক্ষতি তো পুষিয়ে নিতে হবেই। সে জন্য ইবাদতের বিকল্প হতে পারেন কে? ডোনাল্ড সম্ভাবনা হিসেবে তানজিম হাসানকে দেখছেন। এশিয়া কাপের সুপার ফোরে ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক অভিষেকেই ৩২ রানে ২ উইকেট নিয়ে চমকে দেন তানজিম।
ডোনাল্ড ২০ বছর বয়সী এই পেসারের বিশ্বকাপে ইবাদতের বিকল্প হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে বলেছেন, ‘সাকিব খুবই ভালো করছে। জানি এটা শুধু এক ম্যাচ, তবে অনুশীলনেও তো তাকে দেখছি। সে ১৪০ কিমির কাছাকাছি বোলিং করছে। দারুণ নিয়ন্ত্রণ, বিশেষ করে পেস অফ ও পেস অনের ক্ষেত্রে...সাকিবের মতো পেসারের জন্য এটা বিশাল এক সুযোগ, বিশ্বকাপে গেলে তা কাজে লাগানোর। ইবাদতকে যতটাই মিস করি না কেন, সাকিবকেও আমাদের গ্রুপে স্বাগত জানাই।’
*** অ্যালান ডোনাল্ডের পুরো সাক্ষাৎকার পড়ুন আগামীকাল ছাপা পত্রিকায় ও অনলাইনে।