এক হাতের আঙুল তুলে আউট দেওয়ার ভঙ্গি, আরেক হাতের আঙুল ঠোঁটে, যেন সবাইকে চুপ করতে বলছেন তানভীর ইসলাম। এবারের বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে খেলা এই বাঁহাতি স্পিনার প্রতিটি উইকেট নেওয়ার পরেই এমন ভঙ্গিতে উদ্যাপন করেছেন।
তানভীরের এ উদ্যাপনের দৃশ্য এখন সবার পরিচিত। কারণ, এবারের বিপিএলে মাত্র ৪ ম্যাচ খেলে ৮ উইকেট শিকার করে শীর্ষ উইকেটশিকারিদের তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে আছেন তানভীর, ইকোনমি মাত্র ৫.৭৫।
মোস্তাফিজুর রহমান ও হাসান আলীর মতো বোলারদের মধ্যেও প্রতিপক্ষের কাছে কুমিল্লার বোলিং আক্রমণে ‘মূল বোলার’ এখন তানভীরই। নিয়ন্ত্রিত বোলিং তো আছেই। সঙ্গে উইকেটও নিচ্ছেন। কুমিল্লার অধিনায়ক ইমরুল কায়েস তো তানভীরকে জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুতই মনে করেন। চট্টগ্রামে এক সংবাদ সম্মেলনে তানভীরের প্রশংসা করে তিনি বলেছেন, ‘সে এখন প্রস্তুত জাতীয় দলে খেলার জন্য। সে মাথা খাটিয়ে বোলিং করে।’
আজ আরেক সতীর্থ মোহাম্মদ রিজওয়ান প্রশংসায় ভাসিয়েছেন তানভীরকে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে কুমিল্লার অনুশীলন শেষে পাকিস্তান জাতীয় দলের সহ-অধিনায়ক জানিয়েছেন, তানভীরের মধ্যে তিনি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছেন। তাঁর কথা, ‘বাংলাদেশের তরুণেরা সবার কাছ থেকে শেখার জন্য মুখিয়ে থাকে। আমি অনেকের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছি, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল। ব্যক্তিগতভাবে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামকে আমি খুবই উঁচুমানের মনে করি। সে অনেক ভালো।’
কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলছেন লিটন দাসও। রিজওয়ানের সঙ্গে কুমিল্লার ইনিংসের সূচনা করছেন লিটনই। আজ প্রসঙ্গক্রমে তাঁর কথাও এল, ‘সবাই জানে লিটন বাংলাদেশের সুপারস্টার। বাংলাদেশের হয়ে গত কয়েক বছর সে অনেক ভালো খেলছে। এখন অনেক ভালো ফর্মে আছে। আলহামদুলিল্লাহ, আমি আর লিটন দাস চেষ্টা করছি। সময়টা অল্প, তবে আমরা চেষ্টা করছি। আমরা চেষ্টা করছি দলের অন্যদের কাজ সহজ করে দেওয়ার।’
কুমিল্লার হয়ে বিপিএল খেলতে কালই ঢাকায় এসেছেন আরেক পাকিস্তানি নাসিম শাহ। আজ দলের সঙ্গে অনুশীলন করেছেন এই তরুণ ফাস্ট বোলার। রিজওয়ানের শহর খাইবার পাখতুনখাওয়ার ছেলে নাসিম। এবারের বিপিএলে দুজনই একই দলে খেলবেন।
রিজওয়ানকে এ নিয়ে বেশ রোমাঞ্চিতই মনে হলো, ‘আমি তাঁকে বলেছি, এই দল পরিবারের মতো। ফরচুন বরিশাল, রংপুরেও আমাদের খেলোয়াড় আছে। বিপিএল হোক, এসএ-২০ বা অন্য যেকোনো লিগ, দলকে মনে করতে হবে পরিবার। নাসিম আমার পাকিস্তান দলের সতীর্থ। জাতীয় দলেও আমাদের দারুণ কম্বিনেশন। সে–ও কেপিকে (খাইবার পাখতুনখাওয়া) থেকে, আমরা আসলে দুজন একই শহরের। আলহামদুলিল্লাহ, আমার ও নাসিমের মধ্যে বোঝাপড়াও ভালো। ইনশা আল্লাহ, আমরা দুজন পারফর্ম করব, কুমিল্লাকে জেতাতে পারব।’