কয়েক দিন ধরেই আলোচনায় পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার হাসান রাজা। এক টেলিভিশন টক শোতে তিনি বলেছেন, ভারতের বোলিংয়ের সময় বিশেষ বল ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এ জন্য মোহাম্মদ শামি-মোহাম্মদ সিরাজরা বাড়তি সুইং পাচ্ছেন। তাঁর এ মন্তব্য সামনে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
হাসান রাজার এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছেন পাকিস্তানের কিংবদন্তি ফাস্ট বোলার ওয়াসিম আকরামও। এ ধরনের মন্তব্যে তিনি নিজেও অপমানিত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন করেছেন আকরাম। পাকিস্তানের টেলিভিশন চ্যানেল এ স্পোর্টসের ‘প্যাভিলিয়ন’ নামের এক টক শোতে হাসান রাজার সমালোচনা করেছেন আকরাম। তখন ম্যাচ চলার সময় বল কীভাবে বাছাই করা হয়, সেই প্রক্রিয়াও ব্যাখ্যা করেছেন ‘সুলতান অব সুইং’ খ্যাত সাবেক এই ক্রিকেটার।
টক শোটিতে দর্শকের কাছ থেকে পাওয়া প্রশ্নের সূত্র ধরে প্রসঙ্গটি সামনে আনেন অনুষ্ঠানের উপস্থাপক। বল নিয়ে কারসাজির সুযোগ আছে কি না, জানতে চাইলে আকরাম বলেছেন, ‘আমি কয়েক দিন ধরে এটা নিয়ে পড়েছি। যা খেয়ে এসব বলা হচ্ছে, সেটা আমিও খেতে চাই। তাদের মাথা ঠিক নেই। নিজেদের তো তারা অপমান করছেই এবং গোটা দুনিয়ার সামনে আমাদেরও করাচ্ছে।’
এরপর কীভাবে বল বাছাই করা হয়, সেটা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আকরাম বলেছেন, ‘ম্যাচের আগে আম্পায়ার আসে। যে দল টস জিতেছে, তারা যদি বোলিং করে, তবে বলের বাক্স নিয়ে তাদের কাছে যায়। যেখানে ১২টি বল থাকে। চার আম্পায়ার, ম্যাচ রেফারি এবং আরও অনেকেই সেখানে থাকে। যারা আগে বল করবে, তারা নিজেদের প্রথম পছন্দের বল বাছাই করে নেয়। এরপর তারা নিজেদের দ্বিতীয় পছন্দের বলটিও বাছাই করে। আম্পায়ার তখন দুটি বল দুই পকেটে রাখেন। কারণ, একটি বল নষ্ট হলে বা কোনো কারণে বদলাতে হলে তখন অন্য বলটি বেছে নেয়।’
ওয়াসিম আকরাম আরও যোগ করে বলেছেন, ‘এরপর বাকি বলগুলো বক্সে করে এবং অনেক মানুষ সঙ্গে নিয়ে অন্য ড্রেসিংরুমে নিয়ে যায় তারা। সেখানে দলটি নিজেদের পছন্দ মতো দুটি বল বাছাই করে। এরপর সেগুলো সঙ্গে নিয়ে ওপরে গিয়ে চতুর্থ আম্পায়ারের কাছে যায় এবং মাঠে দায়িত্ব পালন করা আম্পায়ারকে বলগুলো বুঝিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে বলগুলো দেওয়া হয়, সেখানে ম্যাচ রেফারিসহ অনেকে উপস্থিত থাকে। তো এসব (উদ্ভট ভাবনা) কীভাবে মাথায় আসে?’
উপস্থাপক পাল্টা জিজ্ঞেস করে বলেন, ‘তার মানে আপনি বলতে চাইছেন, বলের মধ্যে কোনো ডিভাইস রাখা হয়নি?’ আকরাম তখন বলেছেন, ‘ডিভাইস দিয়ে কীভাবে সুইং হতে পারে? তর্কের খাতিরে যদিও বলতেও হয়, তবে বলা যায়, যদি সুইং করাতে হয়, তবে একটা পাশ ভারী এবং অন্য পাশ হালকা করে নিতে পারে। ডিভাইস দিয়ে তো আর সুইং হবে না।’
এ সময় ভারতীয় বোলারদের প্রশংসা করার কথাও বলেছেন আকরাম, ‘শেষ তিন থেকে চার দিনে আমাদের দেশের অনেকে ভাবছে, কারও দ্বারাই তো সুইং হচ্ছে না (শুধু ভারতীয় বোলারদের হচ্ছে)। কিন্তু এটাও ভাবতে হবে যে ভারতের বোলাররা হয়তো আরও বেশি কিছু শিখছে। তারা হয়তো এখন অন্যদের চেয়ে ভালো। হয়তো তারা ভালো ছন্দে আছে।’
এর আগে হাসান রাজা বলেছিলেন, ‘আমরা দেখেছি তারা (ভারত) যখন ব্যাট করতে নামে, তখন তারা খুব ভালোভাবেই ব্যাট করতে পারে। কিন্তু হঠাৎ করেই ভারত বল করার সময় বল সুইং করতে শুরু করে। বল নিয়ে তদন্ত হওয়া জরুরি।’