রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মুখোমুখি হওয়ার আগে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছেন গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দ
রবিচন্দ্রন অশ্বিনের মুখোমুখি হওয়ার আগে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছেন গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দ

‘খেলা হবে সাদা বনাম সাদার’—অশ্বিনকে চ্যালেঞ্জ গ্র্যান্ডমাস্টার আনন্দের

দুজনই ক্রীড়াঙ্গনের মানুষ, দুজনের উঠে আসাও ভারতের একই রাজ্য তামিলনাড়ু থেকে। একজন আবার আরেকজনের ভক্ত ও শুভানুধ্যায়ী। তবে দুজনের খেলার জায়গা আলাদা। রবিচন্দ্রন অশ্বিন তাঁর ঘূর্ণি জাদু দেখান ক্রিকেট মাঠে আর বিশ্বনাথন আনন্দ তাঁর খেল দেখান দাবার বোর্ডে।

কেমন হয়, যদি অশ্বিন–আনন্দকে একসঙ্গে ক্রিকেট খেলতে দেখা যায়? সে রকম কিছুরই আয়োজন করতে যাচ্ছেন ভারতের কিংবদন্তি দাবাড়ু আনন্দ। ৫৪ বছর বয়সী এ গ্র্যান্ডমাস্টার অশ্বিনের মুখোমুখি হতে জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন আনন্দ। সেখানে ব্যাট হাতে তাঁকে বড় শট খেলতে দেখা যাচ্ছে। ৭ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে অশ্বিনকে উল্লেখ করে আনন্দ লিখেছেন, ‘এই যে রবিচন্দ্রন অশ্বিন, তোমার মুখোমুখি হওয়ার আগে অফ স্পিন খেলে নিজেকে ঝালিয়ে নিচ্ছি। এই গ্রীষ্মে কালো–সাদা (দাবার চাল) নয়; সাদা বনাম সাদার (টেস্ট ম্যাচ) খেলা হবে!’

আনন্দের পোস্টে মন্তব্য করতে দেরি করেননি অশ্বিন। ৩৭ বছর বয়সী এই অফ স্পিনার লিখেছেন, ‘স্যার, আমিও সে রকম কিছুর প্রত্যাশায় আছি।’

ভারত–ইংল্যান্ড সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজে ২৬ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ছিলেন অশ্বিন। ওই সিরিজেই দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে ৫০০তম টেস্ট উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন। এরপর গড়েন ১০০ টেস্ট খেলার কীর্তি।

অশ্বিনের ১০০তম টেস্ট উপলক্ষে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম একটি ভিডিও পোস্ট করে। সেই ভিডিওতে অশ্বিনকে নিয়ে আনন্দকে বলতে শোনা যায়, ‘তুমি ক্রিকেটারদের দাবাড়ু।’  

গ্র্যান্ডমাস্টার আনন্দ যেমন ক্রিকেট খেলতে ভালোবাসেন, অশ্বিনও তেমন সুযোগ পেলেই দাবা খেলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন। হোটেলে, বিমানে কিংবা অনলাইনে যেখানেই সুযোগ পান, দাবায় মজেন অশ্বিন।

১৯৮৮ সালে গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব পান বিশ্বনাথন আনন্দ। দাবায় বিশেষ অবদানের জন্য প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে ১৯৯১–৯২ মৌসুমে ভারতের সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মাননা খেলরত্ন পুরস্কার পান। ২০০০ সালে বিশ্ব ব্লিটজ কাপ জেতেন আনন্দ। ২০০৩ ও ২০১৭ সালে জেতেন ফিদে বিশ্ব র‍্যাপিড চেস চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০০৮ সালে শচীন টেন্ডুলকারের সঙ্গে যৌথভাবে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মবিভূষণ পান আনন্দ।

দাবার নেশা পেয়ে বসলে অশ্বিন এভাবেই খেলতে থাকেন

অশ্বিন ২০১৬ সালে আইসিসির বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পান। সে বছর বর্ষসেরা টেস্ট ক্রিকেটারের পুরস্কারও ওঠে তাঁর হাতে। দলীয়ভাবে তিনি জিতেছেন ওয়ানডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও এশিয়া কাপ। ক্রিকেটে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৫ সালে ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্রীড়া সম্মাননা অর্জুন পুরস্কার জেতেন অশ্বিন।