দক্ষিণ আফ্রিকাকে কলকাতায় উড়িয়ে দিয়েছে ভারত
দক্ষিণ আফ্রিকাকে কলকাতায় উড়িয়ে দিয়েছে ভারত

২ নম্বর দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৪৩ রানে হারিয়ে ১ নম্বর ভারতের আটে আট

পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দুই দল, সেমিফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেছে আগেই। সেভাবে কারও তেমন কিছু হারানোর নেই বলে কলকাতায় ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার লড়াইটি হওয়ার কথা ছিল নকআউটের আগে নিজেদের ঝালাই করে নেওয়ার। কিন্তু সেটি হলো বড়ই একপেশে। ১ নম্বর দল ভারত ম্যাচটি জিতেছে ২৪৩ রানের ব্যবধানে! বিরাট কোহলির রেকর্ড ছোঁয়া শতকের পর ৩২৬ রান তুলেছিল ভারত, রবীন্দ্র জাদেজার ৫ উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা গুটিয়ে গেছে ৮৩ রানেই। বিশ্বকাপে এটিই তাদের সর্বনিম্ন স্কোর। ফলে ভারত জিতল টানা আটটি ম্যাচ, অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের পর দক্ষিণ আফ্রিকা হারল প্রথমবার। দুটিই আবার রান তাড়া করতে নেমে।

আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৫৫ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল ভারত, এমন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে রান তাড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা শুরু থেকেই ছিল খোলসবন্দী। নতুন বলের চাপ কমিয়ে খেলার কৌশল কাজে আসেনি একেবারেই। প্রথম ১০ ওভারের মধ্যেই কুইন্টন ডি কক, টেম্বা বাভুমা ও এইডেন মার্করামকে হারিয়ে কোণঠাসা দক্ষিণ আফ্রিকা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। ভারতের পেস বোলিং আছে আলোচনায়, কিন্তু তাদের স্পিনাররাও তো কম যান না! জাদেজার ৫ উইকেটের সঙ্গে কুলদীপ যাদব ২ উইকেট নিয়ে সেটিই প্রমাণ করলেন আরেকবার।

মিডল অর্ডারে হাইনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলারের পর কেশব মহারাজ ও কাগিসো রাবাদার উইকেটও নেন জাদেজা। রাবাদার উইকেটটিই জাদেজার পঞ্চম। দিনটিতে প্রায় সবকিছুই পক্ষে গেছে ভারতের। ক্লাসেন ও রেসি ফন ডার ডুসেন—দুটি উইকেটই তারা পরপর দুই ওভারে পেয়েছে দুটি সফল রিভিউয়ে। অন্যদিকে পুরোই বিপরীত অবস্থা দক্ষিণ আফ্রিকার।

৮৩ রানেই গুটিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকা

টসে জিতে ব্যাটিং নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। কলকাতার উইকেট ছিল ধীরগতির, কিন্তু শুরুতে ঝোড়ো শুরু এনে দেন অধিনায়ক নিজেই। ইনিংসের ৩৫তম বৈধ ডেলিভারিতে রাবাদার বলে টেম্বা বাভুমার দারুণ ক্যাচে পরিণত হওয়ার আগেই রোহিত ২৪ বলে খেলেন ৪০ রানের ইনিংস, প্রথম ১০ ওভারেই ভারত তোলে ৯১ রান।

কিন্তু পরের ১০ ওভারে মাত্র ৩৩ রান তুলতে পারে ভারত; কারণ, কেশব মহারাজের দারুণ আঁটসাঁট বোলিং। ১০ ওভারে এই বাঁহাতি স্পিনার দেন মাত্র ৩০ রান। প্রথম পাওয়ার প্লের পরপরই শুবমান গিলকেও থামান তিনি। কিন্তু শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে কোহলির জুটি ভারতকে এমন উইকেটে এনে দেয় দারুণ এক শক্ত ভিত। ৮৭ বলে ৭৭ রানের ইনিংসে কোহলিকে দারুণ সঙ্গই দেন শ্রেয়াস। লোকেশ রাহুল এরপর তেমন কিছু করতে পারেননি, সূর্যকুমার যাদব ১৪ বলে ২৪ ও শেষ দিকে জাদেজা খেলেন ১৫ বলে ২৯ রানের দুটি ক্যামিও ইনিংস।

শচীন টেন্ডুলকারের ৪৯ শতকের রেকর্ড ছুঁয়ে ফেলেছেন বিরাট কোহলি

কিন্তু দিনটি ছিল কোহলিরই। ৬৭ বলে অর্ধশতক পাওয়া কোহলি শচীন টেন্ডুলকারের রেকর্ড ৪৯ শতক ছুঁয়ে ফেলেন ১১৯ বলে। ৮৩.৪৭ স্ট্রাইক রেটের ইনিংসে ১০টি চার মারলেও একটি ছক্কা নেই। যা বলে দেয় কতটা ঝুঁকিমুক্ত থেকে খেলতে চেয়েছেন কোহলি। ইনিংস বিরতিতে কোহলি নিজেই বলেছিলেন, ‘পার’ স্কোরের চেয়ে বেশিই তুলেছে তাঁর দল। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাকে যে এভাবে দুমড়ে–মুচড়ে দেবেন তাঁদের বোলাররা, কোহলি কি সেটি ভাবতে পেরেছিলেন!