মাথায় আঘাত পেয়ে ছিটকে গেছেন অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান উইল পুকোভস্কি। হোবার্টে শেফিল্ড শিল্ডে তাসমানিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের সময় রাইলি মেরেডিথের বাউন্সার হেলমেটে বাজেভাবে আঘাত করে পুকোভস্কির। এ ম্যাচে আর খেলতে পারবেন না তিনি। ক্যারিয়ারে এর আগে বেশ কয়েকবার কনকাশনে পড়েছিলেন ২৬ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। যার সর্বশেষটি এক ম্যাচ আগেই।
আজ মুখোমুখি দ্বিতীয় বলে মাথায় আঘাত পান তিনি। সঙ্গে সঙ্গে হাঁটুতে ভর দিয়ে ক্রিজে বসে পড়েন। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার চিকিৎসক ও ভিক্টোরিয়ার ফিজিও ছুটে গিয়েছিলেন। অবশ্য একটু পর নিজে হেঁটে মাঠ থেকে বের হয়ে আসেন পুকোভস্কি। তাঁর জায়গায় কনকাশন বদলি হিসেবে ক্যাম্পবেল কেলাওয়েকে নিয়েছে ভিক্টোরিয়া। চতুর্থ ইনিংসে ৪৪২ রান তাড়া করা ভিক্টোরিয়ার আগামীকাল শেষ দিন ২ উইকেট হাতে রেখে দরকার ৬৯ রান।
ক্রিকেট ভিক্টোরিয়া পুকোভস্কিকে নিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘মাঠ ছেড়ে যাওয়া পুকোভস্কি মেডিকেল স্টাফের পর্যবেক্ষণে আছেন। আরও বিস্তারিত পরে জানানো হবে।’
এ মৌসুমে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার মাথায় আঘাত পেলেন ২০২১ সালে একমাত্র টেস্ট খেলা পুকোভস্কি। জানুয়ারিতে অ্যাডিলেডে সাউথ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ভিক্টোরিয়ার দ্বিতীয় একাদশের ম্যাচে মাথায় আঘাত পেয়েছিলেন। প্রাথমিক পরিচর্যার পর ব্যাটিং চালিয়ে গেলেও পরে ‘ডিলেইড’ বা ‘বিলম্বিত’ কনকাশন ধরা পড়ে। ফলে শেফিল্ড শিল্ডের পরের রাউন্ডের ম্যাচ থেকে ছিটকে যান তিনি। ফেরার পর সর্বশেষ ম্যাচে সেঞ্চুরিও পান। যেটি শেফিল্ড শিল্ডে প্রায় তিন বছর সময়ের মধ্যে প্রথম তাঁর।
একদম জুনিয়র পর্যায় থেকে হিসাব করলে (যখন অন্য খেলাতেও ছিলেন) এ নিয়ে ১১ বার কনকাশনে পড়লেন তিনি। অবশ্য সে সংখ্যা আরও বেশি বলে কোথাও কোথাও হিসাব আছে। মাঝে মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে ক্রিকেট থেকে বিরতিও নিয়েছিলেন বেশ মেধাবী হিসেবে বিবেচিত এ ব্যাটসম্যান।
এ নিয়ে এর আগে কথাও বলেছেন তিনি। এ বছরের শুরুতে ভিক স্টেট ক্রিকেট পডকাস্টে তিনি বলেছিলেন, ‘যখন ১৫ বা ১৬ বছর বয়স, তখন প্রথম কনকাশন হয়। আমার মনে হয় আমার মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারগুলো সেখান থেকেই শুরু। আমার কনকাশনের অনেক উপসর্গ আছে প্রায় সাত বা আট বছর ধরে। এগুলো আসলে কখনোই সরেনি।’
সেগুলো সঙ্গে নিয়ে চলার উপায়ও নাকি বের করেছেন তিনি। তবে শারীরিক আঘাতের চেয়েও মানসিক ব্যাপার নিয়ে তাঁর দুশ্চিন্তা বেশি, ‘দীর্ঘ মেয়াদে আমার শারীরিক স্বাস্থ্য নিয়ে ভয় পাই না। তবে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপারটি বেশি কঠিন।’
এরপর তিনি বলেছিলেন, ‘একদিন আমি পুরো গল্পটা বলতে তৈরি হব। হয়তো তখন আমার কথার অর্থ বোঝা যাবে। আমি আসলে আমার কাছের মানুষদের কাছে এটি ব্যাখ্যা করেছি। তবে তাদের প্রতিক্রিয়া ছিল এমন, “ঈশ্বর, আমি কখনোই এমনটি ভাবতে পারি না। এর কোনো মানে হয় না।” আমিও দীর্ঘ সময় এটা বুঝিনি। তবে এখন সেগুলো বোঝার পথে এগোচ্ছি।’