এক দল করেছে ৪ উইকেটে ১৮৭। আরেক দল সেই রান টপকে গেছে ২ ওভার হাতে রেখে। টি-টোয়েন্টিতে এমন ম্যাচই দেখতে চায় দর্শক। ফরচুন বরিশাল ও খুলনা টাইগার্স বিপিএলের ঢাকা পর্বের শেষ ম্যাচে সেই চাওয়া মিটিয়ে দিয়েছিল। সেই ম্যাচ শেষে খুলনার অধিনায়ক এনামুল হক বলেছিলেন, ‘এমন ম্যাচ টুর্নামেন্ট জমিয়ে তুলতে সাহায্য করবে। দর্শক এমন ক্রিকেট দেখতে মাঠে আসবে।’
এনামুলের ভাবনা ভুল ছিল না। কিন্তু মাঠের বাস্তবতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিপিএলের সিলেট পর্বে বরিশাল-খুলনা সেই ম্যাচের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলা দেখা যায়নি। বেশির ভাগ ম্যাচই ছিল একপেশে ও কম রানের। স্পিনারদের দাপট ছিল সিলেট পর্বের ১২ ম্যাচেই। এমনিতে ব্যাটিংবান্ধব সিলেটের উইকেট ছিল অতিরিক্ত ক্রিকেটে মন্থর, কখনো কখনো টার্নিংও। ঘরের মাঠে সিলেট স্ট্রাইকার্সের বাজে পারফরম্যান্সও বিপিএলের সিলেট পর্বকে ম্যাড়মেড়ে করতে ভূমিকা রেখেছে।
সিলেট পর্ব শেষে আজ আবার বিপিএল ফিরছে ঢাকায়। যেখানে প্রথম পর্বের ৬ ম্যাচে গড় প্রথম ইনিংস স্কোর ১৪৯.৬৬। রাতের ম্যাচে কিছু রান হওয়ায় রক্ষা, না হলে অঙ্কটা আরও কম হতো। ঢাকায় এই পর্বে খেলা হবে ৮টি। স্বাভাবিকভাবেই বড় রানের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ক্রিকেটের আশায় থাকবে বিপিএল।
আজ দুর্দান্ত ঢাকা-রংপুর রাইডার্স, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স-ফরচুন বরিশাল ম্যাচের জন্য যে উইকেট প্রস্তুত করা হয়েছে, তাতে রাখা হয়েছে সবুজ ঘাস। আর যা-ই হোক, উইকেট যেন মন্থর না হয়—এই ভাবনা থেকেই ঘাসের উইকেট তৈরি করা।
এ তো গেল উইকেটের কথা। ঢাকা পর্ব থেকেই বিপিএল একে একে তারকা ক্রিকেটারদের হারাতে শুরু করবে। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ক্রিকেটারদের ঢাকা পর্বেই বিপিএল ছাড়ার কথা। পাকিস্তানের দুই তারকা ক্রিকেটার—রংপুর রাইডার্সের বাবর আজম ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মোহাম্মদ রিজওয়ানকে আগামীকাল পর্যন্ত পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের অনাপত্তিপত্র দেওয়া আছে।
তবে পাকিস্তানের টি-টোয়েন্টি লিগ পিএসএল যেহেতু শুরু হবে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি, বাবর-রিজওয়ানদের আরও কিছুদিন ধরে রাখার চেষ্টা করছে ফ্র্যাঞ্চাইজি দুটি। পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় চুক্তির বাইরের ক্রিকেটাররা অবশ্য আরও দুই সপ্তাহ থাকছেন বিপিএলে।
শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে যোগ দিতে বিপিএল ছাড়বেন আরও কয়েকজন। রংপুরের আজমতউল্লাহ ওমরজাই, চট্টগ্রামের নজিবউল্লাহ জাদরান ও আভিস্কা ফার্নান্ডো আছেন এ তালিকায়। খুলনা টাইগার্স ছাড়বেন দাসুন শানাকা। তবে খুলনার ভাগ্য ভালো, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও অস্ট্রেলিয়ার ওয়ানডে সিরিজ শেষ হলেই বিপিএলে ফিরবেন শাই হোপ, ওশান টমাসরা। দুজনই ১৩ ফেব্রুয়ারি শুরু চট্টগ্রাম পর্বে বিপিএলে যোগ দেবেন।
বিপিএলের নিয়মিত মুখ আন্দ্রে রাসেল, সুনীল নারাইনকেও তখন পাবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সে দেখা যাবে আরেক ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার রোমারিও শেফার্ডকে, সঙ্গে থাকবেন ইংলিশ ওপেনার ফিল সল্টও।
বিপিএলের ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো তাকিয়ে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিকেও। দক্ষিণ আফ্রিকার টি-টোয়েন্টি লিগ এসএ২০ শেষ হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। এই টুর্নামেন্ট শেষ হলেই ফরচুন বরিশালে যোগ দেওয়ার কথা প্রোটিয়া তারকা ডেভিড মিলারের। এ ছাড়া একাধিক ফ্র্যাঞ্চাইজি কুইন্টন ডি কক ও হাইনরিখ ক্লাসেনকে দলে ভেড়াতে চাইছে।
এসএ২০ শেষ হলে উইন্ডিজ তারকা নিকোলাস পুরানকে পাবে রংপুর রাইডার্স। বিপিএলের শেষ দুই সপ্তাহে কিছু খেলোয়াড় আসবে আমিরাতের আইএল টি-টোয়েন্টি থেকে। ১৭ ফেব্রুয়ারি এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল।
দক্ষিণ আফ্রিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের এই দুটি টি–টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শেষের অপেক্ষায় আছে তাই বিপিএলের অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজিও।