শাহিন আফ্রিদি ও বাবর আজম
শাহিন আফ্রিদি ও বাবর আজম

শাহিনের অধিনায়কত্ব সমর্থন করা উচিত ছিল বাবরের: শহীদ আফ্রিদি

বিশ্বকাপের তিন মাস আগে অধিনায়ক পরিবর্তন নিয়ে পাকিস্তান ক্রিকেটে কম আলোচনা হয়নি। মাত্র এক সিরিজ পরই শাহিন আফ্রিদিকে সরিয়ে দেওয়া এবং বাবর আজমকে ফেরানোর ঘটনায় দলের মধ্যে বিভেদ তৈরির গুঞ্জনও শোনা গিয়েছিল সে সময়। এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম পর্ব থেকে পাকিস্তানের বিদায়ের পর আবারও আলোচনায় অধিনায়ক প্রসঙ্গ।

সাবেক অধিনায়ক শহীদ আফ্রিদি বলেছেন, শাহিন শাহ আফ্রিদির অধিনায়কত্বকে সমর্থন করা উচিত ছিল বাবরের। ওই সময় তিনি নেতৃত্ব না নিয়ে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারতেন। তবে অধিনায়ক বদলের ঘটনায় বাবরকে সম্পূর্ণ দায় দিচ্ছেন না আফ্রিদি। বরং নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে পিসিবিরই ভূমিকা দেখছেন এতে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কাছে হেরে বিদায়ের শঙ্কায় পড়ে পাকিস্তান। তৃতীয় ম্যাচে নেপালকে হারালেও বাবরকে সুপার এইট নির্ভর করছিল গ্রুপের অন্য দলগুলোর ওপর। শুক্রবার আয়ারল্যান্ড-যুক্তরাষ্ট্র ম্যাচ প্রতিকূল আবহাওয়ায় পণ্ড হয়ে গেলে ১ পয়েন্ট পেয়ে পরের পর্ব নিশ্চিত করে যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়ে যায় পাকিস্তান।

বিশ্বকাপে পাকিস্তানের এই ব্যর্থতার ক্ষণটি এসেছে টালমাটাল ছয় মাসের জেরে। গত বছরের নভেম্বরে পাকিস্তান ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হলে বাবরকে চাপ দিয়ে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। জাকা আশরাফের নেতৃত্বাধীন পিসিবি টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব দেয় শাহিনকে, টেস্টে শান মাসুদকে। নতুন দুই অধিনায়কের অধীনে একটি করে সিরিজ খেলে পাকিস্তান। এ বছরের প্রথম দিকে পিসিবির শীর্ষ পদে বসেন মহসিন নাকভি, এর কিছুদিন পর সাদা বল ক্রিকেটে বাবরকে অধিনায়ক হিসেবে ফিরিয়ে আনা হয়।

এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রথম পর্ব থেকে পাকিস্তানের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে সেই নেতৃত্ব বদলের প্রসঙ্গটি তুলেছেন শহীদ আফ্রিদি। পিসিবি ও বাবরের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘শাহিনকে অধিনায়কত্ব দিলেন, বললেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবে। তখন বাবরের উচিত ছিল শাহিনকে সমর্থন করা। (আবার নেতৃত্ব প্রস্তাব করার পর) তার বলা উচিত ছিল, “না, আপনারা ওকে (শাহিন) অধিনায়ক বানিয়েছেন। আমরা ওর নেতৃত্বেই খেলব। কারণ, ওর সঙ্গে আমি অনেক দিন ধরে খেলছি। অধিনায়ক বানিয়েছে নির্বাচক কমিটি। আমি ওর নেতৃত্বকে সমর্থন করি।” এ অবস্থানটা বাবরের নেওয়া দরকার ছিল। আর সেটা করলে বাবরের সম্মান বাড়ত, একটা দৃষ্টান্ত তৈরি হতো।’

তবে শাহিনকে এক সিরিজ পরই সরিয়ে দেওয়া এবং নিজে নেতৃত্ব দেওয়ার বিষয়ে বাবরকে সম্পূর্ণ দায় দেওয়ার সুযোগও নেই বলে মনে করেন শহীদ আফ্রিদি, ‘এখানে বাবরকে পুরোপুরি দোষও দেওয়া যায় না। কিছু দায় নির্বাচকদের কাঁধে বর্তায়। কারণ, কয়েকজন নির্বাচক প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, কীভাবে অধিনায়কত্ব করতে হয় বাবর জানে না।’

ভারতের কাছে হারের পর পিসিবি চেয়ারম্যান নাকভি পাকিস্তান দলে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। অনেকেই বলাবলি করছেন বিশ্বকাপের পর আট-নয়জন খেলোয়াড় বাদ পড়বেন। তবে এমন কিছু ঘটার সুযোগই নেই বলে মনে করেন আফ্রিদি, ‘শুনছি ৮-৯ জন নাকি বাদ দিয়ে দেবে। এটা তখনই করা যায়, যখন আপনার হাতে অনেক খেলোয়াড় থাকে। আপনি যদি খেলোয়াড় বাবরকে সরাতে চান, ওর মতো কেউ আপনার হাতে আছে? রিজওয়ানের বিকল্প হওয়ার মতো কেউ আছে? বড় পরিবর্তনের কথা তখনই বলা যায়, যখন আপনার বেঞ্চ শক্তিশালী থাকে।’

বিশ্বকাপ থেকে দেশে ফেরার আগে পাকিস্তান দল তাদের শেষ ম্যাচ খেলবে আগামীকাল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।