গলে আজ শেষ দিনের খেলা শুরুর আগে সিরিজের সম্প্রচারকারী চ্যানেলের সঞ্চালকের সঙ্গে কথা হয়েছে প্রবাত জয়াসুরিয়ার। লঙ্কান এই বাঁহাতি স্পিনার বলেন, ‘আমরা যদি ১০০ ভাগ দিতে পারি, আমার মনে হয় কাজটা দ্রুতই সেরে ফেলতে পারব।’
জয়াসুরিয়া কোন কাজের কথা বলেছেন, বুঝতেই পারছেন। উপমহাদেশে কোনো টেস্টের শেষ দিনে একজন স্পিনারের সবচেয়ে বড় কাজ তো টপাটপ উইকেট এনে দেওয়া। স্পিনাররা যে এ সময় পিচ থেকে বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকেন। কিন্তু গতকাল চতুর্থ দিনে শ্রীলঙ্কা ও জয়ের মধ্যে ব্যবধান হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন রাচিন রবীন্দ্র। তবে নিউজিল্যান্ডের এই অলরাউন্ডার জয়াসুরিয়ার সামনে আজ আর দেয়াল তুলে দাঁড়াতে পারলেন না।
রবীন্দ্র এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলার পর উইলিয়াম ও’রুর্ককে বোল্ড করলেন জয়াসুরিয়া। তাঁর ঘূর্ণিতে শেষ দিনে কিউইরা টিকতে পারল মাত্র ১৬ মিনিট ও ২২ বল। তাতে ৬৩ রানের জয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শ্রীলঙ্কা। জয়ের জন্য আজ আরও ৬৮ রান দরকার ছিল নিউজিল্যান্ডের; হাতে ছিল ২ উইকেট। কিন্তু কিউইরা আজ আর মাত্র ৪ রান তুলতে পেরেছে।
গলে বুধবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামে শ্রীলঙ্কা। কামিন্দু মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে প্রথম ইনিংসে তারা করে ৩০৫ রান। জবাবে তিন ফিফটিতে প্রথম ইনিংসে ৩৫ রানের লিড নেয় নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে এজাজ প্যাটেলের ৬ উইকেটে লঙ্কানরা ৩০৯ রানে অলআউট হলে কিউইদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৭৫ রান।
নিউজিল্যান্ড এই রান তুলতে পারলে তা হতো গল টেস্টে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড। কিন্তু তা হতে দিলেন না জয়াসুরিয়া।
সফরকারীদের আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে থাকা রবীন্দ্র আউট হয়েছেন ৯২ রানে। ও’রুর্ক মেরেছেন ‘ডাক’। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নেওয়া জয়াসুরিয়ার হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন ৩২ বছর বয়সী এই বাঁহাতি স্পিনার, যা টেস্ট ক্যারিয়ারে তাঁর অষ্টম ‘ফাইফার’। এর সাতটিই নিয়েছেন গলে।
মজার ব্যাপার হলো লঙ্কানরা এই টেস্ট খেলল দুজন প্রেসিডেন্টের সময়ে। যখন এই টেস্ট খেলতে নামে, তখন দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন রনিল বিক্রমাসিংহে।
টেস্টের মধ্যে গত শনিবার ১ দিনের বিরতি ছিল প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কারণে। সেই নির্বাচনে বিক্রমাসিংহেকে হারিয়ে শ্রীলঙ্কার নতুন প্রেসিডেন্ট হয়েছেন অনূঢ়া কুমারা দিশানায়েকে। স্বাভাবিকভাবেই নতুন প্রেসিডেন্টের সময়ে এটাই লঙ্কান ক্রিকেট দলের প্রথম জয়।
দুই দলের সিরিজ নির্ধারণী টেস্টও হবে গলে। ম্যাচ শুরু আগামী বৃহস্পতিবার।
শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৯১.৫ ওভারে ৩০৫
(কামিন্দু ১১৪, কুশল ৫০, ও’রুর্ক ৫/৫৫, ফিলিপস ২/৫২)।
নিউজিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৯০.৫ ওভারে ৩৪০
(ল্যাথাম ৭০, মিচেল ৫৭, উইলিয়ামসন ৫৫; জয়াসুরিয়া ৪/১৩৬, রমেশ ৩/১০১)।
শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৯৪.২ ওভারে ৩০৯
(করুণারত্নে ৮৩, চান্ডিমাল ৬১, ম্যাথুস ৫০; এজাজ ৬/৯০, ও’রুর্ক ৩/৪৯)।
নিউজিল্যান্ড ২য় ইনিংস: ৭১.৪ ওভারে ২১১
(রবীন্দ্র ৯২, ব্লান্ডেল ৩০, উইলিয়ামসন ৩০, ল্যাথাম ২৮; জয়াসুরিয়া ৫/৬৮, রমেশ ৩/৮৩)।
ফল: শ্রীলঙ্কা ৬৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: প্রবাত জয়াসুরিয়া।
সিরিজ: ২ ম্যাচের সিরিজে শ্রীলঙ্কা ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে।