ড্র মেনে নিয়ে এলগারের সঙ্গে হাত মেলান কামিন্স
ড্র মেনে নিয়ে এলগারের সঙ্গে হাত মেলান কামিন্স

এখন হয়তো খাজার বিষয় নিয়ে অনুতাপ হচ্ছে কামিন্সের

উসমান খাজা চাইলে এখন প্যাট কামিন্সকে কাঠগড়ায় তুলতেই পারেন! অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক কামিন্স আর কয়েকটি বল খাজাকে খেলার সুযোগ দিলে কী এমন হতো! সিডনি টেস্ট শেষ পর্যন্ত নিষ্প্রাণ ড্র হওয়ায় কামিন্সেরও হয়তো এ নিয়ে অনুতাপ হচ্ছে। বৃষ্টিবিঘ্নিত সিডনি টেস্টের ভাগ্য তো বদলাল না। মাঝে শুধু শুধু দুর্ভাগাদের দলে নাম লেখাতে হলো খাজাকে।

মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরিতে তিন দিনেও অস্ট্রেলিয়ার প্রথম ইনিংস শেষ হয়নি। ইনিংস ঘোষণার আগে ৪ উইকেটে তুলেছিল ৪৭৫ রান। ওপেনার খাজা অপরাজিত ছিলেন ১৯৫ রানে। কিন্তু ম্যাচের ফল নিজেদের পক্ষে আনতে গতকাল চতুর্থ দিনে খাজাকে ক্যারিয়ারের প্রথম দ্বিশতক পূরণের সুযোগ না দিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ব্যাটিংয়ে পাঠান কামিন্স।

অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের তোপে দক্ষিণ আফ্রিকা কাল ৬ উইকেটে ১৫৯ রান তুলেছিল। জিততে হলে আজ শেষ দিনে সর্বোচ্চ ৯৮ ওভারে ১৪ উইকেট তুলে নিতে হতো কামিন্স, জশ হ্যাজলউড, নাথান লায়নদের। তবে তাঁরা ৯০.৫ ওভারে নিতে পেরেছেন ৬ উইকেট। ফলো অনে পড়লেও তাই শেষ পর্যন্ত ড্র করেছে প্রোটিয়ারা। সেই সঙ্গে এড়িয়েছে ধবলধোলাই।

দক্ষিণ আফ্রিকাকে ফলো অন করিয়েছে অস্ট্রেলিয়া

ব্রিসবেন ও মেলবোর্নে প্রথম দুই টেস্ট জিতে আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সিডনিতে সুযোগ এসেছিল প্রোটিয়াদের ৩-০ ব্যবধানে হারানোর। ম্যাচজুড়ে দাপট দেখালেও স্টিভেন স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নারদের সে আশা পূরণ হয়নি মূলত বৃষ্টির কারণে। সর্বশেষ ২০০৬ সালে প্রোটিয়াদের ধবলধোলাই করেছিল অস্ট্রেলিয়া।

সিডনিতে আজ এক রেকর্ডও গড়ে ফেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টানা ৪৬ ম্যাচ পর কোনো টেস্ট ড্র করেছে প্রোটিয়ারা। এর আগের টেস্টগুলোতে হয় জিতেছে নয়তো হেরেছে তারা। এই রেকর্ড সহজে কেউ ভাঙতে পারবে বলে মনে হয় না। এই তালিকায় দুইয়ে আছে জিম্বাবুয়ে। টানা ২৬ ম্যাচ পর কোনো টেস্ট্র ড্র করেছিল জিম্বাবুইয়ানরা।

ম্যাচসেরার মেডেল মেয়ের গলায় পরিয়ে দিচ্ছেন খাজা

যদিও দিনের শুরুতে মার্কো ইয়ানসেনকে হারিয়ে কিছুটা শঙ্কা জেগেছিল। তবে অষ্টম উইকেটে কেশব মহারাজ আর সাইমন হারমারের ৮৫ রানের জুটি শঙ্কা উড়িয়ে দেয়। মহারাজ তুলে নেন টেস্ট ক্যারিয়ারে চতুর্থ অর্ধশতক, হারমারের প্রথম অর্ধশতক হাতছাড়া হয় ৩ রানের জন্য। দুজনকেই আউট করেন হ্যাজলউড।

এ জুটি ভাঙার পর মাত্র ৩ রান যোগ করতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংস শেষ হয় ২৫৫ রানে। ২২০ রানে পিছিয়ে থাকায় ফলো অনে পড়ে সফরকারীরা। ম্যাচের ফল আনতে তাদের দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে পাঠাতে একদমই ভাবতে হয়নি কামিন্সকে।

দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক ডিন এলগারকে ফিরিয়ে সম্ভাবনা জিইয়ে রাখেন কামিন্সই। তবে সারেল এরভইয়ার ও হেইনরিখ ক্লাসেন মাটি কামড়ে দাঁড়িয়ে গেলে নিরাশ হতে হয় অস্ট্রেলিয়ানদের। ম্যাচের সেরা বোলার হ্যাজলউড ক্লাসেনকে ফেরালেও টেম্বা বাভুমা এসে দারুণ সঙ্গ দিতে থাকেন এরভইয়ারকে। দিনের খেলা প্রায় ৮ ওভার বাকি থাকতেই তাই ড্র মেনে নিতে বাধ্য হন কামিন্স।

দ্বিশতক পূরণের সুযোগ না পাওয়া খাজার হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। সিরিজসেরা হয়েছেন তাঁর উদ্বোধনী সঙ্গী ডেভিড ওয়ার্নার। ২০০ করতে না পারা নিয়ে এখন আক্ষেপ নেই খাজার। মেয়ের গলায় ম্যাচসেরার মেডেল পরিয়ে দিয়ে ৩৬ বছর বয়সী ওপেনার বলেছেন, ‘সবাই মাইলফলক ছোঁয়ার লক্ষ্যে খেলতে নামে। তবে দলকে জয়ের সুযোগ তৈরি করে দেওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দলীয় স্বার্থ সবার আগে দেখা উচিত।’