ওয়ানডে ক্রিকেটে দুই প্রান্ত থেকে দুটি নতুন বল ব্যবহার করা খেলাটাকে আরও বেশি করে ব্যাটসম্যানদের খেলা বানিয়ে দিয়েছে বলে মনে করেন মিচেল স্টার্ক। দুই প্রান্ত থেকে একটি নতুন বলই ব্যবহার করা উচিত বলে মত অস্ট্রেলিয়ার এই ফাস্ট বোলারের।
এবারের বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচ খেলে ১০ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। গড় ৪৩.৯০। ওভারপ্রতি খরচ করেছেন ৬.৫৫ রান। তাঁর মাপের একজন ফাস্ট বোলারের জন্য পরিসংখ্যানটা সাদামাটাই, বিশেষ করে ২০১৫ ও ২০১৯ বিশ্বকাপে তিনি যে ধরনের বোলিং করেছিলেন, তার বিচারে।
স্টার্ক নিজেই স্বীকার করেছেন, এবারের বিশ্বকাপটা তাঁর মান অনুযায়ী কাটেনি। বিশেষ করে তিনি যখন জানেন, কত ওপরে তিনি নিজেকে নিতে পারেন। ৩৩ বছর বয়সী এই ফাস্ট বোলার বিশ্বাস করেন, ওয়ানডে ক্রিকেটে দুই প্রান্তে দুটি নতুন কুকাবুরা বল ব্যবহার করার বিষয়টি তাঁর পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব রাখছে। বিশেষ করে দিনের বেলায় ভারতের উইকেটে সর্বোচ্চ ২৫ ওভারের পুরোনো বল দিয়ে রিভার্স সুইং করানো খুবই কঠিন। স্টার্কের বোলিংয়ের একটা বড় অস্ত্র রিভার্স সুইং।
এবারের বিশ্বকাপে স্টার্ক দিনের বেলা পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট পাননি। তবে তিনি অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে ফ্লাড লাইটের আলোয় পাওয়ার প্লেতে ঠিকই উইকেট নিয়েছেন।
স্টার্ক ওয়ানডেতে একটা বল ব্যবহার করার পক্ষে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন এভাবে, ‘আমি বিশ্বাস করি, ওয়ানডেতে একটা বলই ব্যবহার করা উচিত। দুটি নতুন বল ব্যবহার করলে বোলারদের শক্ত বলেই বোলিং করতে হয়। ভারতে দেখেছেন, মাঠগুলো খুব বড় নয়। উইকেটও একেবারে ব্যাটিং উপযোগী।’
স্টার্ক দুই প্রান্তে একটি বল ব্যবহার করার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরেছেন এভাবে, ‘ক্রিকেটে উইকেট এখন অনেক বেশি ব্যাটিংবান্ধব। আপনারা যদি ক্রিকেটের পুরোনো ম্যাচের ফুটেজ দেখেন, তাহলে দেখবেন, একটা বল দিয়ে যখন খেলা হতো, তখন বোলাররা রিভার্স সুইং দিয়ে ব্যাটিং উপযোগী উইকেটেও নিজেদের ম্যাচে ফেরাতে পারত। এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই ওয়ানডে, বিশেষ করে টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট এখন পুরোপুরি ব্যাটসম্যানদের খেলায় পরিণত হয়েছে।’
ভারতে শুধু গতি দিয়ে যে বোলারদের তেমন কিছু করার নেই, অস্ট্রেলীয় ফাস্ট বোলার বলছেন সেটি, ‘আমি মনে করি এখানে অনেক কিছু আছে। অনেক জিনিসের ওপর আপনার সাফল্য নির্ভর করে। ভারতের মাটিতে গতিই সব কিছু নয়।’
গতি ছাড়াও আর যেসব জিনিস বোলারদের সাফল্য–ব্যর্থতার অনুষঙ্গ, সেটি ব্যাখ্যা করে বলেছেন স্টার্ক, ‘এখানে বিভিন্ন কৌশল দরকার হয়। বোলারদের বৈচিত্র্যটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এমনকি দিনের কোন সময় বোলার বোলিং করছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। টস একটা বড় ব্যাপার। এমন অনেক কিছুই এখানে বড় ব্যাপার হয়ে ওঠে।’
তবে স্টার্ক যে নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে সন্তুষ্ট নন, বলেছেন তা–ও, ‘অবশ্যই আমি ভালো বোলিং করি নি, বিশেষ করে ২০১৫ আর ২০১৯ বিশ্বকাপে যেমন করেছিলাম, তার ধারকাছেও যেতে পারিনি। তবে সেমিফাইনালে আমি কিছুটা অবদান রাখতে চাই।’
বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে কলকাতায় দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে অস্ট্রেলিয়া।